নতুনভাবে সাজলেও সড়কে ভোগান্তি

বাঁশখালী ইকোপার্ক

বাঁশখালী প্রতিনিধি | শনিবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ

এসেছে শীত মৌসুম। নতুনভাবে সেজেছে বাঁশখালী ইকোপার্ক। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে ছুটি। আসতে শুরু করেছে পর্যটক। অপরদিকে পার্কের ঝুলন্ত সেতুটি দীর্ঘদিন যাবত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে অব্যবহৃত পড়ে থাকলেও তাও সংস্কার করে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। অতিথি পাখিও আসতে শুরু করায় আবারো পাখির কিচিরমিচির শব্দ, পশু-পাখির বিচরণে মুখরিত হয়েছে। অপরদিকে বাঁশখালী ইকোপার্কে কিছুদিন আগে চিত্রায়ন করা হয় টেলিফিল্ম ‘মায়াশালিক’। সেটা বর্তমানে রিলিজ হওয়ার পর পার্কের বিভিন্ন দর্শনীয় লোকেশান টেলিফিল্মে দেখে পর্যটকদের আনাগোনা আরো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান পার্ক কর্তৃপক্ষ।
এদিকে পার্কে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি বেশ কয়েক জায়গায় ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় বড় গাড়ি পার্কে প্রবেশ করতে পারে না। অনেকটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাঁশখালী ইকোপার্কে ঘুরতে আসা পর্যটকদের।
এক সময় দক্ষিণ চট্টগ্রামের আলোকিত পর্যটন স্পট হিসাবে পাখির কিচিরমিচির শব্দ, এলোমেলো অসংখ্য লেক, আঁকাবাকা রাস্তা, দুইটি ঝুলন্ত ব্রিজ, ৩টি পর্যটন টাওয়ার হতে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখার জন্য পর্যটকেরা প্রতিনিয়ত ভিড় জমাত এ পার্কে। ২০০৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কের যাত্রা কার্যক্রম শুরু হলেও ২০০৮ সালে প্রলয়ংকরী পাহাড়ি ঢলের পানি তোড়ে বাঁশখালী ইকোপার্কের বামের ছড়ার বাঁধ ভেঙে ইকোপার্কের বেশ কিছু স্থাপনা ও হাইড্রোইলিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি তছনছ হয়ে যায়। চলতি বছরের ২০ জুন থেকে ৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ভ্যাট ট্যাঙসহ প্রায় ৯ লক্ষ টাকায় ইজারা প্রদান করা হয়েছে আগামী ২০২৩ সালের জুনের ১৯ তারিখ পর্যন্ত।
বিশাল পাহাড়ি এলাকা জুড়ে এ ইকোপার্ক হওয়াতে পরিবারের লোকজন নিয়ে খোলামেলা পরিবেশে ঘুরে ফিরে সময় কাটানো যায়। শিশুরা দোলনায় চড়ে ও ঝুলন্ত সেতুতে দৌঁড়ে সময় অতিক্রম করে। বাঁশখালী ইকোপার্কের মত বিশাল এলাকা জুড়ে পর্যটন স্পট আর কোথাও নেই। এই পর্যটন স্পটকে সরকার যদি যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আরো বেশি কার্যবর করে তাহলে পর্যটকদের কাছ থেকে আরো বেশি রাজস্ব পাবে সরকার। এদিকে বাঁশখালী ইকোপার্কে আসার একমাত্র সড়ক শীলকূপ মনছুরিয়া বাজার থেকে ইকোপার্ক পর্যন্ত ২-৩ কিলোমিটার সড়কটি অত্যন্ত সরু। বর্তমানে সড়কের দুপাশে ভেঙে যান চলাচল দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। তাই পর্যটন স্পটে একমাত্র আগমনের এই সড়কটি আরো প্রশস্থ করার আহ্বান জানিয়েছেন ইকোপার্কে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা। দীর্ঘ সময় এ সড়কটি সংস্কার না করায় বিভিন্নস্থানে ভেঙে পড়েছে। শীলকূপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কায়েস সরোয়ার সুমন বলেন, পার্কে আসা পর্যটকদের সকল ধরনের নিরাপত্তাসহ সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এলাকাবাসী বদ্ধপরিকর। পার্কে আসার সড়কটি সংস্কারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সামগ্রিক তথ্যসহ বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। তিনি পার্কের উন্নয়নে বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ বনবিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বাঁশখালী ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুজ্জমান শেখ জানান, প্রকৃতি সমৃদ্ধ বাঁশখালী ইকোপার্ক এলাকা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না এর বিশালতা। পাকের্র যে সব স্থাপনা জরাজীর্ণ হয়েছে তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই স্পটটি যথাযথ ভাবে আরো বেশী উন্নয়ন ও পর্যটন উপযোগী করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাশঁখালী ইকোপার্ক সত্যিই একটি সুন্দর এলাকা এটাকে আরো বেশি পর্যটনমুখী করার জন্য বনবিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের নানাভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাতে করে সরকার অনেক রাজস্ব পাবে আর সাধারণ জনগণ বিনোদনের একটা মনোরম স্থান পাবে বলে তিনি জানান। মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, বাঁশখালী ইকোপার্কের উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। এ পার্কের উন্নয়নে সকল ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাইনি ওয়ার্ড থেকে আরো এক দালাল আটক
পরবর্তী নিবন্ধখেজুর রসের জন্য বিখ্যাত রাঙ্গুনিয়ায় কমছে গাছ