দেশ হতে দেশান্তরে

‘খামছা ইশারায়’

সেলিম সোলায়মান | রবিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৫ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

আজকাল দেখছি মরুর বন্ধের দিনগুলোও আমার ব্যস্ততায় ভরে উঠছে। বিশেষত যখন থেকে ম্যারিয়টবাস শেষ করে উঠেছি গ্রানাডা এক্সপাট কমপ্লেক্সে নিজের আলয়ে, ঘটছে তা তখন থেকেই। এই যেমন আজ শুক্রবার মানে এখানকার সাপ্তাহিক ছুটির দ্বিতীয়দিন, বরাবরের মতো একটু দেরীতেই উঠে নাস্তা শেষ করে চা খেতে খেতে ভাবছি, জুম্মার আগে গতকালকের জমা কাজগুলোর একটা মানে জামা কাপড়গুলো অন্তত ধুয়ে শুকিয়ে ফেলতে হবে।

কারণ গতকাল রুটিনমাফিক আরিফ এসে ঘরদোর পরিষ্কার করতে শুরু করতেই, বেরিয়ে যেতে হয়েছিল আমিন ইব্রাহিমের সাথে। ফিরেছিলাম শেষ বিকেলে, আর এসেই ঢুকতে হয়েছিল রসুইঘরে দুজনের ডিনারের আয়োজন করার জন্য।

আগেও বলেছিলাম সম্ভবত যে আমাদের সিএফও, পাকিস্তানি আমিন ইব্রাহিম একদিকে যেমন আমার এই কমপাউন্ডের প্রতিবেশী, অন্যদিকে অফিসে সে হল আমার প্রায় প্রতিদিনেরই লাঞ্চ পার্টনার। বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিল সে, রিয়াদে কোন গলফ কোর্স আছে কী না? তা যেন আমি আমার টিমের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে খোঁজ নিয়ে তাঁকে জানাই। সে নাকি গলফের পোকা। এখানে আসার পর থেকে গলফ খেলতে না পারায় মন তার বড়ই আঁকুপাঁকু আর হাত নিশপিশ করছে! তো তাকে দেয়া কথা অনুযায়ী আমার টিম আর সেলস টিমের নানানজন আছে যারা এই রিয়াদে বছরের পর বছর, জিজ্ঞেস করেছিলাম তাদেরকে গলফকোর্সের খবর। উত্তরে অনেকেই তারা এমন চাহনি দিয়েছে যার মানে বাংলা করলে দাঁড়ায়– “এইডা আবার কী? খায় না গায়ে দেয়?”

অবশ্য গলফের ব্যাপারে আমিও তো কোন মহাপণ্ডিত, বিদ্যার জাহাজ না। এ খেলার বিষয়ে বিদ্যার দৌড় আমার, টাইগার উডসের নাম জানা ও তার ছবি দেখে চিনতে পারার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ওহ আরকেটু জানি তা হলো এটি খেলার জন্য একধরনের বিশেষায়িত অতি দামি লাঠি যে গুলোর নাম হল ক্লাব, তা দিয়ে ছোট ছোট ডিমের মতো শক্ত বলকে পিটিয়ে পাঠাতে হয় গলফ কোর্সের নানান ঠিকানায়। তবে বল কোন ঠিকানায় গেলে কি হয়? তা জানি না।

ঐ খেলাটি নিয়ে না জানা সত্ত্বেও গলফকোর্স বিষয়ে বিশেষ কৌতূহল ও টান আছে আমার। তার কারণ শুনেছিলাম যা এই গলফ কোর্সেই নাকি এ পৃথিবীর বড় বড় কর্পোরেট সিদ্ধান্ত গুলো নিয়ে নেন, সমাজের বড় বড় চাইয়েরা গলফ খেলতে খেলতে। তার চেয়ে বড় কথা, আমার বিশেষ টান আছে গলফকোর্সের চোখ জুড়ানো টানা সবুজ ও সেটির ফিটফাট ক্লাবহাউসের প্রতি। ফলে ঢাকায় থাকতে, যখনই টি কে নিয়ে অফসাইট মিটিং করতে চাইতাম, কিন্তু থাকতো না যখন ঢাকার বাইরে যাবার অবকাশ, তখন দলবল নিয়ে চলে যেতাম ঢাকা ক্যান্টনম্যান্টের ভেতরের কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে। তাতে চোখের সামনের সবুজের আথে চারিদকের সবুজের মাঝে একদিকে সকলের মন ভাল হয়ে ওঠায় মিটিং হতো বেশ প্রোডক্টিভ, উপরি হিসেবে খাওয়া যেত ক্লাবহাউজের উমদা খাবার।

