নাইজেরিয়ায় একটি স্কুল থেকে অন্তত ২৮৭ শিশুকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। তাদের ছাড়তে স্থানীয় মুদ্রায় ১০০ কোটি নাইরা (৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা প্রায়) মুক্তিপণ দাবি করেছে তারা। তিন সপ্তাহের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না করলে সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে অপহরণকারীরা। গত বুধবার (১৩ মার্চ) স্থানীয় এক ব্যক্তির বরাতে এতথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। গত ৭ মার্চ দেশটির কাদুনা রাজ্যের চিকুন জেলার কুরিগা গ্রামের একটি স্কুলে হানা দেয় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা। এসময় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। পরে অভিযান চালিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু এখনো ২৮৭ শিশু দুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি রয়েছে। কুরিগা গ্রামের বাসিন্দা আমিনু জিব্রিল বলেন, তারা (দস্যুরা) গত মঙ্গলবার বিকেলে একটি গোপন নম্বর থেকে আমার কাছে ফোন করে এবং শিক্ষার্থীদের মুক্তিপণ হিসেবে ১০০ কোটি নাইরা (৬ লাখ ২১ হাজার মার্কিন ডলার) দাবি করে।
তারা বলেছে, আল্টিমেটাম তিন সপ্তাহ স্থায়ী হবে। যদি এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে জিম্মি সবাইকে হত্যা করবে। অপরাধীরা আরও বলেছে, তাদের গ্যাংয়ের সদস্যদের হত্যা করায় সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য পাল্টা জবাব এই অপহরণ।
জিব্রিল জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস, অপহরণকারীরা স্কুলের জুনিয়র সেকেন্ডারি বিভাগের প্রধানের কাছ থেকে তার ফোন নম্বর পেয়েছে, যাকে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অপহরণ করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র মনসুর হাসান জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে কুরিগা গ্রামের এলইএ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হানা দেয় মোটর সাইকেল আরোহী সশস্ত্র দস্যুরা। এ সময় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায় তারা। পরে কয়েকজনকে উদ্ধার করা হলেও ২৮৭ জন শিক্ষার্থী অপহরণকারীদের কাছে রয়ে গেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এবং বাকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কাদুনার গভর্নর উবা সানি এক বিবৃতিতে বলেছেন, অপহৃত শিক্ষার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে সরকার।
তিনি আরও জানান, হামলার সময় অপহরণকারীদের মুখোমুখি হওয়া স্থানীয় একজন নিহত হয়েছেন। নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজার দক্ষিণ–পশ্চিম সীমান্তবর্তী রাজ্য কাদুনা। সামপ্রতিক বছরগুলোতে সেখানে বেশ কয়েকটি গণঅপহরণের ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অন্তত ১৪০ জন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেছিল অস্ত্রধারীরা।