রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলী নদীর পাড় থেকে গতকাল বুধবার দুপুরে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তি বাগোয়ান ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচখাইন গ্রামের রূপন দেবনাথ (৫০) বলে সনাক্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সকালের দিকে নদী পাড়ে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। দুপুরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করার পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। জানা যায় নিহত রূপন দেবনাথ ওই এলাকার পাঁচখাইন পশ্চিম নাথপাড়ার হরিকৃষ্ণ মাস্টারের বাড়ির ননী গোপাল নাথের ছেলে।
তার মা গীতা দেবী নাথ অভিযোগ করেছেন আগের দিন মঙ্গলবার রাতে কে বা কারা তার ছেলেকে মেরে নদীর পাড়ে ফেলে দিয়ে বালু ও লতা পাতা দিয়ে মাথা ঢেকে দেয়। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তার ছেলেকে ওই অবস্থায় দেখতে পান। নিহত রূপন মানসিক রোগী। এলাকার লোকজন বলেছেন মানসিক ভারসাম্যহীন রূপন বিভিন্ন সময় মানুষের বাড়ি ঘর অথবা দোকানের সামনে থাকা জিনিসপত্র নিয়ে এদিক সেদিন ছুঁড়ে ফেলতেন। এই কারণে অনেকেই তার ওপর বিরক্ত ছিল। স্থানীয়দের ধারণা তার আচরণে অতিষ্ঠ কেউ তাকে মেরে ফেলেছে। নিহতের পিতা ননী গোপাল নাথ বলেন, আমার ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। হয়ত নিজের আচরণে মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। কেউ তাকে এভাবে মেরে ফেলবে এটি আমি মানতে পারছি না। আমি আমার ছেলে হত্যাকারীদের বিচার চাই। লাশের পাশে বসে বিলাপ করতে করতে নিহতের স্ত্রী মুন্নি দেবী বলেন, একসময় আমার স্বামী মুদি ব্যবসা করতেন। কয়েক বছর ধরে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বিভিন্ন সময়ে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কেউ চুরির অভিযোগ নিয়েও আসতেন। তিনি এই খুনের ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে বলেন, এই বিচার সৃষ্টিকর্তার হাতে দিলাম। নিহত ব্যক্তির তিন কন্যার সন্তানের মধ্যে গত ১৪দিন আগে প্রথম কন্যার বিয়ে হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাউজান–রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরুল আমিন, রাউজান থানার ওসি মুনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার নুরুল আমিন বলেন, ভিকটিমের গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথা বালু দিয়ে ঢাকা ছিল। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দেখছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা দায়ের করতে চাইলে নেয়া হবে।