দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরে আরো ১৮০৪ রোহিঙ্গা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা নিয়ে নৌবাহিনীর ছয়টি জাহাজ নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছে। এটি রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল, যারা ভাসানচরে সরকারিভাবে গড়ে তোলা বসতিতে আশ্রয়ের জন্য কক্সবাজার ছেড়েছেন। এ নিয়ে দুই দফায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হলো।
সূত্র জানায়, সোমবার রাতে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৪৩৫টি পরিবারকে ৩০টি বাসে করে চট্টগ্রামে আনা হয়। সেদিন রাতে তাদের পতেঙ্গার বিএফ শাহীন কলেজ মাঠ এবং কোস্টগার্ডের বার্থ এলাকায় স্থাপিত অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গতকাল দুপুরে তাদের ভাসানচরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ জনকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের জীবনযাত্রা অন্যান্য রোহিঙ্গাদের বেশ সন্তুষ্ট করে। এতে করে শুরুতে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ভাসানচরে যেতে অনাগ্রহী থাকলেও এখন প্রেক্ষাপট বদলে যেতে শুরু করেছে। নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে কোনো ধরনের উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা দেখা যায়নি। বরং কেউ কেউ ছিলেন বেশ উচ্ছ্বসিত। গতকাল সকালে ভাসানচর যাওয়ার পথে জাহাজে মো. দ্বীন ইসলাম নামে এক রোহিঙ্গাকে দোতারা বাজিয়ে গান করতে দেখা যায়। নৌবাহিনীর অফিসারদের কাছে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানান তিনি। এদিকে দুপুরে ভাসানচরে পৌঁছাবার পর রোহিঙ্গা নরনারীদের ঘর ও খাবার দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা ভাসানচরের বিস্তৃত এলাকায় ছোটাছুটি করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিল। এ সময় রোহিঙ্গা নরনারীরা জানান, উখিয়ার ক্যাম্পের চেয়ে ভাসানচর জায়গাটা তাদের ভাল লেগেছে। সূত্র জানায়, ক্রমান্বয়ে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে। অবশ্য গত মে মাসে সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা ৩০৬ জন রোহিঙ্গা তখন থেকেই ভাসানচরে রয়েছে।
নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল মোজাম্মেল হক বলেন, সরকার প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যে আবাসন ব্যবস্থা করেছে, তা বিশ্বে নজিরবিহীন ঘটনা। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খেলার মাঠসহ সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ভাসানচরকে রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৯ ফুট উঁচু বাঁধ। নির্মাণ করা হয়েছে জেটিও। এতে ভাসানচরের সাথে জাহাজে যাতায়াত সহজ হয়ে উঠেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৈকতের দায়িত্ব কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দিতে সুপারিশ
পরবর্তী নিবন্ধহঠাৎ চালু হয়েই ধাক্কা, চালকের করুণ মৃত্যু