পটিয়া থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নগরীর খুলশীতে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল বুধবার বিকেল চারটার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এসময় উভয় পাশে যান চলাচল ব্যাহত হয়। দেড় ঘণ্টা পর সড়কের এক পাশ ছেড়ে দেন তারা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ডিআইজি ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন। এসময় দাবি না মানলে কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, পটিয়ার ঘটনার সূত্র ধরে দুপুর আড়াইটার দিকে নগরের বিপ্লব উদ্যান থেকে একটি মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের দিকে যায় বিক্ষোভকারীরা। সেখানে পৌঁছার পর ডিআইজকে দেখা করার কথা বললে তিনি তাদের কার্যালয়ে প্রতিনিধিদের যেতে বলেন। এতে তারা অস্বীকৃতি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ তার কার্যালয় থেকে নিচে নেমে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় নেতাকর্মীরা পটিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণের দাবি জানান। ডিআইজি ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে ওসিকে প্রত্যাহার করা না হলে চট্টগ্রাম ‘মহানগর ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে পটিয়ায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাকে গ্রেপ্তার না করে উল্টো এ সময় পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চান তারা।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ–পুলিশ মহাপরিদর্শক সঞ্জয় সরকার জানান, তাদের দাবিগুলো শোনা হয়েছে। পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর এএসপি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে। তাই এ বিষয়ে হেড কোয়াটারের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।
এনসিপি চট্টগ্রাম মিডিয়া উইংয়ের মুখপাত্র আরফাত আহমেদ রনি আজাদীকে বলেন, পটিয়া থানার ওসিসহ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও এএসপিকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। ওসি ও সেকেন্ড অফিসারের স্থায়ী বরখাস্ত চেয়েছি। ডিআইজি আমাদের দাবি শুনে বৃহস্পতিবার ১২টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছি। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা কর্মসূচি দেওয়া হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, আমাদের দাবি না মানলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ বা সাড়ে ১০টা থেকে নগরের ২ নম্বর গেইটে কর্মসূচি শুরু হবে। এটা ব্লকেড হবে নাকি অবস্থান কর্মসূচি এটা এখনো নিশ্চিত না। তবে সম্ভবনা বেশি ব্লকেড হওয়ার।