মাসের মাঝামাঝিতেই এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা আগের পুরো মাসের হিসাবকে ছাড়িয়ে গেছে; গত একদিনে আরও ১৩ জনসহ আগস্টের প্রথম ১৮ দিনেই মৃত্যু হয়েছে ২১৫ জনের। দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার মধ্যে গত জুলাইয়ে ২০৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সবশেষ মৃত্যুর এ তথ্যসহ এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪৬৬ জনের মারা যাওয়ার তথ্য দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা এখন পর্যন্ত এক বছরে সর্বোচ্চ। আগের দিন হাসপাতালে রোগী ভর্তির হিসাব ছাড়িয়ে গিয়েছিল জুলাইয়ের পুরো মাসকে। এত রোগী এ বছর আর কোনো মাসে দেখা যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত গত এক দিনের হিসাবে আরও ১৯৮৩ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ৮৬০ জনে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন ঢাকার এবং বাকিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নতুন করে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকায় ৭৩৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১২৪৫ জন হাসপাতালে এসেছেন।
শনিবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭ হাজার ৮৯৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩৬৯১ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪২০৪ জন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে যেখানে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আর আগস্টের ১৯ দিনেই তা বেড়ে এক লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। মাসের হিসাবে, জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন, জুন ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জানুয়ারিতে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ২ জন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।
এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।