দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপরাজনীতি পরিত্যাজ্য

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

এটি সর্বজনবিদিত যে, বিশ্বের প্রত্যেক দেশে অন্যান্য সকল দেশের দূতাবাস প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়নবন্ধুত্ববাণিজ্যশিক্ষাসংস্কৃতি বিনিময় পন্থায় সহযোগিতার অভিনব মেলবন্ধন স্থাপনে অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রকৃত অর্থে নির্দিষ্ট কোন ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে স্বাধীনসার্বভৌম সত্তার আবরণে গোষ্ঠীবদ্ধ জনগণের সার্বিক কল্যাণই মানবিকজাগতিক অনুষঙ্গগুলো অত্যুজ্জ্বল করে।

পাশাপাশি একজন কূটনীতিক একটি দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিপরীতে নিজ দেশের অর্থনীতির প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। কূটনীতির প্রাথমিক যুগেও বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের অন্য দেশে পাঠানো হতো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই। এভাবেই মূলত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্কের সূত্রপাত। কূটনীতিকরা একটি রাষ্ট্রের প্রতীকী প্রতিনিধি। তারা সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান এবং কার্যাবলীর পাশাপাশি বেসরকারিসামাজিকসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র ও সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিদেশী রাষ্ট্রে তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।

বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে আলোচনা বা সমঝোতা পরিচালনা করা কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বহুপাক্ষিকব্যক্তিগতরাজনৈতিকশীর্ষ সম্মেলন কূটনীতি এবং বিশ্ব নেতাশীর্ষ রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগসংযোগআলোচনা পরিচালনায় কূটনীতিকদের অনবদ্য ভূমিকা অনস্বীকার্য।

কূটনীতিকরা আয়োজক দেশের রাজনৈতিকঅর্থনৈতিকসামরিকসামাজিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ এবং কূটনীতিকের কাজের ফলাফলগুলোর সঠিক প্রতিবেদন তার নিজ দেশে প্রেরণ করাও তাদের দায়িত্ব। কূটনীতি সর্বদা জাতি এবং বিদেশে বসবাসকারী জনগণের স্বার্থ রক্ষা ও প্রচার করেন এবং স্বার্থ রক্ষা হল ‘কূটনীতি অনুশীলনের ভিত্তি’। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই কূটনীতিক শিষ্টাচার বিদ্যমান। ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে সর্বজনীন কিছু নিয়মনীতি মেনেই বিভিন্ন দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কোন কোন ক্ষেত্রে কতিপয় উন্নতপ্রভাবশালী দেশের এর ব্যর্তয় ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত।

সকল নিয়মকানুনের জলাঞ্জলি দিয়ে এসব দেশের কূটনীতিকরা ব্যক্তিদেশের স্বার্থ হাসিলে বা তাদের অনুগতআজ্ঞাবহ সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নানামুখী কদর্য অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। অনর্থক অরাজকতা সৃষ্টি নয় বরং উর্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে আধুনিক চিন্তাচেতনার প্রসার ঘটিয়ে প্রগতিঅগ্রগতির ধারাকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যেই দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম সীমিত থাকা উচিত। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অহেতুক অনধিকার চর্চায় ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে জনগণের মূল্যবোধে আঘাত বা বিভাজনের কুৎসিত প্রচেষ্টা যেকোনো সভ্য মানুষের কাছে অপ্রত্যাশিত।

সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কর্মকাণ্ড এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নানাবিধ কর্মযজ্ঞে সচেতন মহলসহ দেশের আপামর জনগণ যারপরনাই উদ্বিগ্নউৎকণ্ঠিত কোন এক উন্নত রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পোস্ট করা কতটুকু বিবেকপ্রসূত তা ভেবে দেখার দাবি রাখে। অরাজক পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে কথিত বিদেশিদের অভিশপ্ত পদচারণায় দেশের আপামর জনগণ প্রকৃত অর্থেই বীতশ্রদ্ধ।

গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ সরকার এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংবাদ প্রচার হতেই পারে, কিন্তু বিষয়টিকে কোনো দেশের দূতাবাস যদি ফেসবুকের মতো জায়গায় তুলে ধরে মন্তব্য করে; তখন তা কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থি হয়। বিশ্লেষকদের মতানুসারে, দেশটির দূতাবাসের এমন আচরণ অনেকটা রাজনৈতিক সংগঠনের মতো। সব দেশের সঙ্গে রাষ্ট্রটি সমান আচরণ করে না বলেও বিশ্লেষকদের দাবী।

বাংলাদেশ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিষয়ে ধনী দেশগুলোর এমন আচরণ মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। ফিলিস্তিনের উপর ইসরায়েলের প্রতিনিয়ত হামলা, লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসাসহ বহুলোককে হত্যা ও বাড়িঘর জ্বালিয়েপুড়িয়ে দেওয়ার চিত্র এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যানির্যাতনলুটপাটের দৃশ্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজেদের ওয়েবসাইটে দিয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশেষজ্ঞগণ।

এছাড়াও বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ও মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত উন্নতউন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের প্রকাশ্যে নানামুখী কার্যকলাপে জাতি অতিশয় আশঙ্কিত। আগামী নির্বাচনে তারা সব দলের অংশগ্রহণের পাশাপাশি দাবি তুলেছে স্বচ্ছ নির্বাচনের।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এটিকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিতঅনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন। তাদের মতে প্রত্যেকটি দেশেরই কিছু গোপনীয়তার বিষয় থাকে তা কূটনৈতিক মহলে যাওয়া উচিত নয়। বিদেশি কূটনীতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশন দ্বারা সীমাবদ্ধ বিধায় তাদের এর মধ্যে থাকা একান্ত বাঞ্চনীয়। বৈশ্বিক মহামন্দার ক্রান্তিকালে অদম্য অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের বিষয়ে বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতিম বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের দৌঁড়ঝাঁপ জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জিত করে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা যেন রাজনীতিবিদদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

উপরন্তু দেশের তথাকথিত কিছু রাজনৈতিক দলনেতারা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়ে তাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে প্রবল জনশ্রুতি রয়েছে। এতে কেউ লাভবান না হলেও; সামগ্রিকভাবে দেশজাতি এবং দেশের স্বাধীন স্বত্তাসার্বভৌমত্বআত্মমর্যাদাবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের উন্মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দেশের বন্ধুর প্রয়োজন থাকলেও কর্তৃত্ববাদী বন্ধুর প্রয়োজনীয়তা কোনভাবে কাম্য হতে পারে না।

এটি দেশের প্রতিটি রাজনীতিবিদ, সুশীলনাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের বোধদয়ে জাগ্রত না হলে লাখো শহীদের প্রাণবিসর্জনে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের জনগণের অধিকারকে ভূলুন্ঠিত করার শামিল।

আমাদের সকলের জানা, কূটনীতিকদের আচরণগত বিষয় নিয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে ১৯৬১ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় হওয়া চুক্তিটি ‘ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপলোমেটিক রিলেশন১৯৬১’ হিসেবে পরিচিত। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কিছু নিয়মনীতি প্রণয়ন এবং সেগুলো অনুসরনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।

উক্ত কনভেনশনে উল্লেখিত নিয়মনীতি অনুযায়ী জাতিসংঘের সদস্য যে কোন দেশে অন্য কোন দেশের কূটনীতিক মিশন বা প্রতিনিধি অবস্থান করবে এবং এই চুক্তির মাধ্যমে স্বাগতিক দেশ অন্য দেশের কূটনীতিকদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধানিরাপত্তাবাসস্থানআইন প্রয়োগসহ নানা বিষয় নিশ্চিত করে থাকে।

কূটনীতিকদের সকল কর্মকাণ্ড স্বাগতিক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অথবা ঐ দেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। মোট ৫৩টি আর্টিকেলে সন্নিবেশিত চুক্তিটির ৪১ আর্টিকেলে উল্লেখ রয়েছে; যেসব ব্যক্তি অন্য কোন দেশে কূটনীতিকের মর্যাদা ও সুবিধা ভোগ করেন তারা ঐ দেশের আইন ও নীতি মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন। এছাড়া তারা ঐ দেশের অভ্যন্তরীণ কোন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।

