ছেলেবেলায় মফস্বলের বিশাল জায়গাসহ সরকারি বাসাগুলোয় থাকার সময়, আমি খুব গাছ লাগাতাম। কিছু খেলেই, কিংবা গাছপাকা ফল পেলে, আমার নেশা ছিল, তার বিচিটা মাটিতে পুঁতে দেয়া। এরপর প্রায় দিনই ঘুম থেকে উঠেই, সামান্য পানি ছিটিয়ে অপেক্ষা করতাম, কবে ছোট চারা জেগে উঠবে ..যেদিন কচি দুটো পাতা ফুটে উঠত, আমার আনন্দের সীমা থাকত না। এবারের ইউকে আসা, আমার কাছে মনে হয়, সেই ছোটচারার মতো নতুনভাবে জেগে ওঠা….এখানে আমার পরিচয় অমুকের মা, অমুক ভাবীর শাশুড়ি। জীবন কতো বিচিত্র, এক জীবনে, আমরা কতোগুলো পরিচয় বহন করি। বাসার বিশাল কাচের জানালা দিয়ে, গতকাল সারাদিনই বরফ পড়া দেখেছি, চারিদিক বরফে সাদা হয়ে ছিল। মন উদাস হয়ে যায়, চোখে ভাসছিল আরব দেশের আগুন রঙের বালির সেই ভয়ঙ্কর ঝড়ের দৃশ্য। না অতীত নিয়ে ভাবা যাবেনা…এখন শুধুই সামনে এগিয়ে চলা। আমি বলতে চাইছি, সম্পূর্ণ না হোক সুস্থতার কাছাকাছি যাবার চেষ্টা করা। যে কষ্টকর অতীত আমি ফেলে এসেছি ঢাকার বাসায়, তা ঝেড়ে ফেলতে চাই। ছেলে, বউ–এর সাথে যখন শপিং করতে যাই, আমার আধুনিক কাপড় কেনার আগ্রহ দেখলে, বউমা শুধু মুচকি হাসে। অবাক হয়ে যাই যখন দেখি, ছেলে উৎসাহ দেয়, সব কিছুই কিনতে। আসলে উপরে তো ভারী কোট বা সোয়েটার থাকে, অসুবিধা কি। এখনও ভারি কাপড়ের ওজন ক্যারি করতে অসহ্য লাগে। সবশেষে লিখি, নিজের একটা শিশু সন্তানকে মানুষ যেভাবে লালন পালন করে, আমার এই ছেলে, বউ সেভাবে আমাকে সেবাযত্ন করছে। আল্হামদুলিল্লাহ্ ।