কিন্তু মরুভূমিতে আসার পর কেন যে আমি ভুলেও ভাবিনি যে এখানে গলফ কোর্স থাকতে পারে, তা জানি না। অতএব আমিন গলফকোর্সের কথা তুলতেই, ঐ বদ্ধমূল ধারনার বশবর্তী হয়ে বলেছিলাম, আরে মরুভূমিতে গলফকোর্স পাবে কোথায়? “অবশ্যই আছে। থাকবে না কেন? আরে টাকা আর ইচ্ছা থাকলে যেকোন জায়গাতেই গলফকোর্স পয়দা হয়। মিশরে থাকতে তো মরুমধ্যকার গলফ কোর্সেই খেলেছি নিয়মিত। আর এ তো হল টাকায় টাকাকার সৌদি।”

আমিনের এ উত্তরে কিছুটা বিব্রত হলেও সাথে সাথে তা মেনে নিয়ে গলফ কোসের্র খোঁজেনেমে পড়েছিলাম। সাথে মনে মনে ভাবছিলাম আরে তা পাওয়া গেলে, এখানকার টিমকে নিয়েও যাওয়া যাবে সেখানে অফসাইট মিটিঙে করতে।

অফসাইট মিটিংয়ে নিয়ে যাবো সবাইকে, এমন আলাপও করেছিলাম ইতোমধ্যে যখন টিমের সাথে, তাতে তারা ঘুরে ফিরে রিয়াদ শহরের নানান ফাইভ স্টার সেভেন স্টার হোটেলের নামই প্রস্তাব করেছিল, মনে ধরে নি যা আমার। এখন যদি গলফকোর্সের হদিস মিলে, তবে তো হবে এক্কাবারে সোনায় সোহাগা। যাবো চলে টিম নিয়ে ওখানেই মিটিং করতে।

সে চিন্তা করে, নানানজনকে জিজ্ঞেস করার পর, এমন কি সৌদি খলিলও যখন খোঁজ দিতে পারল না কোন গলফ কোর্সের, অবেশেষে সপ্তাহ দুয়েকেরও আগে পেয়েছিলাম একটার খবর ইন্টারনেটে সার্চ ইঞ্জিনের ঘাড়ে ভর করে। তারপর থেকে বেশ কয়েকবারই আমিন আমাকে নিয়ে ওখানে যাবে বলে, তুমুল ঘোষণা দিলেও, ঠিক কবে কখন যাবে তা আর বলছিল না। এদিকে আমি যেহেতু গলফের ব্যাপারে জানি কো অক্ষর গোমাংশ, তাই ছিলামও না সিরিয়াস, তা নিয়ে। এমতাবস্থায় গতকাল সকাল দশটার দিকে হঠাৎ আমিন ফোন করে গোঁ ধরেছিল ওখানে যাবার।

তো সে মোতাবেক, আরিফ এগারটার দিকে আমার ঘরদোর, গাড়ি পরিষ্কার করতে আসার পর তাঁকে কাজে লাগিয়ে, দিয়েছিলাম দু’জনে রওয়ানা দিরাব গলফ এন্ড কান্ট্রি ক্লাবের উদ্দেশ্যে, ফিরেছিলাম যেখান থেকে ঐ যে বললাম শেষ বিকেলে। আমাদের কমপাউন্ড থেকে প্রায় ৮০ কি মি দূরের এক্কেবারে সাক্ষাৎ মরুর বুকে গড়ে উঠা মানবনির্মিত মরুদ্যান তো নয় শুধু, পুরোপুরি সবুজ অমরাবতী ঐ গলফক্লাবে যেতে আসতে গিয়ে যে ৮/৯ ঘণ্টা কাটিয়েছিলাম এক সাথে দুজনে তাতে নিজে ঘরের কাজ কিছু জমে গেলেও, মারতে পেরেছিলাম নিজে এক ঢিলে বলা চলে দুই বা তিন না এক্কেবার চার চারটি পাখিই । যার প্রথমটি হল, ঐ যে বলেছিলাম না মরু মধ্যে এসে এতদিন থাকার পরও, সাক্ষাৎ পাইনি সাক্ষাৎ মরুর, অবশেষে হয়েছিল সে সাক্ষাৎ গতকাল। অবশ্য শহর পেরিয়ে হাইওয়ের দুপাশে টানা মরুভূমি শুরু হতেই যে মরু চোখে পড়েছিল প্রথম, ছিল তা শহুরে আবর্জনায় ভরা। নগরসভ্যতা থেকে উদাগারিত নানান বর্জ মানে পলিথিন, প্লাস্টিক থেকে শুরু করে দালান ভাঙার কারণে উৎপাদিত ইট বালু সিমেন্ট তো ছিলই , ছিল ভাঙ্গাচোড়া খাট পালং থেকে শুরু করে টয়লেটের ফেলে দেয়া কমোডও। ওসব দেখতে দেখতে ভাবছিলাম এব্যাপারে তো আমাদের সাথে তোমাদের তফাৎ নাই কোন হে বেরাদরনে এস্লাম, তা হলে আর আমাদের মিসকিন ডেকে, করো কেন হেলা?

