দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান, ৫০ বছর পর দেখা হবে

আওয়ামী লীগকে খসরু

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১২ মার্চ, ২০২৩ at ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান। ৫০ বছর পর আবার দেখা হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, বিচারের আওতায় আসতে হবে। কেউ ছাড় পাবে না। ওয়ান ইলেভেনসহ বিগত সময়ে তাদের যেসব মামলা তারা (আওয়ামী লীগ) খারিজ করে দিয়েছে আর গত ১৪ বছরে গুমখুনের ঘটনা সবগুলো মামলা যদি একত্রিত করা হয় তাহলে সবাইকে জেলে যেতে হবে। তখন আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে একটি আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী খুঁজে পাবে না। তাই তাদের বলব, বুঝিয়া করিও কাজ, বুঝিয়া ভাবিও না।

গতকাল সকালে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরের নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মদ সড়কে কেন্দ্রঘোষিত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।

আমীর খসরু বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে বিস্ফোরণগুলো হচ্ছে এগুলোকেও তারা রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। একটা সরকারের আমলে যখন এগুলো ঘটে তখন ধরে নিতে হবে সে সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। তাই তারা রাজনীতি করছে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, এরশাদের পতনের সময় মন্দিরে মন্দিরে আক্রমণ হয়েছিল। অর্থাৎ স্বৈরাচারদের যখন পতনের অবস্থানে চলে যায় তারা তখন এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে। তারা আরো করবে। কারণ আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতি নেই। এ দলটি রাজনৈতিকভাবে দৈন্যদশায় পড়ে গেছে।

খসরু বলেন, পরিষ্কারভাবে জনগণের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, অতি সত্বর সরকারের বিদায় দেখতে চায় তারা। বাংলাদেশের মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। রাস্তাঘাটে, মাঠে, সমাবেশে প্রত্যেক জায়গায় বিএনপির কাছে জনগণের একটাই প্রশ্ন, সরকারকে কবে বিদায় দিবেন? আমরা (জনগণ) নিশ্বাস ফেলতে পারছি না। আরো কিছুদিন এ অবৈধ সরকার যদি থাকে আমরা কেউ বাঁচব না। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় প্রতিটি দিন অতিবাহিত করছি, আমাদের মুক্তি দিন। দেশকে মুক্ত করেন। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ম্যাসেজ।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যারা ভোট চুরিতে জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচনের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। তারা আইন করেছে এ নির্বাচনে ভোট চুরির সাথে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আসবে। এটা তো বাইরে থেকে আসবে, ভেতর থেকে তাদের বিচার হবে। তিনি বলেন, সারা বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দিকে। দৃষ্টি হচ্ছে মানবাধিকারের দিকে, দৃষ্টি হচ্ছে এদেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচারের দিকে, দৃষ্টি হচ্ছে বাক স্বাধীনতার পক্ষে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তার দিকে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে আছে। আর এক শতাংশের নিচের মানুষ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এই লক্ষ কোটি টাকা লোপাট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে। এ টাকা ফেরত দিতে হবে।

শাহাদাত হোসেন বলেন, চরম দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। অবৈধ সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসনের মাধ্যমে জনগণের অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। সরকারের দুর্নীতি থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণ। হাজিদের বিমান ভাড়া প্রায় দুই লক্ষ টাকা, ওমরাতে এক লক্ষ টাকা, পর্যটক ভিসায় ৬০ হাজার টাকা নিচ্ছে। ধর্মীয় বিষয় নিয়ে হাজিদের সাথে সরকার চরম বৈষম্য সৃষ্টি করছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ধর্মীয় বিষয়ে এবং হজের ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। আমাদের দেশে ভর্তুকি দেওয়া তো দূরের কথা, বরং সিন্ডিকেট করে হজের টাকা বৃদ্ধি করেছে। সরকার ধর্মীয় বিষয় নিয়েও চরম দুর্নীতি করছে।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আওয়ামী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। বিএনপি তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বাস্তবায়ন করেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দিবে না।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, মো. শাহ আলম, আবদুল মান্নান, এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মুফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মো. খান, জাহিদুল করিম কচি, ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, অধ্যাপক নসরুল কদির, ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম জানে আলম, মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মোহাম্মদ শাহেদ, এইচ এম রাশেদ খান, নুরুল্লাহ বাহার, মনোয়ারা বেগম মনি, জেলী চৌধুরী প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে এবার তুলার গুদামে ভয়াবহ আগুন
পরবর্তী নিবন্ধকোমরে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি, যুবক গ্রেপ্তার