নগরে টিকা পাবেন দেড় লাখ সম্মুখ যোদ্ধা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

প্রথম দফায় চট্টগ্রাম মহানগরে দেড় লাখ সম্মুখ সারির যোদ্ধাকে করোনার টিকা দেওয়া হবে। অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তরাই এর আওতায় থাকছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় সরাসরি সম্পৃক্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাগণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা পুলিশ, র‌্যাব, ট্রাফিক পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌ-বাহিনী ও বর্ডার গার্ডের সদস্যগণ, কোস্টগার্ড ও প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট, মন্ত্রণালয়, সচিবালয়, বিচারিক ও প্রশাসনিক কার্যালয় সমূহের কর্মকর্তাগণ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী, জনসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার কর্মীগণ, ধর্মীয় প্রতিনিধিগণ, মৃতদেহ সৎকার কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ, জরুরি বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কাজের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ, নৌ-বন্দর, রেল স্টেশন ও বিমান বন্দরসমূহে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলাসমূহে আবশ্যকীয় জনসেবায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। তবে শুরুতে চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মী এবং অগ্রাধিকার তালিকার ৫৫ বছরের বেশি বয়স্করা এই টিকা পাচ্ছেন। ধাপে ধাপে তালিকাভুক্ত অন্যান্য সম্মুখ সারির যোদ্ধারাও টিকার আওতায় আসবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। সাধারণ মানুষ এখনি এই টিকা পাচ্ছেন না।
প্রসঙ্গত, সবমিলিয়ে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ টিকা এসেছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এলাকা ও বিভিন্ন উপজেলায় আলাদাভাবে টিকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গতকাল এ সংক্রান্ত বরাদ্দ তালিকা হাতে পেয়েছে চসিক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়। চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বরাদ্দ তালিকা অনুযায়ী- সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫ ডোজ টিকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫ জনকে এই টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী আজাদীকে বলেন, আমরা দেড় লাখের সামান্য বেশি ডোজ টিকা বরাদ্দ পেয়েছি। টিকাদান শুরু করতে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এখন টিকাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণ চলছে। ৭ ফেব্রুয়ারি চমেক হাসপাতালে এ টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। পরবর্তীতে নগরের ১৫টি কেন্দ্রে এই টিকা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলায় বরাদ্দ ৩ লক্ষাধিক ডোজ : মোট প্রাপ্ত ৪ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ টিকার মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৫ ডোজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাকি ৩ লাখ ১ হাজার ৯৫ ডোজ টিকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায়। উপজেলায় অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত সম্মুখ যোদ্ধাদের এই টিকা দেয়া হবে।
উপজেলায় টিকা যাচ্ছে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে : ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে উপজেলাগুলোতে বরাদ্দকৃত টিকা পৌঁছে দেয়া হবে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোর থেকে এসব টিকা উপজেলা হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হবে। তবে টিকাদানের সিরিঞ্জ এখনো পৌঁছেনি জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, সিরিঞ্জগুলো পাওয়ার পরপরই উপজেলায় টিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আশা করছি- ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিরিঞ্জগুলো চলে আসবে। আর সিরিঞ্জ আসলে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই উপজেলায় টিকা পাঠানো সম্ভব হবে।
৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলা হাসপাতালগুলোতেও এ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
উল্লেখ্য, গত রোববার বহু প্রতীক্ষার করোনার টিকা পৌঁছেছে চট্টগ্রামে। ওইদিন সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দকৃত টিকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছায়। বড় আকারের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (ফ্রিজার) ভ্যানে করে এসব টিকা পৌঁছে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্মিকো। চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৮ কার্টন (৪ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ) টিকা বুঝে নেন সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এসব টিকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোরে রাখা হয়েছে। এর আগে ২৪ জানুয়ারি জেলা ভিত্তিক করোনার টিকা (ভ্যাকসিন) বরাদ্দ দিয়ে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কার্টন হিসেবে বরাদ্দ দেয়া তালিকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে- প্রতি কার্টনে ১২০০ ভায়াল ভ্যাকসিন রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন ভ্যাকসিনের প্রতি ভায়ালে ১০টি ডোজ রয়েছে। সে হিসেবে প্রতি কার্টনে ১২ হাজার ডোজ (১২০০ ভায়াল) ভ্যাকসিন থাকছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রভাষা আন্দোলন একদিনের নয়
পরবর্তী নিবন্ধদেশে আরও ১০ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৪৪৩