দেয়ালচিত্র ভাঙচুর নিয়ে বিএনপিকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে

মহানগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৮ জুন, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জামালখানে বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র ভাঙচুরের ঘটনায় দলের কেউ জড়িত ছিল না দাবি করেছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। একইসঙ্গে ঘটনার দিন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকা বিএনপির এক নেতাকেও ছাত্রলীগ কর্মীর করা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি করা হয়। এতে দলের অবস্থান তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা না হলে আমরা হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব। তিনি বলেন, আমাদের তারুণ্যের সমাবেশ হয়েছে ১৪ জুন। চকবাজার থানায় ছাত্রলীগকর্মীর করা মামলায় মো. ইউসুফ নামে ৪৫ নম্বরে যাকে আসামি করা হয়েছে, ঘটনার সময় তিনি ভারতের চেন্নাইয়ে ছিলেন। চিকিৎসা শেষে তিনি ঢাকায় এসেছেন ১৫ জুন। মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। ২০২৪ সালের আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও প্রশাসন এসব গায়েবি মামলা করছে। অনৈতিকভাবে এসব মামলা করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঘরছাড়া, মাঠছাড়া করতে চায় সরকার। যেভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আমাদের ৫৫ জন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেছিল। তিনি বলেন, চকবাজার থানার ৩৯ নম্বর এবং কোতোয়ালী থানার ৫০ নম্বর আসামি করা ওয়াহেদ আলী আজগর জাতীয় পার্টির সদস্য।

তিনি বলেন, জামালখানে ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত ছিল না। এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনো রকম সম্পর্ক নেই। বরং এর আগের দিন মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিজেদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি করে। এই মারামারি থেকেই বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর করা হয়। মামলায় যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউ যদি ওইদিন জামালখানে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত এমন প্রমাণ থাকে এবং ভিডিও ফুটেজে থাকে তাহলে আমরা সব দায় স্বীকার করে নেব।

শাহাদাত বলেন, বুধবার রাতে চান্দগাঁওয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা সাবেক ছাত্রদল নেতা নওশাদকে ফাঁসানোর জন্য এনায়েত বাজারের গোয়ালপাড়া থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। বাকলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শামীম ও জাহাঙ্গীরকে চকবাজার থানা পুলিশ ঘর থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছে। আমি থানায় গিয়ে তাদের দেখে এসেছি। তাদের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। যদি মামলার আসামি হয়ও তাহলে মারার অধিকার কে দিয়েছে? গ্রেপ্তার করতে পারবেন। গায়ে হাত তোলার অধিকার কেউ আপনাদের দেয়নি। সবার নামের লিস্ট করা হচ্ছে।

ডা. শাহাদাত অভিযোগ করে বলেন, তারুণ্যের সমাবেশ করার কথা ছিল ১১ জুন। ওইদিন যুবলীগ পাল্টা সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করায় আমরা সংঘাত এড়াতে ১৪ জুন করি। সমাবেশে আসার পথে চট্টগ্রাম কলেজের সামনে ও জামাল খান মোড়ে ছাত্রদল ও যুবদলের উপর তারা হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের আহত করে। পরে উল্টো বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ, এম আই চৌধুরী মামুন ও যুবদল নেতা মোশারফ হোসেন, এমদাদুল হক বাদশাসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে কোতোয়ালী ও চকবাজার থানায় দুইটি মামলা করে। এরপর থেকে চট্টগ্রামে গণগ্রেপ্তার শুরু হয়েছে। সমাবেশ থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে মীরসরাইয়ের ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শারীরিক হেনস্তা করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান, এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, আবদুল মান্নান, হারুন জামান, আনোয়ার হোসেন লিপু, মো. কামরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, মোহাম্মদ শাহেদ, এইচ এম রাশেদ খান, মনোয়ারা বেগম মনি, জেলী চৌধুরী, মো. আজম, হাজী মো. সালাউদ্দীন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউখিয়ায় গুলিতে রোহিঙ্গা নেতা খুন
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি-জামাত কখনো বাংলাদেশ চায়নি, এখনো চায় না : নওফেল