নতুন আকর্ষণ তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনী

চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ৩ জুন, ২০২৩ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

দেশিবিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কটি আরো বেশি মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠেছে। বিশেষ করে পার্কের ২৪০ হেক্টরজুড়ে নির্মিত ‘তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনী’ এখন সবার দৃষ্টি কাড়ছে। এই তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনীর সবুজাভ পরিবেশ পার্কে আগত পর্যটকদর্শনার্থীদের বেশ মুগ্ধ করছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে গড়ে তোলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ককে প্রকৃত সাফারিতে রূপান্তরের জন্য মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় প্রথম ধাপের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন অনেকটাই শেষের পথে। সেই প্রকল্পের আওতায় পার্কের ৯০০ হেক্টরের মধ্যে ২৪০ হেক্টরজুড়েই গড়ে তোলা হয়েছে বিদেশি বন্যপ্রাণী তথা আফ্রিকান প্রজাতির জেব্রা, ওয়াইল্টবিস্টসহ তৃণভোজী বন্যপ্রাণীর বেষ্টনী। এই বেষ্টনীর চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজও সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে।

পার্কে আগত পর্যটকদর্শনার্থীরা জানান, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও পরিবেশপ্রতিবেশের মধ্যেই প্রতিষ্ঠিত এই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। তাই এই পার্ক ভ্রমণের গুরুত্বও অনেক। এখানে এলেই ধারণা পাওয়া যায় প্রকৃতি সম্পর্কে। তাই বারবার ছুটে আসেন পার্ক ভ্রমণে। তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনী এবং প্রকৃতি দর্শন টাওয়ার নতুন মাত্রা যোগ করেছে এই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ককে।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে জানান, মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় এতে তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনী গড়ে তোলার কাজ পুরোপুরিই সম্পন্ন হয়েছে। বিদেশি বন্য প্রাণী তথা আফ্রিকান জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট যাতে মুক্তমণে বিচরণ করতে পারে সেজন্য ২৪০ হেক্টরজুড়ে এই তৃণভোজী সাফারি তৈরি করা হয়েছে। বেষ্টনীর ভেতরে রয়েছে নানান জাতের দেশিবিদেশি ঘাস। তৈরি করে দেওয়া হয়েছে পানির লেকও। যাতে এই বেষ্টনীই তৃণভোজী বন্য প্রাণীর আদর্শিক আবাসস্থল হয়ে ওঠে।

পার্ক কর্মকর্তা আরও জানান, তৃণভোজী সাফারির ভেতর বন্য প্রাণীদের বিচরণ খুব কাছে থেকে যাতে পার্কে আগত পর্যটকদর্শনার্থীরা অবলোকন করতে পারে সেজন্য প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে লোহার পাত দ্বারা ৬০ ফুট উঁচু (৬ তলা) পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। প্রতিদিন পার্কে আগত দেশিবিদেশি পর্যটকদর্শনার্থীদের এই টাওয়ারে ওঠার হিড়িক পড়ে যায়। কারণ এই টাওয়ারে ওঠলেই ৬০ ফুট উঁচু থেকে চারিদিকের প্রকৃতিকে অবলোকন করা যায়। পাশাপাশি তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনীতে বিচরণরত জেব্রা এবং ওয়াইল্ডবিস্টের একসঙ্গে দৌঁড়াদৌঁড়িসহ প্রকৃতির নির্মল হাওয়ায় কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যান তারা। এই কারণেই বেশি আকৃষ্ট করছে দৃষ্টিনন্দন টাওয়ার ও তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনী।

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রতিনিয়ত সাফারি পার্কের পরিবেশ উন্নত হচ্ছে। বিদেশি সাফারি পার্কের মতোই যাতে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত এই সাফারি পার্ক পর্যটকদর্শনার্থীদের কাছে আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে সেভাবেই সাজানো হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, দেখার মতো হয়ে ওঠেছে সাফারি পার্কের তৃণভোজী সাফারি বেষ্টনী। এই সাফারি বেষ্টনীর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে ৬০ ফুট উঁচু প্রকৃতি দর্শন টাওয়ার। এই দুই স্পটই এখন পার্কে আগত দেশিবিদেশি পর্যটকদর্শনার্থীদের কাছে মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠেছে। তাই পার্কের পক্ষ থেকে আগত পর্যটকদর্শনার্থীর সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয় প্রতিদিনই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাড়ি উঠলেই কেঁপে ওঠে সেতু
পরবর্তী নিবন্ধসন্ত্রাসী হামলায় ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নিহত