চট্টগ্রাম–১৫ আসনের সাবেক সাংসদ আবু রেজা নদভীর শ্যালক ও চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল্লাহ চৌধুরীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে চরতি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, এর আগে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী নিজে দেলোয়ার হোসেন নামের একজনকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী চরতি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আমিনুল ইসলাম জানান, “দুপুরে চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল্লাহ চৌধুরী ইউপি কার্যালয়ে আসেন। এরপর তিনি অফিসে বসে গ্রাম পুলিশ ও পরিষদের সচিবের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করছিলেন। এসময় চরতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দিন, মধ্যম দুরদুরির সাইফুদ্দিন সোহেল, তুলাতলির কায়সার, দক্ষিণ চরতির দেলোয়ার হোসেন ও সিএনজি চালক নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০–২৫ জনের দল ইউপি কার্যালয় এলাকায় আসে। তখন পরিষদের বাইরে থেকে নাছির উদ্দিন চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই রুহুল্লাহ যাওয়ার সময় আমার সাথে দেখা করে যাবে। তোমার সাথে আমার হিসাব আছে।’ এ কথা শুনে চেয়ারম্যান নাছিরকে ডাক দিয়ে বলেন, ‘ভেতরে এসে বস।’ তখন নাছির ভেতরে প্রবেশ করার সাথে সাথে আরো ৮–১০ জন আসে। এসময় তারা ইউপি কার্যালয়ে বসে থাকা দ্বীপ চরতির নুর মোহাম্মদকে টানা হেঁচড়া করে বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর করতে শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে ছেড়ে দিলে নুর মোহাম্মদ সেখান থেকে চলে যায়। এরপর ভেতরে থাকা সবাই মিলে বসে থাকা অবস্থায় চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মারধর করে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের মাথা ফেটে রক্ত বের হতে শুরু করলে হামলাকারীরা চলে যায়।”
গ্রাম পুলিশ আমিনুল ইসলাম আরো জানান, “হামলাকারীরা বাইরে চলে আসার পর নাছির এবং সাইফুলকে জিজ্ঞাসা করে পুনরায় হামলা না করার নিশ্চয়তা দেয়ার পর চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে উদ্ধার করে অটোরিকশা যোগে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। চেয়ারম্যানকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর আমরা চলে আসি।”
এদিকে, চরতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দিন জানান, “ইউপি নির্বাচনের সময় আমি সদস্য পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলাম। উপজেলায় মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন রুহুল্লাহর লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা উপজেলা পরিষদ এলাকায় আমাকে ব্যাপক মারধর করে। এসময় তারা আমার সাথে থাকা ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মোবাইল ও মোটরসাইকেলের কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। তাদের মারধরের কারণে দীর্ঘ এক মাস আমি ঘর থেকে বের হতে পারিনি। চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ পরিষদে আসার খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন কেন মারধর করেছিল এবং আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া টাকা কখন দিবে জানতে গিয়েছিলাম। এসময় শুনলাম জাতীয়তা সনদ নিতে যাওয়া দেলোয়ার নামের এক ছেলেকে চেয়ারম্যান নিজে মারধর করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার লোকজন এসে চেয়ারম্যানকে হালকা মারধর করেছে। চেয়ারম্যানকে মারধর শুরু করার পরপর আমি সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। ফলে কারা কিভাবে মেরেছে আমি দেখিনি।”
সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আতাউল হক চৌধুরী জানান, চরতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মারধর করছে শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে শুনেছি, চেয়ারম্যান আগে দেলোয়ার নামের একজনকে মারধর করেছে। পরে লোকজন চেয়ারম্যানকে মারধর করেছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত ভাবে অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।