একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলছে। প্রতিদিনই একদল পিশাচ, পাশবিক ও বর্বর মানুষের পৈশাচিকতার শিকার হচ্ছেন আমাদের মা, বোন, স্ত্রী বা শিশু। ধর্ষণ একজন নারীকে জীবন্ত লাশ বানিয়ে ফেলে। ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা ও দুঃস্বপ্ন নিয়ে বয়ে বেড়ায় জীবন নামক মরীচিকা। সমাজের অপবাদ বা লজ্জা সহ্য করতে না পারলে আত্মহত্যার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। এই বর্বরতার প্রতিবাদে কিছুদিন পূর্বে প্রকম্পিত ছিল পুরো দেশ। ধর্ষণের বিরুদ্ধে শুধু নারীরাই নয়, পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরুষরাও। আন্দোলনে আছেন শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। তারই প্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংষ্কার করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে গত ১৩ অক্টোবর। এরপর চলমান সংসদে এটা আইনে পরিণত হয়। সহিংসতা, নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে এটা দীর্ঘদিনের স্বাভাবিক দাবী। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। কিন্তু বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আইনে শাস্তি বাড়লেও ধর্ষণ কমেনি। আমরা জানি যে শাস্তি যত কঠোর হয়, আসামি তত বেশি নির্দোষ প্রমাণিত হয়। নিম্ন আদালতের রায়, হাইকোর্টে আপিল এরপর রায় বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা চাওয়ার প্রক্রিয়ার সুযোগে যেন অপরাধী কোনভাবেই পার পেয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে জরুরি বিষয় নারীদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখার জন্য আরো কার্যকরী ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে হবে। শুধু আইন করলেই আমরা সহজে এই বর্বরতা থেকে মুক্তি পাবো বলে মনে করা বোকামি। আমার মনে হয় মৃত্যুদণ্ড সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে নয়, ধর্ষণ প্রমাণিত হলে ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে আইন পাশ হলে অপরাধ কিছুটা কমবে।