দেশে টেকসই উন্নয়ন কাঠামো বিনির্মাণে প্রকৌশলীদের নেতৃত্ব অপরিহার্য

আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংবাদ সম্মেলনে মনজারে খোরশেদ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৭ মে, ২০২৫ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’র ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে দুদিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথম দিনে গতকাল দুপুরে কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম আইইবি’র বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, পরিকল্পনা ও প্রকৌশলীদের দাবিসমূহ তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, বর্তমানে মুক্ত পরিবেশে প্রকৌশলীরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। কিন্তু আত্মনির্ভরতা অর্জনের লক্ষে বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনয়ন বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি প্রায় সকল প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানে অপ্রকৌশলীরা নেতৃত্ব প্রদান করছেন।

ফলে, উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা ও সময়ক্ষেপন ঘটে। বিলম্বিত ও আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের কারণে দেশের মূল্যবান অর্থের অপচয় ঘটছে। এর ফলে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। দেশের প্রাইভেট সেক্টরগুলোকে বিশেষজ্ঞ আনয়নের নামে বিদেশ নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে। অথচ এদেশে অনেক মেধাবী প্রকৌশলী রয়েছেন, যাদের যথার্থ মূল্যায়ন করা হয়নি।

কেন্দ্রের সম্পাদক প্রকৌশলী খান মো. আমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রের ভাইসচেয়ারম্যান (একা. এন্ড এইচআরডি) প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন ও ভাইসচেয়ারম্যান (এডমিন প্রফেশ. এন্ড এসডব্লিউ) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে কেন্দ্রের প্রাক্তন ভাইসচেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ এস এম নাসিরুদ্দিন চৌধুরী পিইঞ্জ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি, কেন্দ্রের সেন্ট্রাল কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী মো. নুরুল আলম, প্রকৌশলী মো. দুলাল হোসেন, ইআরসির নির্বাহী ভাইসচেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর, কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী মেজবাহউদ্দীন খালেদ, প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম, প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, জিপিএইচ ইস্পাতের এজিএম মো. নাজিম উদ্দিন রাসেল উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম বলেন, গত পনের বছর প্রকৌশলীরা একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে কাজ করতে গিয়ে চরমভাবে নিস্পেষিত হয়েছেন। বিগত সময়ে আমরা দেখেছি এই প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে দলীয় রাজনীতির যাঁতাকলে পিষ্ঠ করা হয়েছে। রাষ্ট্রশক্তির সহায়তায় পেশীশক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলেছে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য। শতশত যোগ্য ও মেধাবী প্রকৌশলীর পদোন্নতি এবং পদায়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে ফ্যাসিবাদী শক্তির সহযোগীরা।

তিনি প্রকৌশলী সমাজের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে– () প্রকৌশলী সংস্থাসমূহের শীর্ষ পদগুলোতে প্রকৌশলী পদায়ন করতে হবে। () প্রকৌশলীদের পদোন্নতি ও পদায়ন নিশ্চিতকরণ। () বিভিন্ন প্রকৌশল সংস্থাসমূহকে বিসিএস ক্যাডারভুক্তকরণ। () বেসরকারী প্রকৌশলীদের জন্য চাকরি বিধি প্রণয়ন করতে হবে। () বিভিন্ন প্রকল্পে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর হিসেবে প্রকৌশলীদের নিয়োগ। () বিশেষ সেবা আমদানীর নামে বিদেশি কারিগর ও প্রকৌশলীদেরকে বাংলাদেশে নিয়োগ বন্ধ করে দেশীয় মেধাবী প্রকৌশলীদেরকে নিয়োগ দেয়া।

তিনি দুদিনব্যাপী ইঞ্জিনিয়ার্স ডে কর্মসূচি তুলে ধরেন। এসব কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নে স্পন্সর হিসেবে সহযোগিতা করার জন্য জিপিএইচ ইস্পাত ও বিএসআরএম এর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেসকালে জাতীয় পতাকা ও আইইবি’র পতাকা উত্তোলন, শপথ বাক্য পাঠ ও বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং সন্ধ্যায় জুলাইআগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সহায়তা, অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া২০২৫ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ, প্রকৌশল পেশা ও সমাজ সেবায় কৃতিত্ব অবদান রাখায় প্রকৌশলীদের বিশেষ সম্মাননা, ভিডিও প্রেজেন্টেশন, স্মৃতিচারণ, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও র‌্যাফল ড্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতরুণদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হলে দেশে কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়
পরবর্তী নিবন্ধদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড রেমিটেন্স