বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রেজিস্ট্যান্স উইক কর্মসূচি তৃতীয় দিনের মতো গতকালও অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বেলা ১১ টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন এবং নানা স্লোগান দেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই, প্রতিবিপ্লব ঠেকিয়ে দাও, ধর ধর স্বৈরাচার ধর, কর কর বিচার কর, আমাদের বিপ্লব, চলছে চলবে, আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না– এমন নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় কারো কারো কাছে লাঠিসোঁটা ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্পও দেখা গেছে। দু–একটি মোটরসাইকেল, রিকশা চলাচল করতে দিলেও নিউমার্কেটের চারপাশে অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধই ছিল। দুপুর সাড়ে ১২ টায় কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হলে যানবাহন চলাচল ফের শুরু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়করা তাদের বক্তব্যে বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পাল্টা অভ্যুত্থানের চেষ্টা করছে। এ খবর পেয়ে আমরা রাস্তায় নেমে জড়ো হয়েছি। সকল প্রকার ষড়যন্ত্র আমরা নস্যাৎ করব। আমরা রাজপথে আছি, থাকব। অস্থিতিশীল করতে চাইলেই প্রতিহত করা হবে। গত মঙ্গলবার থেকে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও রেজিস্ট্যান্স উইক নামের কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের এ কর্মসূচি চার দফা দাবির লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়। চার দফা দাবিগুলো হচ্ছে– ১. ফ্যাসিবাদী কাঠামো ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন। ২. সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর ‘পরিকল্পিত হত্যা–ডাকাতি, লুণ্ঠনের’ মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় অংশগ্রহণ করা ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা ও সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া। ৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানকালে হামলা–মামলা–হত্যাযজ্ঞ বৈধতা দিয়েছেন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারবার কায়েমের চেষ্টা করেছেন তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নতুন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনা। ৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা।
