নগরের নতুন মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু

ড্রোন উড়িয়ে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম উদ্বোধন শুরু হলো ভূতাত্ত্বিক সার্ভে কাজও

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২০ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

সরকারের কৌশলগত উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপকল্প ২০৪১-এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে চট্টগ্রাম নগরীর মহাপরিকল্পনা তৈরি করার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিডিএ অফিস প্রাঙ্গণে ড্রোন উড়িয়ে নতুন মাস্টার প্ল্যানের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ। একই সাথে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভূতাত্ত্বিক সার্ভে কার্যক্রমও অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মহাপরিকল্পনায় ফিজিক্যাল ফিচার সার্ভের তথ্য-উপাত্ত যাচাইয়ে ড্রোন সার্ভে করা হচ্ছে।

‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মহাপরিকল্পনা (২০২০-২০৪১) প্রণয়ন’ নামের প্রকল্পটি সিডিএর তৃতীয় মহাপরিকল্পনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিডিএর বোর্ড মেম্বার জিনাত সোহানা চৌধুরী, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, সচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকল্প পরিচালক মো. আবু ঈসা আনছারী, স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী, উপসচিব অমল গুহ প্রমুখ।

সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১৯৯৫ সালে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান করা হয়। বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০৪১-এর সাথে মিল রেখে ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মাস্টার প্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রণয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান (স্ট্রাকচার প্ল্যান, আরবান এরিয়া প্ল্যান, অ্যাকশন এরিয়া প্ল্যান) প্রণয়ন করা হবে। পূর্বের মাস্টার প্ল্যান ও ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে যেসব সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্ম ভুলভ্রান্তি হয়েছে তা নিরসনে চলমান মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পে যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। তাই মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য এবং পরিকল্পনা-সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহের জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন উড্ডয়নের কার্যক্রম এবং ভূতাত্ত্বিক সার্ভে কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই ড্রোনের কার্যকারিতা এতই বেশি যে, মাটিতে ৫ সেন্টিমিটার বা ২ ইঞ্চি সাইজের পাথরও দেখা যাবে এবং ড্রোন সার্ভের মাধ্যমে তা চিহ্নিত করা যাবে। ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা ও ভূমিকম্প, বিভিন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণে চলমান মাস্টার প্ল্যান প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখবে।

সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, মহানগর এলাকায় এই পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজে নিয়োজিত এই জরিপ দলসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ পরিকল্পনা-সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করছেন। মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করে চট্টগ্রাম মহানগরীকে একটি আধুনিক, উন্নত ও ঝুঁকিমুক্ত নগরে পরিণত করার কাজে সহযোগিতা প্রদানের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান।

প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আবু ঈসা আনছারী বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য ২০ বছর মেয়াদী একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার লক্ষ্যে সিডিএ কর্তৃক জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা কমিশন থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত এবং পরবর্তীতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রশাসনিক অনুমোদন জ্ঞাপন করে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টার প্ল্যানের (১৯৯৫-২০১৫) উন্নয়নের জন্য একটি কৌশলগত কাঠামো নীতি ও গাইডলাইন পর্যালোচনা করা এবং ২০২০-২০৪১ সালের জন্য একটি নতুন মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুত করা। ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ মাস্টার প্ল্যানভুক্ত এলাকায় ড্রোন উড্ডয়নের অনুমতি প্রদান করেছে।

তিনি আরো বলেন, উক্ত ড্রোনটি ডাটা সংগ্রহে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ও ক্ষমতা সম্পন্ন মডেলের ড্রোন। ইতোমধ্যে সেকেন্ডারি ডাটা ও মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ, মৌজা ম্যাপ ডিজিটাইজেশন, বিএম পিলার স্থাপন, ফিজিক্যাল ফিচার, টপোগ্রাফি, ভূমি ব্যবহার তথ্য সংগ্রহ, স্যাটেলাইট ইমেজ সংগ্রহ, ওয়ার্ক স্টেশন স্থাপন, সামাজিক, পরিবেশগত, ট্রাফিক, ভূতত্ত্ব তথ্য সংগ্রহ ও মাটির গুণাগুণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে অত্যাধুনিক সার্ভে প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়ে সম্পাদক পরিষদের বক্তব্য
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা