নগরীতে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আটক ৪০

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৬ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আয়োজনের চেষ্টায় জড়ো হওয়া জামায়াতশিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে পুলিশের। গতকাল বিকেলে ওয়াসা মোড় থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ গরীব উল্লাহ শাহ মাজার, কাজীর দেউড়ি থেকে চট্টেশ্বরী পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

এসময় নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিস) নোবেল চাকমা, কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) অতনু চক্রবতী, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির, ওসি (তদন্ত) রুবেল হাওলাদার এবং তিনজন কনস্টেবল আহত হন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এছাড়া ৪০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৮১০টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ৪০ জনকে আটক করা হয়। গত রাত সাড়ে ১০টায় এ রির্পোট লেখাকালীন ধৃতদের যাচাইবাছাই করে এ ঘটনায় দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানায় পুলিশ।

এদিকে জামায়াত ইসলামী দাবি করেছে, পূর্ব ঘোষিত গায়েবানা জানাজা স্থগিত করা হয়। কিন্তু এরি মধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন চলে আসে। ‘বিনা উস্কানি’তে পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে ১২১৪ জন আহত হন। এদিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে রাস্তায় জামায়াতশিবিরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়ায় যানবাহন চলাচল কিছুক্ষণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে অবশ্য স্বাভাবিক হয়ে যায়।

কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবির আজাদীকে বলেন, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে তারা বিকেল ৩টায় গায়েবানা জানাজার ঘোষণা দেয়। যেহেতু জানাজার অনুমতি ছিল না তাই পুলিশ জানাজার স্থান ঘেরাও করে রাখে। এরি মধ্যে তারা নিজেদের মধ্যে ম্যাসেজ আদানপ্রদান করে জানিয়ে দেয় জানাজা হবে না। পরে ৪টা বাজার ৫ মিনিট আগে চট্টেশ্বরী রোড, চকবাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হয়ে ওয়াসা থেকে আলমাস মোড় পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এসময় তারা পুলিশের উপর অতর্কিত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ককটেলও ছোঁড়ে মারে পুলিশকে লক্ষ্য করে। তখন পুলিশ বাধা দেয়।

এর আগে বিকলে ঘটনাস্থলে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এবং পূর্ব অনুমতি ছাড়া জামায়াতশিবিরের লোকজন এখানে সমবেত হয়ে নাশকতা করার চেষ্টা করেছে। পুলিশের যে সব সদস্য এখানে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের উপর হামলা করেছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের প্রতিরোধ করেছি। তাদের সরিয়ে দিয়েছি। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। যেসব এলাকায় তারা (জামায়াতশিবির) নাশকতা করার চেষ্টা করেছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এসময় তিনি জানান, জামায়াতশিবিরের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

এদিকে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের পর থেকে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ মাঠের দুই গেইট বন্ধ করে অবস্থান নেয় পুলিশ। তবে এসময় গেইটের বাইরে ওয়াসা মোড়ে ধীরে ধীরে জড়ো হতে থাকে জামায়াতশিবিরের লোকজন। এসময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আশেপাশের বিভিন্ন গলিতে ও দোকানপাটে তারা আশ্রয় নেয়। পরে তাদের আরো কিছু নেতাকর্মী আসার পর ওয়াসা মোড়ে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। তখনও পুলিশও তাদের আবারও ধাওয়া দেয়। এসময় তারা আলমাস সিনেমা হলের দিকে স্লোগান দিয়ে এগিয়ে যেতে চালে পুলিশ ধাওয়া দেয়। জামায়াতশিবির ‘৭৫’র হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’মহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আলামাসের দিকে যাাওয়ার সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে, সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে তারা।

ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়া আরেকটি অংশ দামপাড়ায় পুলিশ লাইনে সিএমপি সদর দপ্তরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বাওয়া স্কুলের দিকে যাওয়া জামায়াতশিবিরের আরেকটি অংশও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র কতটি? খসড়া প্রকাশ আজ
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়া পেকুয়ায় সাঈদীর গায়েবানা জানাজা থেকে সংঘর্ষ, নিহত ১