রাঙ্গুনিয়ায় গেল কয়েক বছর ধরে ধান–চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে এবার ধান সংগ্রহে কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারিভাবে বেশি মূল্য পাওয়ায় উপজেলার শত শত কৃষক খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে যাচ্ছেন। একমাসেই লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি ধান সংগ্রহ হয়েছে বলে জানা যায়। বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পেরে সন্তুষ্ট কৃষকরাও।
উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত আড়াই হাজার কৃষকের কাছ থেকে ধান ও নিবন্ধিত মিলারদের নিকট থেকে মোটা চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। কৃষকের কাছ থেকে প্রতি কেজি ৩২ টাকা দরে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা দরে। ফলে চার টাকা বাড়তি দাম পাওয়ায় সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে ওঠছেন।
এ বছর রাঙ্গুনিয়ায় ৮৩৮ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ৭ মে থেকে ধান সংগ্রহ শুরু করা হয়, চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। তবে একমাসেই এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫০০ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। অন্যদিকে উপজেলার ৪৫টি নিবন্ধিত মিলারের কাছ থেকে ১৬৪০ টন মোটা চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে ইতিমধ্যে ৮০০ টন চাল সংগৃহীত হয়েছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা খাদ্য গুদাম প্রাঙ্গণে বস্তাবন্দি করে বিভিন্ন পরিবহন নিয়ে ধান বিক্রি করতে এসেছেন কৃষকরা। বেতাগী মির্জাখীল এলাকার কৃষক আরিফ রেদোয়ান প্রায় ৩ টন, কৃষক সুজিত কুমার নাথ ২.২৮০ টন, নিপুন চন্দ্র নাথ ৩ টন এবং মরিয়মনগর এলাকার বিকাশ মুৎসুদ্দি ৩ টন ধান নিয়ে এসেছেন। গুদাম সংশ্লিষ্টরা তাদের ধান পরীক্ষা করে এসব ধান সংগ্রহ করে নেন। কৃষকরা জানান, খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে হলে নিবন্ধন, আর্দ্রতা যাচাই, পরিবহন খরচসহ নানা রকমের ঝামেলা পোহাতে হয় কৃষকদের। তাছাড়া বাজারে ধানের বাড়তি দামও পাওয়া যেতো। তাই তারা ইতোপূর্বে গুদামে ধান দিতে আগ্রহী ছিলেন না। তবে এবার বাজার মূল্যের চেয়ে ৪–৫ টাকা বেশি পাওয়ায় সরকারি নিয়ম মেনেই সবাই ধান দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
রাইচমিল মালিক আব্দুল কাদের জানান, লোকাল বাজারে ২৬০–২৭০ টাকা আড়ি দামে (কেজি ২৬–২৭ টাকা) ধান বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে সরকারি দাম বেশি। তাই কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য গুদামের (এলএসডি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন বলেন, কৃষকরা এবার ধান দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে। ধানের আদ্রতা ও ছিটা পরীক্ষা করে কোনরকম হয়রানি ছাড়াই কৃষকদের থেকে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে।