অ্যাস্ট্রাজেনেকার ও সিনোফার্মের পর তৃতীয় টিকা হিসেবে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে ফাইজারের কোভিড-১৯ টিকা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গঠিত টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা সোমবার রাতে এসে পৌঁছায় ঢাকায়। বিডিনিউজ
রাত সোয়া ১১টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এই টিকা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে।
টিকা নিতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
ডা. শামসুল হক বলেন, “১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এসেছে। এগুলো আমাদের ইপিআই-এর নির্ধারিত স্টোরেজে নিয়ে রাখা হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের তৈরি এই টিকা ইতোমধ্যে দেশে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের টিকা সঙ্কটের মধ্যে গত ১৯ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ফাইজারের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা আসার খবর দিয়েছিলেন।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে এখন এই টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাদের জরুরি ব্যবহার্য টিকার তালিকায় ফাইজারের ভ্যাকসিনকে অন্তর্ভুক্ত করে।
বাংলাদেশে গত ফেব্রুয়ারিতে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড দিয়ে।
সাড়ে ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনতে সেরাম বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেও ৭০ লাখ ডোজ দেওয়ার পর ভারত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আর টিকা আসেনি।
এরপর নতুন উৎস হিসেবে চীনের সিনোফার্মের তৈরি টিকা কিনছে বাংলাদেশ। কথা চলছে রাশিয়ার টিকা কেনার বিষয়েও।
ফাইজারের টিকা বিনামূল্যেই পেয়েছে বাংলাদেশ। কোভিশিল্ড বা সিনোফার্মের তৈরি টিকার মতো ফাইজারের টিকাও নিতে হবে দুই ডোজ করে। প্রথম ডোজ দেওয়ার ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর দিতে হবে দ্বিতীয় ডোজ।
১২ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ওপর ফাইজারের টিকা প্রয়োগ করা যাবে। চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়ালে এ টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে উৎপাদকদের ভাষ্য।
পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তুলনামূলকভাবে বেশি কার্যকারিতা দেখালেও ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ ও সরবরাহের কাজটি কোভিশিল্ডের মতো সহজ নয়।
কোভিশিল্ড যেখানে সাধারণ রেফ্রিজারেটরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা সম্ভব সেখানে ফাইজারের টিকা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে।