দেশ হতে দেশান্তরে

সেলিম সোলায়মান | রবিবার , ৯ নভেম্বর, ২০২৫ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

পেশাগত কারণে দেশে দেশে ঘোরাঘুরির বয়সও তো হয়ে গেল দেখতে দেখতে এক যুগেরও বেশী। আমার কেজোভ্রমণের সেই শুরু থেকেই নিজের ভুতো চেহারা, অছ্যুত গাত্রবর্ণ ও পাসপোর্টের রঙ্গয়ের ব্যাপারে নানান জনের মুখনিঃসৃত নানান গল্প ও কথায় বদ্ধমূল যে ধারণা তৈরি হয়েছিল মনে, তাতে যে কোন দেশেরই ইমিগ্রেশন বাবুদের ব্যাপারে ছিলাম এতকাল কিঞ্চিৎ আশঙ্কিত। তাতে যে কোন ইমিগ্রেশনে উটকো প্রশ্ন বা বাড়তি পরীক্ষা মুখোমুখি হবার ব্যাপারে ছিলাম সদাপ্রস্তুত, মানসিকভাবে। কিন্তু গত ছ’মাসে ছয়বার সৌদি ইমিগ্রেশনের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের মুখোমুখি হওয়া সহ দুই দুইবার এক্কেবারে গ্যাঁড়াকলে আঁটকে পড়ার অভিজ্ঞতার কারণে, মনের সে আশংকাটি যে মূর্তিমান এক আতঙ্কে বিবর্তিত হয়েছে, বুকের ধরপড়ানিতে টের পেয়েছিলাম তা গত সন্ধ্যায়, রিয়াদের ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়িয়ে।

তবে কপাল ভাল এই যে, এবার ইমিগ্রেশন ডেস্কের শেখ, আমার পাসপোর্টটি হাতে পেয়ে চকিতে একবার এই ভুতোর দিকে নিঃশব্দে তাকিয়ে, বিকৃত কোনরূপ মুখভঙ্গি না করেই ভিসাটির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে, দ্রুত প্রয়োজনীয় সিল ছাপ্পড় মেরে পাসপোর্টকে ছুঁড়ে মারার ভঙ্গিতে ফেরত দিলেও, সেটিকেই মনে হয়েছিল অত্যন্ত সম্মানজনক ঘটনা! ফলে বেশ জোরের সাথেই বলেছিলাম, “শুকরান”। এরপর দ্রুত নীচতলায় গিয়ে ব্যাগ সুটকেস সংগ্রহ করতে করতেই এসেছিল জিয়ার ফোন। আমার কথা শুনে জানিয়েছিল, অচিরেই আগমনী লাউঞ্জের দুয়ারে শকটসমেত হবে সে হাজির!

সে মোতাবেক অচিরেই নিশ্চিন্তমনে গাড়িতে ব্যাগ সুটকেস তুলে, জিয়ার পাশে থিতু বসতেই, গিয়েছিল চোখ অনেকক্ষণ পর, হাতের ব্ল্যাকবেরির মেইলবক্সে। তাতে বেশ কটা নতুন মেইলের উপস্থিতি দেখে, গাড়ী চালাতে চালাতে দেশবিষয়ে করা জিয়ার নানান উদগ্রীব প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে, দ্রুত চিঠিগুলোর বিষয়বস্তু পড়ে পড়ে এগুতে এগুতে আটকে গিয়েছিল চোখ, হেডকোয়ার্টার থেকে আসা একটা চিঠির বিষয়বস্তুতে। ব্যাপারটিকে সে সময় বা তারপরও, মানে জিয়ার বাসায় ভাবীর হাতের চমৎকার রান্না করা পঞ্চব্যঞ্জনে ভুরিভোজ করার সময় বা ঘরে ফিরে বিছানায় যাওয়া পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব না দিলেও, এখন মানে এই সকালে নাস্তা খেতে খেতে মনে হল এতকাল, মানে ছিলাম যতকাল দেশে; সেসময় কোম্পানির হেডকোয়ার্টারের বড়সড় হোমরা চোমড়াদের কার কখন, কী হলো? তা নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন ছিল না মোটেও। কিন্ত এখনতো, বিষয় আর তা নয়! সৌদির স্থানগুনে এখন এসব বিষয় ভালই তো চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে! অতএব ঢাকা থেকে রিয়াদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার সময় ভেবেছিলাম যেমন, অফিসে ঢুকেই ঝাঁপিয়ে পড়ব আগামী বছরের বাজেট প্লানিং নিয়ে, তা মনে হয় হচ্ছে না আর । আজ বরং অফিসে গিয়ে বুঝতে হবে প্রথম, বস ফিলের মন মেজাজ।

