সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে দেশ–বিদেশে থাকা ৫৮০টি বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, জমিসহ স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া তার নামে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটি ব্যাংকের হিসাব ও বাংলাদেশের একটি ব্যাংকের হিসাব আদালত অবরুদ্ধ রাখতে বলেছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। খবর বিডিনিউজের।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের মালিকানাধীন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার জন্য গত বুধবার এই আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক রাম প্রসাদ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
জব্দ হওয়া সম্পত্তির মধ্যে চট্টগ্রামের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। বিদেশের স্থাবর সম্পদ জব্দের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ল্যান্ড ডিপার্টমেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট রেজিস্ট্রার, এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের ক্ষেত্রে দুবাই ইসলামিক ব্যাংক, ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংক এবং বাংলাদেশের জনতা ব্যাংকের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টিসহ অন্যান্য দেশেও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ রয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের। ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এসব সম্পদ কেনা হয়েছে। ওই সময় তিনি বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
চট্টগ্রামের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ২০১২ সালে তার বাবার আসন থেকে প্রথমবার সংসদে যান। তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তার স্ত্রী রুকমিলা জামান গত ২০১৭ হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই ব্যাংক থেকে তাদের নামে–বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের একটি অভিযোগও তদন্ত করছে দুদক।
আদালতে দুদকের দেওয়া আবেদনে বলা হয়, সাইফুজ্জামান বা তার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি বাংলাদেশে তাদের আয়কর নথিতে বলেননি। বিদেশে সম্পদ কেনার জন্য নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিও তিনি নেননি। নির্বাচনি হলফনামায় বিদেশে সম্পদ অর্জনের কোনো তথ্য দেননি সাইফুজ্জামান।