ধীরে ধীরে মন বদলাচ্ছে ইউরোপ

কোভিডকে ফ্লুর মতো করে দেখা উচিত হবে না : ডব্লিউএইচও

| বৃহস্পতিবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ at ১২:২৪ অপরাহ্ণ

কোভিড-১৯ এখন যে চেহারা পেয়েছে, তাতে একে আর প্যানডেমিক বা মহামারী হিসেবে না দেখে এনডেমিক বা ফ্লুর মতো একটি সাধারণ রোগ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে স্পেন। ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে এই আহ্বান জানাল স্পেন। তারা বলছে, কোভিডকে সঙ্গে নিয়েই মানুষকে বসবাস করতে হবে, এটা মেনে নেওয়ার সময় এসেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও বলছে, এটিকে এখনও ফ্লুর মতো সাধারণ রোগ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। খবর বিডিনিউজের।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ‘এনডেমিক’ শব্দটি দিয়ে নির্দিষ্ট একটি এলাকায় নির্দিষ্ট একটি রোগের সংক্রমণের ভিত্তিরেখা বোঝানো হয়। উদাহরণ হিসেবে ম্যালেরিয়ার কথা বলা যেতে পারে। ম্যালেরিয়া পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়নি বা নতুন করে ফিরেও আসেনি। এটা দীর্ঘ সময় ধরে মানবজাতির সঙ্গে আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ম্যালেরিয়া বিভিন্ন মাত্রায় বিদ্যমান, যা একটি এনডেমিক রোগ হিসেবে বিবেচিত। গত বছর মার্চে ডব্লিউএইচও কোভিড-১৯ কে প্যানডেমিক বা মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে। এখন এ রোগকে এনডেমিক বলার পক্ষে মত আসছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ইউরোপে কোভিডকে একটি এনডেমিক রোগ হিসেবে ঘোষণার ধারণাটি ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে। এ ধরনের ঘোষণা হলে, এই ভাইরাস মোকাবেলার রাষ্ট্রীয় নীতি বা কৌশলগুলোও বদলাবে।
ব্রিটিশ শিক্ষামন্ত্রী নাদিম জাহাভিও বলেন, যুক্তরাজ্য কোভিডকে প্যানডেমিক বা মহামারী থেকে এনডেমিক রোগ হিসেবে বিবেচনার পথে এগোচ্ছে। সোমবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ নিয়ে বক্তব্য দেন। ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণে তুলনামূলক কম মৃত্যু ও রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিয়ে তিনি কোভিড-১৯ প্রতিরোধের কৌশল বদলের কথা বলেন। মহামারী ঠেকানোর কঠোর বিধিনিষেধের কৌশল বদলে স্বাভাবিক জীবনযাপনের মধ্যেই রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রস্তাব করেন।
অবশ্য ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও রোমানিয়ার মতো দেশগুলোতে এখনও দৈনিক শনাক্তের নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। ফলে সেখানে এ ধরনের আলোচনা শুরুর সময় হয়তো এখনও আসেনি। এখন পর্যন্ত জার্মানি ও ফ্রান্সে কঠোর বিধিনিষেধ বজায় আছে, বিশেষ করে যারা টিকা নেয়নি তাদের জন্য। ইউরোপে সবচেয়ে কড়া লকডাউন বজায় রেখেছে নেদারল্যান্ডস। ইউরোপের মধ্যে আয়ারল্যান্ডে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও সেদেশের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন টিকা বাধ্যতামূলক করতে নারাজ। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডে ক্রুও বলছেন তার সরকার টিকা নেওয়ার বিষয়টিকে ব্যক্তির সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিতে চান। অনেক দেশই এখন কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা কমিয়ে এনেছে। এমন দেশের তালিকায় সমপ্রতি যোগ হয়েছে চেক রিপাবলিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলকডাউনের মধ্যে পার্টিতে যোগদান ক্ষমা চাইলেন বরিস জনসন
পরবর্তী নিবন্ধহালদায় ২টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