দোকান মালিক কর্মচারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

স্বল্প পরিসরে দোকান খোলার দাবি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৬ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:০০ পূর্বাহ্ণ

লকডাউনের মধ্যে স্বল্প পরিসরে হলেও দোকানপাট খুলতে চান চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। গতকাল সোমবার দুপুরে নিউ মার্কেট মোড়ে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতি। এতে হাজারো দোকান মালিক ও কর্মচারীরা অংশ নেন। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু তালেব। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির দুলাল।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, গতবারের লকডাউনে আমাদের ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এখানে ১১০টি মার্কেটে প্রায় ১৩-১৪ হাজারের মতো দোকান রয়েছে। সামনে রমজান আসছে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ দোকানে ঈদের পণ্য চলে এসেছে। ব্যবসায়ীরা কোটি টাকার বিনিয়োগ করে ফেলেছেন। লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখা হলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখোমুখি হবেন। এতে দেউলিয়া হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার অনুমতি দেন। আমরা গত রোববার চসিক মেয়র, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সিএমপি কমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়েছি। এখন সারাদেশের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন করছেন। যেখানে গার্মেন্টস, শিল্প কলকারখানা খোলা রাখা হয়েছে, সেখানে আমরা দোকান ব্যবসায়ীদের দোষ কোথায়? তিনি বলেন, সকালে আমাদের মার্কেটের কিছু দোকান খোলা ছিল। কিন্তু পুলিশ ও জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে সেসব দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। গত একবছরে করোনা মহামারীতে তামাকুমণ্ডি লেনের কেউ আক্রান্ত হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার কামাল, মিমি সুপার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জাগির হোসেন, বিপনী বিতান মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ছগির আহমদ, স্যানমার ওশান সিটি ও ফিনলে স্কয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আসাদ ইফতেখার। এ সময় সেলিম উদ্দিন, আবদুল খালেক, মোস্তাক আহমদ, মো. রফিক, জাফর ইকবাল, মো. হানিফ, ওমর ফারুক, মো. রাশেদ, মতি টাওয়ার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জামাল উদ্দিন, গুলজার টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলী হায়াত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীরা স্বল্প পরিসরে দোকানপাট খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে কেবিনেটে আলাপ হয়েছে। মূলত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সাথে আলাপ-আলোচনা করেই লকডাউনের সার্বিক বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপের মাধ্যমে। এখন মহামারী প্রতিরোধে সরকার যে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে বিষয়ে সকলকে অবগত করা হয়েছে। আশা করছি, সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখবেন।
এদিকে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের পর কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিক্ষোভের ভিডিও, সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করেছে। আমরা এসব ফুটেজ দেখছি। উপস্থিত অনেকের সঙ্গে কথা বলছি। যদি ব্যবসায়ীরা সরকারবিরোধী কোনো স্লোগান দিয়ে থাকে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এর আগে মার্কেট চালু রাখার দাবিতে গত রোববার মানববন্ধন করেন জিইসি মোড়ের ইউনেস্কো সেন্টারের ব্যবসায়ীরা। এ সময় বেশ কিছু স্লোগানও দেন তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুদিন ধরে সাত হাজারের বেশি নতুন রোগী
পরবর্তী নিবন্ধঅন্যের মুখে মাস্ক পরানো স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়