তবে হাইওয়ে ছেড়ে, আমিন তার গাড়ির জিপিআরএসের পরামর্শমতো ডানের একটা এক্সিট ধরে বেশ কিছুটা এগুবার পর চোখে যখন পড়েছিল দু পাশে নানান উচ্চতার ঢেউ খেলানো অবারিত বালির সাগর, তুমুল হাহাকার করে গেয়ে উঠেছিলেন মনে তখন গুরু আজম খাঁন– “হৃদয় সাগর মরুভূমি, মৌসুমি, ছিলে তুমি / কোথায় হারিয়ে গেলে হায়!”

এরপর দ্বিতীয় যে পাখিটি মারা হয়েছিল সেই যাত্রায় তা হল , হ্যাঁ এই গতকালই প্রথম দেখলাম মরুমধ্যে মরুজাহাজ। তাও একটা দুইটা না, অনেকগুলো। দেখেছিলাম বলা চলে উটের ফার্মই একাধিক। আরো টের পেয়েছিলাম, চোখ ঝলাশানো কড়া মরু রোদে উটেরা যখন বালির সাগরে হেঁটে বেড়ায় খাবারের খোঁজে, সহজে চোখে ধরা দেয় না ওদের উপস্থিতি। কারণ তাদের গায়ের রং আর মরুর বালির রং মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । তে দেখে মনের ভেতরের প্রানিবিদটি বলে উঠেছিল মরুতে কী সিংহ আছে নাকি? না হয় উটেরা কেন নিয়েছে জীববিদ্যার ভাষায় প্রাণির যেই প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থাকে “মিমিক্রি” বলে, তা?

তৃতীয় মারা পাখিটি ছিল, দিরাব গলফ ক্লাবের ভারতীয় ম্যানেজারের সাথে আলাপ করে একদিন ঐখানে টিম নিয়ে যে একটা অফসাইট মিটিং করতে যাবো, তার ফয়সালা করে ফেলতে পেরেছিলাম। উপমহাদেশিয় হওয়ার কারণে কি না জানি না, কেরালার ভাবান কুমার আমাদের যথেষ্ট খাতির যত্ন করেছিলেন। নানান কথার মধ্যে তার যে কথাটি সবচেয়ে দাগ কেটেছিল তা হলো, মখমলের মতো তাজা সবুজ ঘাসের গলফ কোর্সের উপর সন্তর্পণে হাঁটতে হাঁটতে যখন জিজ্ঞেস করেছিলাম এরকম চমৎকার ঘাস কিভাবে জন্মাল এখানে? উত্তরে হিন্দি ও ইংরেজি মিলিয়ে ভাবান কুমার বলেছিলেন-“আরে আমাদের দেশগুলোতে একটা নবজাতকের পেছনে প্রতিদিন গড়ে যতো টাকা বরাদ্দ করতে পারি আমরা, আর যতোটা যত্ন জোটে নবজাতকের কপালে; তার চেয়ে কতগুন বেশী রিয়াল যে ঢালা হয় এখানকার প্রতিটি ঘাসের পেছনে, এখনো তা আমি ঠাহর করতে পারিনি ।আর যত্নআত্তির কথা তো বাদ থাক না হয় !”

সবশেষ মানে চতুর্থ যে পাখিটি মারা হয়েছিল গতকাল সে ছিল এক বিরাট পাখি! ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও যেমন ধানে ভানে, তেমনি সকাল এগারটা থেকে শুরু করে বিকেলে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টানা সময়টিতে , এবং আগেকার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমিন রাতের ডিনার যেহেতু করেছে আমারই এখানে, এই গোটা সময়টার ফাঁকে ফাঁকে অফিসের বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজের ব্যাপারে দুজনের চমৎকার মতানৈক্য হয়েছে! এমনিতেই এ পর্যন্ত যতো সি এফ ও র সাথে কাজ করেছি সে বিবেচনায়, আমিন হলো যাকে বলে এতোটাই বিজনেস ফোকাসড যে, মার্কেটিং হেড হিসাবে আমি তাকে এ প্লাস গ্রেড দেই অনায়াসে।