কূটনীতিকদের স্বাগতিক দেশের রাজনীতিতে বা দ্বন্দ্বে নাক না গলানোর বিধান সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আইনের বিশ্ববিখ্যাত লেখক অধ্যাপক ওপেনহেইম মতানুসারে, এই বিষয়ে বিতর্কের কোন অবকাশ নেই। এছাড়াও জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রই জাতিসংঘ সনদের প্রতিটি বিধান মানতে বাধ্য বিধায় স্ব স্ব দেশের রাষ্ট্রদূতদের তার অনুশীলন অত্যাবশ্যক। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে কর্মরত কয়েকজন রাষ্ট্রদূত প্রত্যক্ষভাবে আমাদের দেশের রাজনীতিতে নাক গলিয়ে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সদস্যদের সাথে গোপন বৈঠকরাজনৈতিক সভায় বক্তৃতা দিয়ে মতামত প্রকাশে কূটনীতি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন লংঘন এবং জাতিসংঘ সনদের ১() অনুচ্ছেদ বিরোধী কাজ করে তাদের কূটনৈতিক মর্যাদার অপব্যবহার করছেন।

১০ এপ্রিল ২০২৩ জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে ১৪৭ বিধির সাধারণ প্রস্তাব ও সমাপনী বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাধর একটি দেশের ব্যতিক্রম ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, দেশটি চাইলে যে কোনো দেশের ক্ষমতা ওলটাতে পাল্টাতে পারে। গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে তারা এখানে এমন একটা সরকার আনতে চাচ্ছে; যাতে করে গণতন্ত্রের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না আর এক্ষেত্রে আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী সামান্য কিছু পয়সার লোভে এদের তাঁবেদারিপদলেহন করে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো তো আরও বেশি কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আরব স্প্রিং (আরব বসন্ত), ডেমোক্রেসি বলে বলে ঘটনা ঘটাতে ঘটাতে এখন নিজেরা নিজেদের মধ্যে একটা প্যাঁচে পড়ে গেছে।’ সেই ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তারা এখন আমাদের গণতন্ত্রের জ্ঞান দিচ্ছে। কথায় কথায় ডেমোক্রেসি আর হিউম্যান রাইটসের কথা বলছে। সেসব দেশে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রভাবশালী রাজনীতিক প্রতিনিধিদের চরম অপদস্থ হওয়ার নজির রয়েছে।’

অদম্য অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়া বিশ্বস্বীকৃত বাংলাদেশকে প্রাগ্রসর রাষ্ট্রে রূপান্তরে উল্লেখ্য কূট প্ররোচনা বিশেষ প্রতিবন্ধকতা তৈরির মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির ঘৃণ্য অপকৌশল। বর্তমান বৈশ্বিক যুদ্ধংদেহী মনোভাবের পরিবর্তে বিশ্বের সকল বিবেকবান মানুষ অস্ত্র উৎপাদনবাণিজ্যিকীকরণসরবরাহ প্রতিরোধে সোচ্চার হলেও শিশুকিশোরনারীপুরুষ নির্বিশেষে মানবধরিত্রী বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় তাদের ন্যূনতম বোধোদয় হচ্ছে না।

পক্ষান্তরে পুরোবিশ্বকে জিম্মি করে খাদ্যজ্বালানিসংশ্লিষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের নতুন নতুন চক্রান্তষড়যন্ত্র থেকে বাংলাদেশ যেন মুক্ত হতে পারছে না। নিজেদের কুকীর্তি আড়াল করার প্রয়াসে পরিচালিত সকল অশুভঅবৈধ কর্মযজ্ঞ বিশ্ববিবেককে দারুণভাবে যন্ত্রণাদগ্ধ করছে। কুৎসিত পন্থায় দেশকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে না দিয়ে সকল প্রকার সন্ত্রাসজঙ্গিত্বসহিংসতানিষ্ঠুরতা সংহারে জনগণের সামগ্রিক মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে সার্বিক শান্তিকল্যাণ প্রতিষ্ঠায় বৈদেশিক দূতাবাসগুলো তাদের যৌক্তিক পরিচয় সম্প্রসারিত করুকএটুকুই নিরন্তর প্রত্যাশিত।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধনারীমুক্তির নতুন দুয়ার