আচ্ছা, আরেকটু ঝেড়েই কাশা যাক। ব্যাপার হচ্ছে বঙ্গপোসাগরের গহীন গভীরে কোন সাইক্লোন ঘোট পাকালে, তা নিয়ে উপকূল তীরবর্তী বড় বড় গাছেরাই শুধু না, বাংলাদেশের ভেতরের দূরবর্তী নানান স্থানের বড় বড় বৃক্ষদেরও চিন্তিত হবার যৌক্তিক কারণ থাকলেও, ঘাসেদের একমাত্র বড় গাছের নীচে চাপা পড়ার ভয় ভিন্ন, ঝড়ের তাণ্ডব নিয়ে কোন ভাবনার কারণ থাকে না যেমন, তেমনি বৈশ্বিক যে কোম্পানিতে কাজ করছি, সেটির কাছে ব্যাবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বের মাপকাঠিতে বাংলাদেশের মার্কেটিং হেড হিসাবে ছিলামতো আমি ঘাসসদৃশ। ফলে হেডকোয়ার্টারের কোন ঝড় নিয়ে, এই ঘাসের চিন্তার কিছু ছিল না তেমন। কিন্তু যেই না এসেছি সৌদিআরবের এসাইনমেন্টে, এখানকার তৈলসমৃদ্ধ বালির গুনে রাতারাতি পরিণত হয়েছি গোটা মধ্যপ্রাচ্যে মাথা উঁচিয়ে থাকা দুই ঢ্যাঙ্গা খর্জূর বৃক্ষের একটিতে। অতএব, হেডকোয়ার্টারের যেকোন ঝড়ের ধাক্কা তো লাগাটাই স্বাভাবিক এখন!

হ্যাঁ, তেমনি এক ঝড় বয়ে গেছে ওখানে গতকাল। বলা নেই কওয়া নেই হঠাত করেই এক ঝড়ো পরিবর্তনে জাপান বাদে এশিয়ার বাকী দেশগুলোর সাথে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ ও আফ্রিকার মহাদেশের দেশগুলো মিলে ৭০টি দেশের যে ব্যবসায়িক অঞ্চল আছে কোম্পানির মানচিত্রে, মাস দশেক আগে যেই জেফ জর্জকে এই অঞ্চলের হেড বানানো হয়েছিলে, তাঁর বদলে ডঃ রেইনার বোয়েম নামের একজনকে দেয়া হয়েছে সেই পদ গতকাল। অভিজ্ঞতা থেকে জানি, এর মানে হচ্ছে অচিরেই বোয়েম সাহেব প্রথমে হেডকোয়ারটারস্থ তাঁরনিজের টিম বদলাবেন। যার অর্থ হচ্ছে অবশ্যম্ভাবীভাবে আমার বর্তমান ইনডাইরেক্ট বস, যিনি অনেকটা নিজ হাতেই তুলে এনে বসিয়েছেন আমাকে সৌদিতে, সেই এরিক ভ্যানওপ্পেনের জায়গায় আসবেন নতুন কেউ। সেই নতুন কেউ যে, কে হবেন? তা তো জানি না!

