বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিংমল-মার্কেট বন্ধের সরকারি নির্দেশনা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। গত সোমবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। প্রতিমন্ত্রীর এমন হুঁশিয়ারির পরেও টনক নড়েনি ব্যবসায়ীদের।
গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর নিউমার্কেট বিপণী বিতান, রিয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন, জহুর হকার্স মার্কেট এবং টেরী বাজার ঘুরে দেখা যায়, গুটিকয়েক দোকান ছাড়া প্রায় সব দোকানই খোলা। এছাড়া টেরীবাজারের বেশ কিছু বড় কাপড়ের শো-রুম তাদের লাইটবক্স বন্ধ রেখেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি হোটেলে আলোকসজ্জা করার দৃশ্যও দেখা যায়।
রাত ৮টার পর মার্কেট খোলা রাখার বিষয়ে জানতে টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাত ৮টার পর মার্কেট বন্ধ রাখার বিষয়টি শিথিল করে সরকার। ঈদের ছুটির পরে মার্কেট খোলা হলেও নতুন নির্দেশনা আমরা পাইনি। ফলে সমিতির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের কড়াভাবে কিছু জানানো হয়নি। আমরা আগামীকাল (আজ) ব্যবসায়ীদের বলে দিবো-যাতে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ রাখে।
জহুর হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী কলিম উল্লাহ বলেন, কোরবানি ঈদের আগে ৮টার পর মার্কেট বন্ধ রাখার কথা জানতাম। মার্কেট খোলার পর এ বিষয়ে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। সমিতির পক্ষ থেকেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। সবাই মার্কেট বন্ধ করে দিলে আমরাও বন্ধ করে দিবো। কারণ আমরা সরকারি নির্দেশনা মানতে বাধ্য। নিউমার্কেট বিপণী বিতানের ব্যবসায়ী সেলিম উদ্দিন বলেন, আমরা সরকারি কোনো নতুন প্রজ্ঞাপন পাইনি। এছাড়া সমিতির পক্ষ থেকেও কোনো নির্দেশনা পাইনি।
অন্যদিকে গতকাল রাত ৯টার দিকে লালদীঘির পশ্চিম পাড় এলাকার জালালাবাদ হোটেলে বিভিন্ন রঙের আলোকসজ্জা করার চিত্র দেখা যায়। জানতে চাইলে হোটেলটির ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান বলেন, আলোকসজ্জা করা যাবে না বিষয়টি আমরা জানতাম না। এখন থেকে আমরা আলোকসজ্জা করবো না।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি জনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে পালনের জন্য সারা দেশে রাত ৮টার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার খোলা না রাখার বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল। তবে পরবর্তীতে ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে গত ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত মার্কেট ও দোকানপাট রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেয় সরকার।