তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নতি হয়েছে সেটি পৃথিবীর সামনে বড় উদাহরণ। আজকে যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো পূর্বে ঘটেনি তা নয়। আগেও ঘটতো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপকতা ছিল না বিধায় সেগুলো মানুষ জানতে পারতো না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে কোনো ঘটনাই ঢাকা থাকছে না। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি ভালো দিক। সরকার অতীতে ধর্ষণের ঘটনার বিচার করে শাস্তি দিয়েছে। এখনও যেগুলো ঘটছে সেগুলো বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর।
শনিবার (১০ অক্টোবর) সকালে সার্কিট হাউজে বাংলাদেশ বেতার আয়োজিত বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০২০-২১ বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন এবং সম্প্রচার আইন হলে গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন কাঠামো থেকে শুরু করে সবকিছু সুরক্ষিত হবে। তবে আইন পাস করা কোনো মন্ত্রণালয়ের একক বিষয় নয়। আইন পাসের সঙ্গে মন্ত্রীসভা, আইন মন্ত্রণালয়, সংসদ, সংসদীয় কমিটি যুক্ত। যেহেতু তথ্য মন্ত্রণালয়ের একক দায়িত্বে এটি করা সম্ভব নয়, সুতরাং এটি নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেওয়াও সম্ভব নয়। তবে এটি সহসা করার চেষ্টা করছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা যখন কথা বলেন তখন ভুলে যান-তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন কি করেছেন। ফখরুল সাহেবরা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, দলগতভাবে বিভিন্ন অপকর্ম করতেন। নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে আট বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলা এবং ষাট বছর বয়ষ্কা মহিলাও বাদ যায়নি বিএনপি কর্মীদের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর হাত থেকে।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বেতারের ভুমিকার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন স্বাধীন বাংলা বেতারের কথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দেশ বিনির্মাণে বেতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। বেতারের অনেকগুলো অনুষ্ঠান অত্যন্ত ভালো এবং জনমানুষের কাছে সেই অনুষ্ঠানমালার ব্যাপক আবেদন রয়েছে। আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতিকে লালন করার ক্ষেত্রে বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। দূর্যোগ-দূর্বিপাকে বেতারই মানুষের কাছে খবর পৌঁছায়। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্মার্টফোনের ব্যাপকতা বেড়েছে, এখন একটি রেডিও বহন করা সম্ভবপর নয়। তাই রেডিওকে অ্যাপসের মাধ্যমে টেলিফোনে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। এখন অ্যাপসের মাধ্যমে বিভাগীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ বেতার মোবাইলেও শোনা যায়।
তিনি বলেন, ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও আশপাশে পাহাড়সহ নানাকারণে ফেনীতেও চট্টগ্রাম বেতারের অনুষ্ঠান শোনা যায় না। অথচ ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন খুলনা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান প্রতিবন্ধকতা না থাকায় এখানে শোনা যায়। গুরুত্ব বিবেচনায় ব্যবসা বাণিজ্য ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিসহ নানা সংবাদ ও কৃষ্টি সংস্কৃতির চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, ঢাকা কেন্দ্রের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে আপলিঙ্ক করে সেটি আবার বিভিন্ন বেতার কেন্দ্রে ডাউনলিঙ্ক করে সারাদেশে শোনানো হবে। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠানও খুব সহসা সেভাবে উদ্বোধন হবে। এটি চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের ইতিহাসে বিরাট মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক হোসনে আরা তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, বাংলাদেশ বেতারের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের পরিচালক এসএম আবুল হোসেন প্রমুখ।