আবার মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ সৌদির বর্তমান কান্ট্রি হেড, ডাইরেক্ট বস ফিলকেও যে বোয়েম সাহেব কতদিন রাখবেন, তারওতো নাই ঠিক ঠিকানা। অর্থাৎ বেশ দ্রুত নিশ্চিত আমার ইনডাইরেক্ট বসের বদল হলেও, অচিরেই ডাইরেক্ট বসও বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা তুমুল। এদিকে সৌদিতে আমাকে তিন বছরের এসাইনম্যান্টে এনেছেন তো আমাকে, এখনকার ডাইরেক্ট ও ইনডাইরেক্ট বস। তাঁরা বদলে গেলে, এসাইনমেন্ট যে আমার বহাল থাকবে, তা ভাবা মোটেও ঠিক নয়। তদুপরি এখন পর্যন্ত ইকামাহীন অবস্থা তো আমার হল, না ঘরকা না ঘাটকা! এমতাবস্থায় দুই নতুন বস মিলে, উটকো ঝামেলা মনে করে ঝেড়ে ফেলতে পারে সহজেই আমাকে তাঁরা।

মোদ্দা কথা হল সাদাদের দেশে জন্ম নেয়া আধুনিক যুগের এই কর্পোরেট দানবগুলো, মুখে মুখে পিপল ফ্রেন্ডলিনেসের নিয়ে যতই গলাবাজি করুক, যতই নানান রঙয়ের কালিতে লিখুক কাগজে, ডাইভারসিটি ও ইনক্লুসিভনেস বিষয়ে, দিনশেষে আমার মতো দরিদ্র দেশের মানুষেরা এখানে যতই বড় পদেই থাকুক না কেন, বিশাল কর্পোরেট এই যন্ত্রে তারা খুব জোর ছোট্ট একটি স্ক্রু বা নাটই মাত্র । ফলে যন্ত্রটির নিরন্তর লাভ উৎপাদন নির্বিঘ্ন করতে, কিম্বা কোন ঝড় ঝাপটার মুখে সাদাদের চাকুরী পোক্ত রাখার জন্য, অবলীলায় আমাদের ছুঁড়ে ফেলে দেয়া, বিশাল যন্ত্রের ছোট একটা স্ক্রু, নাট বা বোল্ট বদলানোর মতোই স্বাভাবিক।

একইসাথে মনে হল, আচ্ছা এখনতো চলছে বাজেট পিরিয়ডের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাল; এ সময়ে এই পরিবর্তন করলো কী কারনে, হেডকোয়ার্টার? চকিতেই নিজ মনেই উত্তর পেলাম তার। আধুনিক যুগের মানবসমাজে অতীব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা এই কর্পোরেট মেশিনগুলো, যতো না মনুষ্য নির্ভর, তার চেয়ে বেশী হলো স্ট্রাকচার, সিস্টেম ও প্রসেস নির্ভর। নিয়মিত এতে স্ট্রাটেজি নামের তেল মবিল দিয়ে রাখার কারণে এর শক্তপোক্ত স্ট্রাকচার ও সিস্টেম এমনিতেই আশি নব্বই ভাগ কার্যকর থাকে। বাকী দশ বিশ ভাগ কার্যকারিতার জন্যই দরকার পড়ে মানুষের, যাদের গণ্য করা যায় স্ক্রু, নাট বা বল্টুর মতোই।

