প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে উল্লম্ফন অব্যাহত রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে ২০৭ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার (২.০৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে রেমিটেন্স এসেছিল ১৫৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার রেমিটেন্সের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসের চার মাসেই ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে এসেছে। সব মিলিয়ে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এসেছে ১ হাজার ৯০ কোটি ৪৪ লাখ (১০.৯০ বিলিয়ন) ডলার। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বা ৪১ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে পাঁচ মাসে এত রেমিটেন্স আগে কখনও আসেনি। গত পুরো অর্থবছরে যে রেমিটেন্স এসেছিল, তার ৬০ শতাংশ এবার পাঁচ মাসেই চলে এসেছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৭৭১ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আর পুরো বছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। করোনা মহামারীর মধ্যে রেমিটেন্স কমবে বলে ধারণা করা হলেও সবাইকে অবাক করে দিয়ে তা বেড়েই চলেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। আগস্টে এসেছিল ১৯৬ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। অক্টোবরে এসেছিল ২১১ কোটি ২৪ লাখ ডলার।
আগামী দিনগুলোতেও এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, অর্থবছরের পাঁচ মাসের চার মাসেই ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি করে রেমিটেন্স এসেছে। এটা অর্থনীতির জন্য খুবই ভালো। এই যে কোভিড-১৯ এর ধাক্কা সামলে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, এতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছেন এই রেমিটেন্স। বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোয় গত অর্থবছর থেকে যে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, তাই রেমিটেন্স বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করেন তিনি।
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা ১ কোটিরও বেশি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ। দেশের জিডিপিতে সব মিলিয়ে এই রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।
রিজার্ভ ৪১.৪০ বিলিয়ন ডলার : প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ফের ৪১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ৪১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ২৫ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে দশ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।