নতুন দলের পুরনো পথচলা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ

নেই পঞ্চ পাণ্ডবের চারজন। লিটন সৌম্যদেরও ছাঁটাই করা হয়েছে। বলতে গেলে একেবারে তরুণ এক দল বাংলাদেশ। সে সাথে দীর্ঘ দিন পর মাঠে দেখা গেল দর্শক। চিরচেনা মিরপুরের উইকেট। কিন্তু বাংলাদেশ দলের পথ চলাটা সেই পুরনো স্টাইলে। যথারীতি হার দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। এ যেন নতুন দলের পুরনো পথে হাটা। যেন দীর্ঘ দিনের পরিচিত রাস্তাটা ভুলতে পারছে না টাইগাররা। বিশ্বকাপে দুদলের পথ চলা ছিল দুরকমের। বাংলাদেশ যেখানে একের পর এক হেরেই চলেছিল সেখানে পাকিস্তানের জয়রথ ছুটছিল পাগলা ঘোড়ার মত। যদিও সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় পাকিস্তানকে। তাই দুদলের জন্যই বিশ্বকাপ ছিল এক রকম হতাশার। সে হতাশাকে পাকিস্তান পেছনে ফেলতে পারলেও বাংলাদেশ পারেনি। যথারীতি হার দিয়েই শুরু পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে ভাল করতে না পারলেও বোলিংয়ে পাকিস্তানকে একরকম কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষটা রাঙ্গানো হলো না। ফলে বিশ্বকাপ অভিযানের চরম হতাশার পর দেশেও হেরে আরও দীর্ঘায়িত হলো দুঃসময়। বিশ্বকাপের পর নতুন শুরুর পথে বাংলাদেশ হোঁচট খেল প্রথম ম্যাচেই। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্ব থেকে হারের বলয়ে থাকা বাংলাদেশ দলের এটি টানা ষষ্ঠ হার।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার বিদায় নেন ৩ ওভারের মধ্যেই। দুজনেরই রান ১। নাঈম শেখ এবং অভিষিক্ত সাইফ হাসান দুজনই ফিরলেন দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়ে। নাজমুল হোসেন শান্তও পারেননি ফেরার ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখতে। ১৪ বলে ৭ রান করে ফিরেন শান্ত। এরপর বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায় অধিনায়ককে হারিয়ে। ১১ বলে ৬ রান করা মাহমুদউল্লাহও পারেননি দলের ভরসা হতে। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ২৫ রান। আফিফ হাসান এবং নুরুল হাসান মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও দুজনে ২১ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি। ৩৪ বলে ৩৬ রান করে ফিরেছেন আফিফ। মেরেছেন ২টি করে চার এবং ছক্কা। বাংলাদেশ যে শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানে যেতে পেরেছে সেটা সোহান এবং মেহেদী হাসানের কল্যাণে। সোহান ২২ বলে ২ ছক্কায় ২৮ এবং মেহেদী ২০ বলে একটি চার এবং দুটি ছক্কার সাহায্যে ৩০ রান করেন। শেষ দিকে ৩ বলে ৮ রান করে অবদান রাখেন তাসকিন। বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে তোলে ৮৭। পাকিস্তানের পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন হাসান আলি। ২টি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম।
জবাবে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে দ্রুতই। তৃতীয় ওভারে মোস্তাফিজ ফেরান রিজওয়ানকে। আর পরের ওভারে তাসকিনের বলে বোল্ড হন বাবর আজম। তরুণ হায়দার আলিকে রানই করতে দেননি মেহেদি। এরপর অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকও ফিরেছেন রান আউটের শিকার হয়ে। ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান যখন ধুকছিল ঠিক তখনই প্রতিরোধ গড়ে তোলে ফখর জামান ও খুশদিল শাহ। গড়ে তোলেন ৫০ বলে ৫৬ রানের জুটি। ৩৪ রান করা ফখর জামানকে ফেরান তাসকিন। এক ওভার পর ৩৪ রান করা খুশদিল শাহকে ফেরান শরীফুল। ফখর ও খুশদিল কাজ শেষ করতে না পারলেও তৈরি করে দেন মঞ্চ। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই জয়োৎসব সারেন শাদাব ও নওয়াজ। এদুজন শেষ দিকে গড়েন ১৫ বলে ৩৬ রানের ম্যাচ জেতানো জুটি। ১০ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন শাদাব। আর ৮ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন নওয়াজ। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজুর ৪ ওভারে ২৬ রানে নেন একটি উইকেট। কিন্তু ১৫ রানই দেন তিনি এক ওভারে এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। ২টি উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন হাসান আলী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফল ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধমাঠ প্রশাসনকে তৎপর হতে বলল ইসি