ষোলশহর দুই নম্বর গেটে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার দায়ে নব্য জেএমবির ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন, মো. সাইফুল্লাহ, মো. এমরান, আবু সালেহ, মো. আলাউদ্দিন, মহিদুল আলম, মো. জহির উদ্দিন, মো. মঈনউদ্দিন, রহমত উল্লাহ, সাহেদ হোসেন, মো. সেলিম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আব্দুল কাইয়ুম, কায়সার উদ্দিন, মো. মোরশেদুল আলম ও দুবাই প্রবাসী মো. শাহজাহান।
গতকাল চট্টগ্রামের সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল হালিম আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর এই আদেশ দেন। এ সময় জামিনে থাকা মহিদুল আলম ও সাহেদ হোসেন এবং কারাগারে থাকা ১১ জন কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। বাকী দুজন যথাক্রমে মোরশেদুল আলম ও মো. শাহজাহান পলাতক। নগরীতে তিন বছর আগে ঘটে যাওয়া বোমা হামলার এ ঘটনায় করা মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। এর মধ্যে ১৭ বছর বয়সী আবু সাদেক নামের এক কিশোরও আছে। শিশু আদালতে আলাদাভাবে তার বিরুদ্ধে বিচার কাজ চলছে।
ট্রাইব্যুনালের পিপি রুবেল পাল আজাদীকে বলেন, নব্য জেএমবির ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে আদালত। এর মধ্যে ১১ জনকে কারাগার থেকে হাজির করা হয়। জামিনে থেকে হাজির ছিলেন দুজন। পলাতক আছেন দুজন। এ দুজনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম চলবে।
২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট মোড়ের পুলিশ বঙে বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটে। এতে দুই ট্রাফিক পুলিশসহ পাঁচজন আহত হয় এবং পুলিশ বঙটিতে থাকা সিগন্যাল বাতি নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহৃত সুইচ বোর্ড নষ্ট হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করে ট্রাফিক পুলিশ। পরে মামলার তদন্ত কাজের দায়িত্ব পায় নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
আদালতসূত্র জানায়, চার্জশিটভুক্তদের মধ্যে মো. সেলিম ছিলেন ঘটনার মাস্টারমাইন্ড। ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর আকবরশাহ এলাকার পোর্ট লিংক রোডের বাংলাবাজার এলাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তাকে গ্রেপ্তার করেন। তিনি জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সামরিক কমান্ডার ও লোহাগাড়ার জঙ্গল পদুয়া আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার মৃত আবু তালেবের ছেলে। সূত্র জানায়, পুলিশ বঙে বোমা হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে নয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ নয়জনের ৮ জনই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে মো. সেলিমের নাম বলেছেন এবং তার সম্পর্কে নানা তথ্য দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, পুলিশ বঙে হামলার পরপর জঙ্গি সংগঠন দায় স্বীকার করলেও ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের নব্য জেএমবির সদস্য বলে পরিচয় শনাক্ত করে তদন্তকারী সংস্থা নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সন্ত্রাস বিরোধী আইনের এ মামলায় গত বছরের ২৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ–পরিদর্শন সঞ্জয় গুহ।