তারপরও দেখেছি যখনই অফিস টাইমে একদম সাদা দিলেও তার কাছে তার ডিপার্টমেন্ট বা তাদের কোন কাজ নিয়ে কথা বলতে গিয়েছি , কেন জানি সে বেশ নার্ভাস হয়ে জিজ্ঞেস করে-“এটা কী তুমি ফিল কে বলেছ? বা ফিল কি এটা বলেছে তোমাকে, আমাকে বলার জন্য? কিম্বা এটা কী মিশরি গ্যাং বলেছে তোমাকে?” নয়তো তুমুল ডিফেন্সিভ হয়ে বলতে শুরু করে তার সবকিছুই আছে ঠিকথাক! অথচ কাল ঐসবের চেয়ে ঢের ঢের শক্ত ও বিতর্কের বিষয়ে দুজনেই হতে পেরেছিলাম একমত সহজে।

আচ্ছা বাজে কয়টা এখন? এই ভেবে ফোনের পর্দায় চোখ যেতেই দেখি বাজে ১১ঃ৪৫। এর মানেতো হচ্ছে অচিরেই আমিন এসে হর্ন দেবে। তার গাড়িতে করেই তো যাই দুজনে জুম্মা পড়তে, তিন চার কিলোমিটার দূরের জামে মসজিদে। কপাল ভাল গত কালকের সবকিছু জাবর কাটতে কাটতে, এরই মধ্যে হাতের কাজ শেষ করার সাথে, গোসলও শেষ করে পাজামা পাঞ্জাবী পড়ে একদম তৈরি হয়ে আছি। অতএব চিন্তা নাই। এখানের জুম্মার জামাত দেশের চেয়ে আগে হয়, মানে ঠিক ১২ টায়। এই ভাবতে না ভাবতেই ঠিকই কানে এলো আমিনের গাড়ির হর্ন। যার মানে হচ্ছে যতোই সময় না দেখি না কেন, নিজমনে সবই অটোসেট হয়ে গেছে। অতএব দেরী না বেরিয়ে গেলাম ফ্লাট থেকে।

অতঃপর মসজিদে এসে বরাবরের মতো ভেতরের শেষদিকের এক লাইনে জায়গা নিয়ে দুজনে সুন্নত সহ জামাতে জুম্মার ফরজ নামাজ শেষ করে, মসজিদের ডানের বারান্দা দিয়ে নেমে পার্কিং লটের দিকে এগুতে গিয়ে দেখি বেশ ভালই জমেছে বাজার ওখানে। খেজুর, তরমুজ, টুপি, তসবিহ, জায়নামাজ , এমন কি মোবাইল আর কম্পিউটারের খুচরা যন্ত্রাংশের ধুন্দুমার কেনা বেচা চলছে। এর আগে মসজিদের মূল গেট দিয়ে আসা যাওয়া করার চোখে পড়েনি এদিকটা।

হকারেরা নানান স্বরে আর সুরে ডাকছে জুম্মা পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়া সম্ভাব্য ক্রেতাদের। তাদের কাউকে কাউকে দেখে দেশীভাইও মনে হল। কিন্তু সবচেয়ে বেশী যে ব্যাপারটা চমকে দিয়েছে তা হলো কানে আসছে ঐ যে ডান দিকের মাঝখানটায় এক দেশী ভাই হাঁকছে বাংলায় ক্রমাগত– “খামছা ইশারায় ! খামছা ইশারায় ! খামছা ইশারায়!”

ঘটনা কী? “কী ব্যাপার সেলিম? কিছু কিনবে নাকি? তোমার আমার দেশী ভাইরা আছে কিন্তু? তা কী কিনতে চাও?“

আমিনের এ কথায় সম্বিৎ ফিরে বলি না ভাবছি ও কি বলছে? “কে কি বলছে ? ডাকছে তো সবাই ?”

না মানে ঐ যে, খামছা ইশারায় লোকটা বলছে, তা ভাবছি। “হা হা হা। বুঝলা না, ও যা বিক্রি করছে তার দাম বলছে। খামছা মানে পাঁচ রিয়াল, আশ্রা মানে দশ রিয়াল? ”

সাথে সাথেই মনে হল, আরে তাইতো, এ তো শিখেছিই এ ক’দিনে। তাহলে ভুল হল কেন? নাহ ঠিকই আছে তো, ঐ লোক তো ‘খামছা, ইশ্রাই” বলছে। আসলে আমার বাংলা মগজের ভেল্কিতেই কানে ঢোকার সময় ওটা “খামছা ইশারায়” হয়ে গেছে!

লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণ সাহিত্যিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধজীবনকে সঠিক পথে ব্যবহার করা
পরবর্তী নিবন্ধস্মৃতিতে অধ্যাপক লোকমান হাকিম : বাবার অনুপস্থিতিতে তাঁর উপস্থিতি