নন্দনকাননে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার শোকসভা পণ্ড

প্রধান অতিথি নাছির আসার আগে এক গ্রুপের হামলা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

নগরীর নন্দনকানন এক নম্বর গলিতে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার শোকসভা স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দেয়। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের নন্দনকাননে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ ইদ্রিস (৫৫)।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর আজাদীকে জানান, নন্দনকানন এলাকায় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার শোকসভা ছিল। যেখানে স্থানীয় অপর গ্রুপের কিছু ছেলে গিয়ে ভাংচুর করেছে বলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এটা স্থানীয়দের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আনা হলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে সে এটার সাথে জড়িত না। পরে তার পিতা-মাতাকে ডেকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। কোনো পক্ষই এই ঘটনায় অভিযোগ দেয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর বাচ্চু সাহেব বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন।
এই ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু আজাদীকে জানান, ছাত্রলীগ নেতা নুর আহমেদ রাসেলের পরিবারের দবি ছিল তার ছেলের শোক সভা করার। তার পরিবার এই শোকসভার আয়োজন করলে আমরা এনায়েত বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ থেকে সহযোগিতা করেছি। এখানে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন সাহেব আসার কথা ছিল। কিছু এতিম শিশুদের খাবার দেয়ার কথা ছিল। এটা নিয়ে স্থানীয় ছেলেদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হওয়ায়-এক পক্ষ গিয়ে এখানে ভাংচুর করেছে। তখন আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। গিয়ে দেখি চেয়ার ভাংচুর করেছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য মো. ইদ্রিস আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও ছাত্র সংসদের সদস্য নুর আহমেদ রাসেলকে দলীয় কোন্দলের জেরে গুলি করে খুন করা হয়। গতকাল সোমবার ২২ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নন্দরকাননের এক নম্বর গলিতে এনায়েতবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোকসভা, দোয়া মাহফিল ও এতিমদের খাবার বিতরণের আয়োজন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে অতিথি হিসেবে নগর আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জামশেদুল আলম চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস সভাস্থলে আসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। তবে তিনি আসার আগেই সেখানে হামলা হয়।
এ সময় নন্দনকানন এলাকার বেশ কিছু ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে মঞ্চের ব্যানার খুলে ফেলে। মঞ্চ থেকে অতিথিদের জন্য রাখা চেয়ার নিচে ফেলে দেয়। দর্শকসারিতে রাখা চেয়ার-মাইক খুলে ভাংচুর করে। এসময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস বাধা দিতে গেলে তাকে প্লাস্টিকের চেয়ার ছুঁড়ে মারলে তার মাথার বাম পাশে ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। এসময় মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নন্দনকাননের ১ নম্বর গলির শেষ মাথায় মঞ্চ করে সভার আয়োজন চলছিল। দোয়া মাহফিলের পাশাপাশি দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু হামলাকারীরা চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুর করায় পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।
ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কোতোয়ালী থানার এএসআই সুকান্ত চৌধুরী বলেন, বিকেলে একটি দোয়া মাহফিল ছিল। এতে আ জ ম নাছির সাহেবের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এখানে দুই পক্ষের নেতারাই ছিলেন। সভা শুরুর আগে অতর্কিত হামলা হয়। আমরা একজনকে আটক করেছি। স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এলাকার আধিপত্য নিয়ে অনেক দিন থেকে ঝামেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমা-বাবার সামনেই শিশুকে চাপা দিল বেপরোয়া মাইক্রো
পরবর্তী নিবন্ধদা বাহিনীর প্রধান দায়ের কোপেই নিহত