বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন, যাতে তিনি সুস্থ হয়ে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফিরতে পারেন। সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী নিজ নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালানোর সময় এই আহ্বান জানান।
একাধিক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এই মাটি ও মমতার সাথে আমার শেকড়ের সম্পর্ক রয়েছে। একটি নিরাপদ ও স্বনির্ভর চকরিয়া–পেকুয়া গড়তে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যেতে হবে। আগামীতে কিছু মৌলিক বিষয়কে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে। তিনি বলেন, লবণশিল্পের আধুনিকায়ন, ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলসমূহে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা, মাতামুহুরী নদীতে টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণসহ মিষ্টি পানির উৎস থেকে ফসল উৎপাদন ও কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জাতীয় সংসদে অর্থবহ আলোচনা করা হবে। চকরিয়া ও পেকুয়ায় আন্তর্জাতিক মানের কারিগরি ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসার করা হবে। দারিদ্র্য বিমোচন ও আত্ম কর্মসংস্থান খাতে যুবসমাজ ও তরুণদের সম্পৃক্ত করে এই অঞ্চলকে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতায় ত্বরান্বিত করার কাজে হাত দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সালাহউদ্দিন আহমদ দীর্ঘ ১৪ বছর পর নিজ নির্বাচনী এলাকায় (চকরিয়া–পেকুয়া) ধানের শীষ মার্কার প্রচারণায় নেমেছেন মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) থেকে। এই প্রচারণা চলবে আগামী ছয়দিন অর্থাৎ সাত ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ নির্বাচনী এলাকা কঙবাজার–১ আসনের চকরিয়া, পেকুয়া ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় ব্যাপক গণসংযোগ করবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, একটানা ছয়দিনের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য সহধর্মীনি সাবেক এমপি হাসিনা আহমদসহ ঢাকা থেকে বিমানে চেপে মঙ্গলবার সকালে কঙবাজার বিমানবন্দরে অবতরণের পর জেলা বিএনপির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি রওনা দেন চকরিয়ার উদ্দেশ্যে। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুরে প্রথমে কবর জেয়ারত করেন চকরিয়ার সর্বদক্ষিণ ইউনিয়ন খুটাখালীর প্রয়াত পীরে কামেল আবদুল হাই সাহেবের। এরপর ইউনিয়নের পাড়ায় পাড়ায় ছুটে চলেন তিনি। এ সময় সালাহউদ্দিনের গাড়ির বহরে জেলা, উপজেলাসহ সর্বস্তরের দলীয় নেতাকর্মীর ঢল নামে। সালাহউদ্দিন এলাকায় এসেছেন খবরে তাকে একনজর দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন আবাল–বৃদ্ধ–বণিতা।
প্রচারণার অংশ হিসেবে খুটাখালী স্টেশনে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। খুটাখালী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এই পথসভার আয়োজন করা হয়। এর পর বিকেলে পর্যায়ক্রমে সালাহউদ্দিন আহমদ নির্বাচনী প্রচারণা চালান ডুলাহাজারা ইউনিয়নে। সেখানেও প্রয়াত পীরে কামেল আবদুর রশীদ হুজুরের কবর জেয়ারত করেন সালাহউদ্দিন। পাড়ার পাড়ায় নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে যোগ দেন ডুলাহাজারা ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ধানের শীষের জনসভায়। সেখান থেকে সন্ধ্যার দিকে নির্বাচনী প্রচারণায় আসেন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা সোয়া সাতটা পর্যন্ত দিনভর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ শেষে প্রথমদিনের মতো প্রচারণা শেষ করেন সালাহউদ্দিন। সেখান থেকে সড়ক পথে পেকুয়া সদরের নিজ বাড়িতে অবস্থান করবেন। পরদিন বুধবার (আজ) সকাল ৮টায় মা–বাবার কবর জেয়ারতের মাধ্যমে দ্বিতীয় দিনের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন পেকুয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের প্রেস সচিব ছফওয়ানুল করিম জানান, দীর্ঘ ১৪ বছর পর কঙবাজারবাসীর গর্বের ধন সালাহউদ্দিন আহমদ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন মঙ্গলবার থেকে। তিনি আগামী ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়দিন একনাগাড়ে চকরিয়া, পেকুয়া ও সাংগঠনিক উপজেলা মাতামুহুরীর ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গণসংযোগ চালাবেন। এজন্য আগে থেকে দলের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।











