নদী-খাল দখল করে স্থাপনা করলে ভেঙে দেওয়া হবে

গৃহকর নিয়ে অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনে সরাসরি দেখা করুন : মেয়র

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

নদীখাল দখল করে স্থাপনা করলে তা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, নগরে পানি উঠলে অনেকে অস্থির হয়ে যান। আবার পানি নামলে জলাবদ্ধতার কষ্টের কথা ভুলে যান এবং খালনালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন। প্রকল্পের কাজ নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে তা ভেঙে দেওয়া হবে।

গতকাল সোমবার ষোলশহরে চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স চত্বরে আয়োজিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের করমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম১১ আসনের সংসদ সদস্য এ এ লতিফ। চসিকের প্রধান নির্বাহী শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত করমেলায় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর গাজী মোহাম্মদ শফিউল আজিম, শাহেদ ইকবাল বাবু, আবদুস সালাম মাসুম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামশুল তাবরিজ ও কর কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

সিটি মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের যে জলাবদ্ধতা তা নিরসনে সরকার প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তবে কোনো প্রকল্পই সফল হবে না, যদি না জনগণ সচেতন আচরণ না করেন। খালনালা দখল করার কারণে পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক পথ না থাকলে কেবল প্রকল্প করে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়।

কর সহনীয় করতে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখলাম গৃহকরের ভ্যালুয়েশন নিয়ে জনগণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। দায়িত্ব নিয়েই জনগণকে করের বোঝা থেকে মুক্তি দিতে প্রতিটি ট্যাক্স সার্কেলে গণশুনানির আয়োজন করেছি। জনগণের বক্তব্য শুনে, যাচাই করে আপিল করা করদাতাদের গৃহকর সহনশীল পর্যায়ে এনে দিয়েছি। তিনি বলেন, গৃহকর নিয়ে অভিযোগ থাকলে আপনারা রিভিউ বোর্ডে আসুন। প্রয়োজনে সরাসরি আমার সাথে দেখা করুন। আমার দরজা নাগরিকদের জন্য সবসময় খোলা। সারাদিন অফিসের কাজ সামলে আবার প্রতিদিন সন্ধ্যার পর নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে তাদের বক্তব্য শুনি। যে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে মেয়র পদে বসে তাদের ভুলে যাইনি।

এম এ লতিফ বলেন, বর্তমান জলাবদ্ধতার জন্য সিডিএরও দোষ নাই, চসিকেরও দোষ নাই। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা মূলত প্রকৃতির প্রতিশোধ। আগে চট্টগ্রামে ৭০টি খাল ছিল। খোলা জমি, মাঠ ছিল। প্রায় সব বেদখল হয়ে গেছে। ২০০ ফুট চওড়া খাল দখল হতে হতে ২০ ফুটে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমার প্রস্তাব হলো, যেসব রাস্তা কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত গেছে সেসব রাস্তার নিচে ভূগর্ভস্থ নালা করে দিতে হবে এবং নালার মুখে সিলট্র্যাপ ও গার্বেজ ট্র্যাপ করে দিতে হবে। কারণ কর্ণফুলীতে প্লাস্টিকপলিথিনের এমন অবস্থা ড্রেজিং করা যাচ্ছে না। আমাদের ভুললে চলবে না, কর্ণফুলীর সাথে মিশে আছে চট্টগ্রামের অস্তিত্ব।

কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এর সমাধানে সমাধানে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত চারটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সুফল মিলবে। বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে চট্টগ্রাম আরো এগিয়ে যাবে।

শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কর চসিকের জীবনীশক্তি। চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা চসিকের অ্যাম্বাসেডরের ভূমিকা পালন করেন। এজন্য কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের সংবেদনশীল হতে হবে। কারণ এ রাজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করছে চট্টগ্রামের উন্নয়ন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিয়ের প্রস্তুতির মধ্যেই যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরে কমছে জাহাজের আনাগোনা