ধোপাছড়ি খালের ওপর দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু নির্মাণ

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | শনিবার , ৪ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

১শ মিটার কাঠের সেতুতে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হলো দুর্গম পাহাড়ি জনপথ ধোপাছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম ধোপাছড়ির সাথে। ধোপাছড়ি ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধোপাছড়ি খালের জলধারা এই ইউনিয়নের মানুষকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছে। পাহাড় থেকে সৃষ্ট খালটি মিশেছে ধোপাছড়ি বাজার সংলগ্ন খরস্রোতা শঙ্খনদের সাথে। খালটি পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ছিল বাঁশের সাঁকো, অথবা নৌকা। খালটি দিয়ে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানি তীব্র গতিতে শঙ্খনদে প্রবেশকালে সাঁকো ভেঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ। অথচ দুই পাড়ের মানুষকে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে ধোপাছড়ি বাজার, ধোপাছড়িশীলঘাটা উচ্চ বিদ্যালয় এবং উপজেলা সদরে যাওয়াআসা করতে হয়।

বর্ষাকালে সাঁকো পার হতে গিয়ে যানমালের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ঘটনাও রয়েছে অহরহ। ইতিমধ্যে স্থানীয় সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় বান্দরবান সড়ক বিভাগের আওতায় স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য স্থান পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গত দেড় মাস আগে সেতুর ডিজাইন অনুমোদন দেয়া হয় এবং সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫৪ কোটি টাকা। কিন্তু ফান্ড জটিলতার কারণে ঝুলে রয়েছে ধোপাছড়ি খালে স্থায়ী সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি। অবশেষে চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ দিয়ে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে প্রায় ১০০ মিটার লম্বা ও ৭ ফুট প্রস্থের একটি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেতুটি দিয়ে মোটর সাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি রিকশা, টমটমসহ ছোট ছোট যানবাহন অবাধে চলাচল করতে পারবে। অবশেষে কাঠের সেতুতেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি ধোপাছড়ির বাসিন্দারা।

উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মাদ জুনাইদ আবছার চৌধুরী জানান, সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ওই স্থানে একটি কাঠের সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং উপজেলা পরিষদ থেকে দু’দফায় বরাদ্দ দিয়ে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠের সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় পূর্ব ধোপাছড়ির সাথে ধোপাছড়ি বাজার হয়ে উপজেলার সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। ইতিমধ্যে সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ। সেতুটি কাঠের তৈরি হলেও মেরামত অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর ব্যবহার করা যাবে।

চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবদুল জব্বার চৌধুরী জানান, পূর্ব ধোপাছড়িবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ধোপাছড়ি খালের উপর সেতু নির্মাণ করে উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি করা। একাধিকবার প্রকল্প গ্রহণ করার পরও ওই স্থানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ বিলম্ব হওয়ায় উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ দিয়ে অস্থায়ীভাবে কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থায়ী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান, সেতুটি নির্মিত হওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে বান্দরবান জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলায়নিজম মানবতার প্রতি দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলে
পরবর্তী নিবন্ধগাছ কাটতে ওঠে ভিমরুলের কবলে, প্রাণ গেল শ্রমিকের