টাইমস হায়ার এডুকেশন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ইমপ্যাক্ট আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে সারাদেশের মধ্যে পঞ্চম, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় এবং আন্তর্জাতিক তালিকায় ১০০১তম হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড, গবেষণা ও সফলতার ভিত্তিতে প্রতিবছর টাইমস এবং কিউএস প্রকাশ করে দুটি আন্তর্জাতিক র্যাংকিং। গতকাল বুধবার সকালে ২০২৪ সালের টাইমস হায়ার এডুকেশন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ইমপ্যাক্ট র্যাংকিং প্রকাশিত হয়। তালিকায় ৩০১ থেকে ৩৫০ এর মধ্যে জায়গা করে নিয়ে যৌথভাবে দেশসেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।
গতবার তালিকায় ১৮৬তম স্থানে অবস্থান করে দেশের সেরা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর ১৯২তম স্থান অর্জন করে দ্বিতীয় স্থানে ছিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। এবার র্যাঙ্কিংয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়েছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় ৩৫১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৪০১ থেকে ৫০০ এর মধ্যে আছে।
এসডিজি–১৪ তথা সমুদ্র বিষয়ক কর্মকাণ্ডে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান বিশ্বের সেরা ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে। সমুদ্র নীতি প্রণয়ন, সাগর বিষয়ক গবেষণা, প্রান্তিক মাছ চাষিদের জন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং উপকূল রক্ষায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্সেস অনুষদ ও হালদা গবেষণাগারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এ অবস্থানের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
পরিবেশ রক্ষায় অবদানের জন্য এসডিজি–১৫ অর্জনে সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। চবির গাছ লাগানো, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, বিশ্ববিদ্যালয়ে অরণ্য ও সবুজ স্থানের পরিমাণ, পরিবেশ নিয়ে গবেষণা, দূষণ রোধে কার্যকর উপায় নিয়ে কর্মকাণ্ড, পরিবেশ নীতিতে অবদান ও আন্তর্জাতিক যৌথ গবেষণাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে এ ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান এবং মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা ও কর্মকাণ্ড এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গবেষণা ও কর্মকাণ্ডের জন্য এসডিজি–৩ এ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৮০১–১০০০ এর মধ্যে রয়েছে। এছাড়া রোগ নিয়ে গবেষণা (ডায়বেটিস, ক্যান্সার, জেনেটিক রোগ, অটিজম), সংক্রামক ব্যাধি (কোভিড, ডেঙ্গু, নিউমোনিয়া), এন্টিবায়োটিক অকার্যকারিতা, মাতৃ স্বাস্থ্য, শিশু স্বাস্থ্য, রোহিঙ্গা ও অভিবাসীদের স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য অর্থনীতি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ, প্রাণরসায়ন, মাইক্রোবায়োলজি ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের কর্মকাণ্ড এ ক্ষেত্রে সমাদৃত হয়েছে।
বৈষম্য হ্রাসে অবদানে জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এসডিজি–১০ এ সেরা ৮০০–১০০০ এর মধ্যে রয়েছে। নারী পুরুষ শিক্ষার্থীদের সুষম অনুপাত, নারী শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান ও স্বীকৃতি, নারী শিক্ষকদের গবেষণায় বিশেষ ভূমিকা, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ভবন নকশা, দারিদ্র্য হ্রাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাংকিংয়ে অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করছি কিভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ব র্যাংকিংয়ে নিয়ে আসা যায়। গত এক মাস আমাদের যা কিছু আছে, সবটুকু দিয়েই চেষ্টা করতে থাকলাম। এরমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারদের নিয়ে অনলাইন ক্লাসেরও ব্যবস্থা করেছি। সবমিলিয়ে অবশেষে একটি ভালো রেজাল্ট পেলাম আমরা।