অবশ্য ঐসব স্ক্রু বা নাট বল্টুগুলোও সব এক না। আমাদের দেশে যেমন মামুর জোরে, বাপের ক্ষমতায় অনেকের কপালে যায় জুটে অনেক কিছুই সহজে, ঘটে তা এই বৈশ্বিক কোম্পানিতেও। এই যে মাস দশেক আগে এসেছিলেন যেই জেফ জর্জ, শুনেছি তিনি নাকি কোম্পানির এখনকার চেয়ারম্যানের ‘ব্লু আইড বয়’। ফলে তুলনামূলকভাবে অল্পবয়সেই, কোম্পানিতে যোগ দিয়েই কোম্পানির সত্তরটা দেশ নিয়ে যে রিজিওন সেটির প্রধান হতে পেরেছিলেন তিনি। এমনকি এখন যে তাঁকে বদলানো হল, তাতেও কিন্তু হয়েছে তাঁর প্রমোশনই। অর্থাৎ একটি মানবসন্তান জন্ম নিতে যে সময় লাগে, সেই সময়ের মধ্যেই পেয়ে গেছেন উনি দু দুটো বিশাল বিশাল ডাঙর পদ!

কারণ পিতৃদেব তাঁর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রফেসর বিল জর্জ হলেন, আমাদের কোম্পানির বোর্ডের ইনডিপেন্ডেন্ট এক্সটার্নাল ডিরেক্টর। ফলে বোডরুম পলিটিক্সে এগিয়ে থাকার জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান সাহেব, বিশ্বখ্যাত পোশাক বিপণনকারি কোম্পানি গ্যাপে কর্মরত জেফ জর্জকে হঠাৎ করেই সেখান থেকে তুলে এনে বসিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের এশিয়া অস্ট্রেলিয়া আফ্রিকার ৭০ টি দেশ নিয়ে সৃষ্ট ইমারজিং গ্রোথ মার্কেটের রিজিওন হেডের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে!

না, তা বলে আমি এটা বলছি না, বা ভাবছি না যে জেফ জর্জ যোগ্যতাহীন কোন অকাল কুষ্মাণ্ড। গত আট মাসে দুই দুই বার তাঁর সামনে প্রেজেন্টেশন দিতে হয়েছে আমাকে। এরমধ্যে প্রথমবার প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলাম এক মধ্যরাতে সিঙ্গাপুরে, সেখানকার স্ট্রাটেজি হেডের দায়িত্বে থাকাকালীন, মানে গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন, মধ্যরাতেই দিয়েছিলাম প্রথম প্রেজেন্টেশন। পরিকল্পনামাফিক সিঙ্গাপুরের সেই কান্ট্রি প্রেজেন্টেশনটি হওয়ার কথা ছিল মধ্যদুপুরে। কিন্তু ফ্লাইট বিভ্রাটজনিত কারণে সে সময়ে দলবল নিয়ে এশিয়ায় ঝটিকা সফরে আসা জেফ জর্জ যেহেতু পৌঁছেছিলেন সিঙ্গাপুরে রাত দশটায়, সেহেতু মিটিংটি হয়েছিল শুরু সেদিন মধ্যরাতেই। এরপর ডিসেম্বরে দেশে ফিরে, ফের তাঁর মুখোমুখি হতে হয়েছিল বাংলাদেশের মার্কেটিং হেড হিসেবে।

আগে নানান দিক থেকে ভেসে নানান ফিসফাস থেকে জানতাম, হার্ভাড এমবিএ, জেফ জর্জ অবশ্যই একজন তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও মেধাসম্পন্ন, ওয়ার্কাহোলিক, আমেরিকান স্টাইলের মার মার কাট কাট, হায়ার এন্ড ফায়ার ম্যানেজার। আর দুই দুইবার দুই ঘণ্টা ধরে তার সামনে প্রেজেন্টেশন কাম প্রশ্নোত্তরের মুখোমুখি হয়ে টের পেয়েছিলাম হাড়ে হাড়ে, “মাই ওয়ে ইজ দ্য হাইওয়ে” হল তাঁর মূলমন্ত্র! যেটি আবার আমাদের চলমান কোম্পানি সংষ্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। ফলাফল? সেসময় এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ১১ টি দেশে তাঁর ঝটিকা সফরের শেষে, ঐ অঞ্চলের পাঁচ পাঁচ জন ঝানু কান্ট্রি হেড ছেড়ে দিয়েছিলেন চাকরী! যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন আমার সিংগাপুর সময়ের এবং পুরো পেশাগত জীবনের একমাত্র নারী বস সিঙ্গাপুরের কান্ট্রি হেড লিন্ডা সিয়াহও।

