দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকি সকলে

তাওহীদুল ইসলাম নূরী | শনিবার , ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে ৫৪ বছরে পা রাখলাম আমরা। ৫৩ বছরের এই সময়ে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে গৌরবান্বিত অংশগ্রহণ, নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি, ছিটমহল এবং সমুদ্রসীমা বিজয়, ক্রীড়া জগতে অনন্য অসাধারণ কৃতিত্বসহ বাংলাদেশ অর্জন করেছে বিশ্বকে চমকে দেয়ার মত অনেক কিছু। কিন্তু, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পার হলেও দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, এখনও পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে হিমশিম খাওয়া কখনো কাম্য নয়। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের শিকারও হতে হয়েছিল স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশকে।

দেশ স্বাধীনের আগে যে সকল দাবি দাওয়া নিয়ে ছাত্রজনতা মাঠে নামত আজও আমরা তার অনেক দাবিতে রাজপথ রঞ্জিত হতে দেখি। শুধুমাত্র চলতি বছরের জুলাই বিপ্লবেই রাজপথে দেড় হাজারের বেশি ছাত্রজনতার প্রাণ ঝরেছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে শত শত আন্দোলনকারী, লাখ লাখ মানুষ নির্যাতিত হয়েছে তাদের যৌক্তিক আন্দোলন করতে গিয়ে। তাই, নব্বই কিংবা চব্বিশের স্বৈরশাসকের মত ভবিষ্যতে কোনো শাসক যেন স্বৈরাচার হয়ে উঠতে না পারে সে দিকে আমাদের সার্বক্ষণিক সজাগ, সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ, পৃথিবীর কোনো স্বৈরশাসক একদিকে যেমন জনগণের কল্যাণের কোনো তোয়াক্কা করে না, ঠিক তেমনি তারা বিদেশি প্রভুদের মদদ ব্যথিত টিকে থাকতেও পারে না। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলেই কিছু দিন পর পর সীমান্তের কাঁটাতারে লাশ ঝুলতে কিংবা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

আজও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেমে নেই। দেশের মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করুক এটা ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না। তারা ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত এই বাংলাদেশকে একটি তাবেদার রাষ্ট্র হিসেবেই সবসময় ফেলে রাখতে চায়। সেজন্য, দেশের বাইরে কিংবা এদেশের মাটিতে বসে যারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন তাদের ব্যাপারে দেশের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে আমাদেরকে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে হবে। কারণ তাদেরই পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে কখনো ধর্ম, কখনো রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে পুঁজি করে নিজেদের স্বার্থের জন্য আমরা দেশের স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব পর্যন্ত বিকিয়ে দিতে দ্বিধান্বিত হই না। তাইতো, বিজয়ের ৫৪ তম বসন্তে পদার্পণের এই মুহূর্তে আজ সময় এসেছে বুঝার এবং চিন্তাভাবনার। আমরা যে যে ধর্মেরই অনুসারী হই না কেন সকল ধর্মের এক নাম মনুষ্যত্ব এবং যে যেই রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন করি না কেন সকল রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশ হিসেবে ধারণ করে, অর্থাৎ আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক কাতারে এসে এই সুজলাসুফলা, শস্যশ্যামলায় ঘেরা ৫৬ হাজার বর্গমাইলের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ নিতে হবে বিজয়ের ৫৪ তম বর্ষে পা রাখার এই মাহেন্দ্রক্ষণে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিজয়-বারতা
পরবর্তী নিবন্ধপ্রিয় স্বাধীনতা