সাতকানিয়ায় গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার মিছিলে হামলা ও গুলি বর্ষণের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ ৪৪৮ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১৯৮ জনকে এজাহারভুক্ত ও ২০০–২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জামায়াত কর্মী মোহাম্মদ সৈয়দুজ জামান বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আবু রেজা নদভী ও বিপ্লব বড়ুয়া ছাড়াও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাতকানিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুল আলীম, মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন, মো. এরফানুল হক, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথি চৌধুরী, মাদার্শার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ ন ম সেলিম চৌধুরী, এওচিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মানিক, আবু ছালেহ, কাঞ্চনার সাবেক চেয়ারম্যান রমজান আলী, আমিলাইষের সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, সারওয়ার উদ্দিন চৌধুরী, পুরানগড়ের সাবেক চেয়ারম্যান আ ফ ম মাহাবুবুল হক সিকদার, বাজালিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত, সাতকানিয়া সদরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দিন, ধর্মপুরের সাবেক চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন টিপু, এম ইলিয়াছ চৌধুরী, সোনাকানিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও ছদাহার সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোসাদ হোসেন চৌধুরীসহ ১৯৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার মতে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিপুল সংখ্যক ছাত্র–জনতা সাতকানিয়া রাস্তার মাথা থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে কেরানীহাট গোল চত্বরে এসে অবস্থান নেয়। তখন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্র–জনতার মিছিলে হামলা চালায়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। নিরীহ ছাত্র–জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সড়কের দুই পাশে থাকা ১০টি টেক্সিসহ ১৫–২০টি যানবাহন ভাঙচুর করে। ১০–১২টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া কেরানীহাটের বিভিন্ন দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় মো. সৈয়দুজ জামানসহ ২০–২৫ জন ছাত্র–জনতা আহত হয়।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল খান বলেন, শনিবার রাতে পশ্চিম ঢেমশা এলাকার মোহাম্মদ সৈয়দুজ জামান নামের একজন বাদি হয়ে সাবেক সাংসদ আবু রেজা নদভী, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ ১৯৮ জনকে এজাহারনামীয় ও ২০০–২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সাবেক সাংসদ আবু রেজা নদভী ঢাকার একটি মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। মামলা তদন্তপূর্বক অন্যদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।