ঘটেছে একই ঘটনা এরপর এশিয়া আফ্রিকার আরো কিছু বড় বড় দেশেও। অন্য কারো ক্ষেত্রে এরকম ঘটলে কোম্পানির নানান জায়গা থেকে, প্রশ্ন উঠত তাঁর নেতৃত্বগুন নিয়ে। তাতে নড়বড়ে হয়ে যেত তাঁর নিজেরই পদ। অথচ জেফ জর্জের ক্ষেত্রে হয় নি টু শব্দটিও। উপরন্তু গতকাল পেয়েছেন উনি আরো বড়পদে, পদোন্নতি। অতএব বাপের জোর বা মামুর কারিশমা যে শুধুই বাংলাদেশে চলে, তা মোটেও ঠিক নয়। আমাদের রাজশাহীর কথ্য ভাষার, মামুর বেটাদের জোর যে সুইজারল্যান্ডের কোম্পানির বোর্ডরুম পর্যন্ত বিস্তৃত বুঝলাম তো তা, নিজ অভিজ্ঞতাতেই।

নাহ, এ নিয়ে খালি খালি চিন্তা করে, টেনশন বাড়িয়ে কী লাভ? বরং ঐ যে বহুদিনের দীক্ষা, ট্রাই টু কন্ট্রোল, অনলি হোয়াট আই ক্যান কন্ট্রোল, থাকি অটল সেই মন্ত্রেই। আগে তো এখন অফিসে যাই। বুঝতে চেষ্টা করি বস ফিলের, মন মেজাজ। অনেকদিন হেডকোয়ার্টারে চাকরি করার সুবাদে এবং জন্মগতভাবে সাদা হওয়াতে, আছে ওখানে ফিলের জোরদার নেটওয়ার্ক। তার কথায় তো অবশ্যই, এমনকি হাবেভাবেও বোঝা যাবে হেডকোয়ার্টারের এই পরিবর্তন, কতোটা তুলতে পারে ঝড় কোনদিকে!

আপাতত ভাল খবর হল, আমাদের নতুন রিজিওন হেড রেইনার, বেড়ে উঠেছেন এই কোম্পানিতেই দীর্ঘকাল ধরে। ফলে ব্যাক্তি হিসাবে তাঁকে না চিনলে বা না জানলেও, কোম্পানি সংস্কৃতিতো আমাদের একই। তাতে বলা যায়, হুটহাট করে তাঁর পক্ষে কিছু না করার সম্ভাবনাই বেশি। তবে জাতে জার্মান হওয়াতে সুইস এই কোম্পানিতে তার লবির জোরও যে বেশ মজবুত, বোধগম্য তাও। বিষয় হচ্ছে ব্রিটিশ আমেরিকান ফিলের, হেডকোয়ার্টারের জার্মান লবির সাথে কেমন ভাব, সেটার উপরই নির্ভর করবে তাঁর ও আমার সৌদির আগামী দিনকালসমূহ।

এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ী নিয়ে কমপাউন্ড থেকে বেরিয়ে মূল রাস্তায় উঠে, দ্রুতই পেলাম টের পরিবর্তনটি। সকাল এই সাতটায়ও রাস্তার চোখে মুখে যে ঘুম ঘুম ভাব দেখছি তা তো মেলে না এই গত তিন মাসের অভিজ্ঞতার সাথে। রাস্তার অতিনগণ্য সংখ্যক গাড়ী দেখে বোঝাই যাচ্ছে, আছে রিয়াদ গ্রীষ্মের ছুটিতে।

লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণ সাহিত্যিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনুমান
পরবর্তী নিবন্ধসমকালের দর্পণ