বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে এক জোড়া নতুন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল গত জানুয়ারিতে। কিন্তু গত ৪ মাসেও এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। কবে নাগাদ চট্টগ্রাম–ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটে দুটি বিরতিহীন ট্রেন পরিচালনার ব্যাপারে গত জানুয়ারিতে রেল ভবন থেকে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছিল। এর ভিত্তিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্তৃপক্ষ একটি সময়সূচিও তৈরি করেছিল এবং এ সংক্রান্ত প্রস্তাবও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি এখনো বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুটি বিরতিহীন ট্রেনের রেক (একাধিক কোচ, ইঞ্জিন মিলে একটি রেক) দিয়ে তিন জোড়া ট্রেন চালানোর উদ্যোগ অনেক আগেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। তখন ইঞ্জিন স্বল্পতা ও জনবল সংকটের কথা বলে তা আর বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে নতুন কোচ আসছে, ইঞ্জিনও এসেছে। এখন আগের মতো ইঞ্জিনও কোচের সংকট নেই। এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটে আরও দুটি বিরতিহীন ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে টিকিট সংকট দূর হবে। সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম–ঢাকা রুটে এখন ৬ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে মহানগর এঙপ্রেস ১৯৮৫ সালে, মহানগর গোধূলী ১৯৮৬ সালে, সুবর্ণ এঙপ্রেস ১৯৯৮ সালে, তূর্ণা এঙপ্রেস ২০০০ সালে এবং ২০১০ সালে চট্টলা এঙপ্রেস চলাচল শুরু হয়। সর্বশেষ ৬ বছর আগে ২০১৬ সালে এই রুটে যুক্ত হয় বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সোনার বাংলা।
অন্যদিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটের পর সবচেয় ব্যস্ততম চট্টগ্রাম–চাঁদপুর রুটে বিকাল ৫টায় মেঘনা এঙপ্রেস নামে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এখন নতুন করে এই রুটে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দুই চালানে ৪০টি কোচ দেশে এসেছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী কারখানার কর্ম ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমির উদ্দিন। প্রথম চালানে ১৫টি এবং দ্বিতীয় চালানে ২৫টি কোচ এসেছে। পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট কোচ গুলোও আসবে।
এখন নতুন ট্রেন চালুর ব্যাপারে কোচ এবং ইঞ্জিন সংকট নেই বলে জানান পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে বর্তমানে যেসব ট্রেন রয়েছে, তাতে যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। ট্রেনে পর্যাপ্ত আসন না থাকায় চেষ্টা করেও টিকিট পান না শত শত যাত্রী। তাদের বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়ায় ও নানা ভোগান্তি ও ঝুঁকি নিয়ে সড়কপথে যাতায়াত করতে হয়। তাই নতুন একটি ট্রেন চালুর দাবি অনেক দিনের।