সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ খাতের সকল অংশীজনের মতামত নিয়ে ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০’ সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এসোসিয়েশনের নেতারা। এছাড়া সংশোধনের আগ পর্যন্ত নতুন আইনের প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত রাখারও দাবি করা হয়। গতকাল দুপুরে নগরীর প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. মশিউর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, সরকার সামুদ্রিক মৎস্য আইন-১৯৮৩ বাতিল করে সম্প্রতি সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০ প্রণয়ন করে গত ২৬ নভেম্বর আকারে প্রকাশ করেছে। এতদিন দীর্ঘ ৩৮ বছরের পুরনো দিয়ে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ শিল্প পরিচালিত হচ্ছিল। সময়ের প্রয়োজনে সরকার এই নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এই আইন প্রণয়নের সময় কোনো অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বর্তমানে প্রণীত আইনের ধারা, উপধারাগুলো ব্যবসাবান্ধব হয়নি বরং ব্যবসায়ীদের ওপর খড়ক চাপানো হয়েছে। এই আইনের অনেক ধারা আছে যা বর্তমানে প্রচলিত ফৌজদারি আইনের সাথে সাংঘর্ষিক এবং শাস্তির বিধান অধিক করে প্রণীত হয়েছে। অনেক ধারাতে লঘু অপরাধের জন্য গুরু দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আইনের বিভিন্ন ধারা এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দুর্নীতির সুযাগ সৃষ্টি হয়েছে। আইনের এই কঠোরতার কারণে ট্রলারে কর্মরত স্কিপার, সেইলর এবং কর্মকর্তাবৃন্দ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গত ৫ ডিসেম্বর মাছ আহরণ বন্ধ রেখে সাগর থেকে চট্টগ্রামে ফিরে এসেছে। বর্তমান সময়টা মাছ আহরণের মৌসুম। এই সময়ে মাছ আহরণ বন্ধ হয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা বিরাট ক্ষতির সম্মুখিন হবেন। ব্যবসায়ীদের একদিকে ট্রলারের খরচ যোগাতে হচ্ছে অন্যদিকে ব্যাংকের দেনা পরিশোধের ঝুঁকি সামাল দিতে হচ্ছে। এর ফলে তাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে যা মোকাবেলা করা কঠিন হবে। তাই আমাদের দাবি হলো- সকল অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে মতামত গ্রহণপূর্বক বর্তমান আইনটি সংশোধ, সংযোজন ও বিয়োজন করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হোক। একইসাথে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত নতুন আইন প্রজ্ঞাপন জারি স্থগিত রাখা হোক। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান, সাবেক মহাসচিব ও পরিচালক শাহজালাল, পরিচালক আবদুল ওয়াহেদ এবং কোষাধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।