নতুন নতুন আইডিয়া ভবিষ্যতের স্বপ্ন

জুনিয়র সায়েন্স কার্নিভ্যাল

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৭ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

বিজ্ঞান নিয়ে নতুন নতুন সব আইডিয়া, ভবিষ্যতের স্বপ্ন এবং বিভিন্ন প্রজেক্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে আট শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জুনিয়র সায়েন্স কার্নিভ্যাল। হোয়াইট বোর্ড সায়েন্স ক্লাব, চট্টগ্রামের আয়োজনে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ও ডিজিজ বায়োলজি অ্যান্ড মলিকুলার এপিডেমিওলজি রিসার্চ গ্রুপ, চট্টগ্রাম (ডিবিএমই) এর সহযোগিতায় দিনব্যাপী এই সায়েন্স কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয় গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এই আয়োজনের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদ উল্লাহ। আরো উপস্থিত ছিলেন ইনসাইট অটোমেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল আলম রিজভী। উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন ক্লাবের মডারেটর সাইফুদ্দিন মুন্না। আরও বক্তব্য রাখেন কো-অর্ডিনেটর সায়েদ খান সাগর ও সদস্য আদিল রায়হান। পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হয় জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, ফিজিক্স-ম্যাথ অলিম্পিয়াড। এছাড়াও ৫০ টির ও অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় তাদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন প্রজেক্ট ডিসপ্লেতে যাতে ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কৃষি বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞানের নানা আইডিয়া। শতাধিক প্রজেক্ট থেকে বাছাইকৃত ১৬ টি প্রজেক্ট নিয়ে
সাজানো জুনিয়র সায়েন্স কার্নিভালের প্রজেক্ট ডিসপ্লে সেগমেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। বিচারক ছিলেন চবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের ড. এস এম রফিকুল ইসলাম, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক টুটন চন্দ্র মল্লিক এবং প্রকৌশলী স্তবক দাস। রোবটিঙের নানাবিধ প্রয়োগ কিংবা বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক সামগ্রীর অটোমেশনসহ নানা উদ্ভাবনী আইডিয়ার সমাহার ছিলো এই প্রজেক্টে। চট্টগ্রাম নগরীর সমস্যাগুলো নিয়েও কম ভাবেননি প্রতিযোগীরা। বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা সমস্যার নিরসন কিংবা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নগর পরিকল্পনা ছিলো অনেকের প্রজেক্টের মূল বিষয়বস্তু। প্রজেক্ট ডিসপ্লে সেগমেন্টে প্রথম হয় চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবরার শহিদ, কৃষিকাজে রোবট ফার্মবট ব্যবহারের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানোর আইডিয়া বাস্তবায়ন করে তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। পাশাপাশি বিজ্ঞানের জনপ্রিয় সব বিষয় নিয়ে পপুলার সায়েন্স টক উপস্থাপন করে বাছাইকৃত সেরা ৬ জন বক্তা। বিচারক ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক শিপন দাশ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. সুনন্দা বৈদ্য। পরবর্তী পর্বে ছিল কিউবিং কন্টেস্ট এবং প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি রোবোটিকস ক্লাব কর্তৃক প্রদর্শিত হয় রোবো সকার এবং রোবোটিকস কর্মশালা। পরবর্তীতে উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে ছিলেন গুগলে কর্মরত চট্টগ্রামের ছেলে অনিক সরকার।
সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. এম এ সাত্তার, বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, চুয়েটের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. উজ্জ্বল কুমার দেব, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. তৌফিক সায়ীদ, স্মার্ট গ্রুপের ম্যানেজার সাকিব, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান। প্রধান অতিথি বলেন, তরুণরা যত বেশি বিজ্ঞানমনস্ক হবে তত বেশি নতুন নতুন আবিষ্কারের সম্ভাবনা বাড়বে। আমাদের দেশের নিজস্ব প্রযুক্তি আর উদ্ভাবন প্রয়োজন। একমাত্র বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। বক্তব্য দেন, হোয়াইট বোর্ড সায়েন্স ক্লাবের ডিরেক্টর ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রক্তিম বড়ুয়া এবং কো-অর্ডিনেটর মাহির আজিরাফ। ইভেন্টের বিভিন্ন পর্বের মোট ২১ জন বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। ইভেন্টে ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে ছিল প্রথম আলো-বিজ্ঞান চিন্তা, ইভেন্ট পার্টনার নোভাইস বাংলাদেশ, ফটোগ্রাফিক পার্টনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফি ক্লাব, গিফটা পার্টনার ইনসাইটস অটোমাটা, স্ট্রাটেজিক পার্টনার ছিল বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি। এই বিজ্ঞান উৎসবে সাতান্নটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আট শটাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি বিদেশিদের কাছে রোহিঙ্গাদের কথা বলে না : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধপ্রতিবন্ধীরাও দেশের উন্নয়নের অংশীদার