ধর্ষণ এখন আমাদের চারপাশের নিত্যকার আর দশটি সাধারণ ঘটনার মতো সাধারণ হয়ে যাচ্ছে। ঘরে-বাইরে নারীর নিরাপত্তা দিনের পর দিন আরো সংকোচিত হয়ে যাচ্ছে। যেহতু নগরায়ন শিল্পায়নের ফলে নারীদের এখন ঘরে-বাইরে কাজ করতে হয়। ফলে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন। একজন পুরুষ দিন-রাত যেভাবে বুক ফুলিয়ে পথে বেরোতে পারে একজন নারী তার কতটা পারছেন! সেক্ষেত্রে নারী-পুরুষের লিঙ্গ ভেদাভেদের ফলে একটি চরম বৈষম্য মূলক প্রথা সমাজে বিরাজমান। সে সুযোগে অপরাধী চক্র বাহুবল এবং সামাজিক ধর্মীয় আশকারা পেয়ে পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিবাহিত-অবিবাহিত যুবতী -শিশু বৃদ্ধা কিছুই তাদের আটকাতে পারছেনা। নারী দেখলেই পশুর মতন হামলে পড়ছে কিছু বেপরোয়া যুব সমাজ। এতে করে নারীর অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যা সামগ্রিক ভাবে আমাদের সামাজিক, অর্থনীতিক,রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই এ থেকে পরিত্রাণের জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সমাজের লোকেরা দুষ্কৃতকারীদের সতর্ক না করে উল্টো দেখা যায় নারীর পোশাক পরিচ্ছেদ নিয়ে নানান রকম কটূক্তি জুড়িয়ে দেন। যা কাম্য নয়। রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের সচেতনতায় কেবল পারে আমাদের এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে। সন্তানকে বাসায় শিক্ষা দিতে হবে নৈতিকতা ও সুশিক্ষা। এবং নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা। যে সন্তান তার মা-বোনকে সম্মান দিয়ে অভ্যস্ত হয়ে বেড়ে উঠবে সে কখনো বড় হয়ে অন্য নারীর সাথে এমন জঘন্য আচরণে লিপ্ত হবে না। পাশাপাশি সরকারের উচিত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এসব অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে। পুলিশ বাহিনীকেও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ভাবে মনিটরিং করা প্রয়োজন। বিচার বিভাগ যদি তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করেন তবে ভালো হয়। অন্যথায় দেশে ধর্ষণের যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে মারাত্মক আকারে তা ঠেকানো কঠিন হয়ে উঠবে। সময় থাকতে তার লাগাম টানা উচিত। নারীর মুখটিপে না রেখে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে উঠুন। সমাজকে আলোকিত করতে নারীর অবদানের বিকল্প নেই। কবি নজরুল যেমন বলেছেন, “এ পৃথিবীর যা কিছু সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।
সিরাজুল মুস্তফা, চট্টগ্রাম