মেয়াদোত্তীর্ণ নৌযান আর নদী দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ নৌপরিবহন এবং অতি মুনাফালোভী মালিকদের অতিরিক্ত যাত্রী বহনই নৌ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সেইসাথে বালু–খেকো, নদী–খেকোসহ যারা শিল্প–কারখানার বর্জ্য কেমিক্যাল পদার্থ নদীতে ঢেলে দেয়, তারা দেশ ও সমাজের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
নদী ও পরিবেশ রক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘নোঙর ট্রাস্ট’ আয়োজিত ‘দেশের নৌপথে নিহত সব শহীদ স্মরণে ২৩ মে জাতীয় নদী দিবস ঘোষণার দাবি’ এবং ঢাকা নদী সম্মেলনের প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখছিলেন হাছান মাহমুদ। নদী দখলের তীব্র সমালোচনা করে অনুষ্ঠানে সাবেক এই বন ও পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বিত্তের ক্ষমতা অনেক সময় পদের ক্ষমতাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। বিত্তবান আবার নিজেদের সুবিধার জন্য মিডিয়া লালন করে। ক্ষমতাবানরা নদী দখল করে। বুড়িগঙ্গা নদীর দুপাশে পাড় বাঁধাই করা হয়েছে, ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। তবুও বুড়িগঙ্গা দখল হচ্ছে।
আঞ্চলিক নদী সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নদী রক্ষা এবং সুষম পানি বণ্টনে আরও সমন্বয়, প্রচেষ্টা ও আঞ্চলিক উদ্যোগ দরকার ছিল। সুষমভাবে পানি বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য আঞ্চলিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা দাঁড় করানো গেলে সবার উপকার হবে। আমাদের গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা বেসিন বা অববাহিকা নিয়ে একটি আঞ্চলিক সহযোগিতার ফোরাম খুব প্রয়োজন। ২০০৪ সালের ২৩ মে একই রাতে মেঘনা নদীতে এমভি লাইটিং সান, এমভি দিগন্ত ও এমভি মজলিশপুর তিন জাহাজ ডুবিতে ব্যাপক প্রাণহানি এবং গত ৫৩ বছরে দেশে নৌ দুর্ঘটনায় সকল নিহতের স্মরণে নদী ও নদী নিরাপত্তার শপথে ২৩ মে জাতীয় নদী দিবস ঘোষণার জন্য জানিয়ে আসছে ‘নোঙর’। নোঙর ট্রাস্ট চেয়ারম্যান সুমন শামস বলেন, ২০০৪ সালের ২৩ মে জাহাজ ডুবিতে তার মা আছিয়া খাতুন মেঘনার তলদেশে চিরনিদ্রিত। এ দিনটিকে ‘নোঙর‘ জাতীয় নদী দিবস পালন অব্যাহত রাখবে। সুমন শামসের সভাপতিত্বে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আওলাদ হোসেন, দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, রিভারাইন পিপল সংগঠনের মহাসচিব শেখ রোকন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস অনুষ্ঠানে আলোচনায় যোগ দেন।
আনার খুনের রহস্য উদঘাটনে দুই দেশই তৎপর : এদিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের খুনের রহস্য উদঘাটনে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ–৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে দুই দেশ একসাথে কাজ করছে। আমাদের মিশন পুরো বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। যেহেতু তদন্তাধীন বিষয়, তাই এ নিয়ে বেশি কিছু বলা সমীচীন নয়।
ঝিনাইদহ–৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন।