“দেশের গাড়ির দিকে তাকালে গরীব-গরীব লাগে”

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের

আজাদী অনলাইন | শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২৯ অপরাহ্ণ

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “আপনারা আমাকে বলুন, ঢাকা শহরের যে বাসগুলো…এগুলোর দিকে তাকানো যায়? শেখ হাসিনা দেশকে কোথায় নিয়ে গেছেন, সারাবিশ্বের বিস্ময়, সেই দেশের গাড়ির দিকে তাকালে গরীব-গরীব লাগে। রঙও তো দিতে পারেন।”

বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি নির্মূলে আরও কার্যকর পদক্ষেপ চেয়ে শনিবার জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

দুর্নীতিবাজদের কারণে সরকারের উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “এদেশে কিছু লোক আছে, তাদের আর কত টাকা, কত সম্পদ দরকার? তারা যদি নেতা হন, সেই নেতা বাংলাদেশে দরকার নাই। শেখ হাসিনার মতো সৎ নেতা চাই।”

নিজের অধীনস্ত দপ্তরে দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাগত জানান তিনি।

সড়ক পরিবহনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)কে হানা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, “সরকারের টাকা জনগণের ট্যাক্সের টাকা…এই টাকা যায় কোথায়? আমি আবারও বলছি, সচিব মহোদয়কে বলছি, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। কোথাও দুর্নীতিবাজ থাকতে পারবে না। এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করুক। যেখানে দুর্নীতি হওয়ার সেখানে তদন্ত করতেই হবে।”

শেখ হাসিনার মতো ভালো মানুষ পঁচাত্তর পরবর্তী আর একজনও আসেনি দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা যারা তার সঙ্গে রাজনীতি করি, আমরা কয়জন তাকে মেনে চলি? কয়জন জনপ্রতিনিধি জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে করেন, আর কয়জন পকেটের উন্নয়ন করেন? হিসাব দিতে হবে সকলকে। শেখ হাসিনা একা সৎ থাকবেন, দিন-রাত পরিশ্রম করবেন, আর আমরা টাকার পেছনে নিজের ভাগ্যোন্নয়নে পকেটের উন্নয়নে কাজ করবে, এটা হয় না।”

নিজে কখনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেননি দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “বুকে হাত দিয়ে বলব, আগে পাঁচ বছর ছিলাম প্রতিমন্ত্রী। এবার ১১ বছর হয়ে গেল। কোনো পারসেনটেজ, কোনো কমিশন কখনও নিইনি। কিন্তু কারা আমার সঙ্গে কাজ করে…এক পশলা বৃষ্টি হলে রাস্তা শেষ…এই রাস্তা করে কী লাভ?”

সড়ক পরিবহন আইন হলেও তার বাস্তবায়ন এবং নীতিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমি আগের সচিবকে বলেছি, বর্তমান সচিবকেও বলছি। বর্তমান সচিব এত কাজ করেছেন, এত কাজ জমে আছে। আইন হয়েছে নীতিমালা হয়নি, আইনের সংশোধন নিয়ে কথা উঠেছে। এর ফয়সালা হয় না। আমি আবার সচিব মহোদয়কে বলবো বিষয়টিতে নজর দিতে।”

সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকায় মোটরসাইকেল চলাচলে নিয়ম মানা দেখে সন্তোষ জানালেও সারাদেশ নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি মন্ত্রী কাদের।

কাদের বলেন, “তরুণ তুর্কিরা কোনো আইন মানে না। তারা যখন মোটরসাইকেলে চড়ে, আইন মানতে চায় না। আর রাজনৈতিক তরুণরা তো মানেই না। রাজনীতি ঠিক না হলে অন্য সব কিছু আমরা ঠিক করতে পারব না। আমাদের আগে ঠিক করতে হবে, আমাদের নিয়ম মানতে হবে।”

সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং ভিআইপিদের নিয়ম ভাঙা নিয়ে তিনি বলেন, “রাস্তায় একটু জট দেখলে মন্ত্রী সাহেব, এমপি সাহেব যেতে পারছেন না, রং সাইডে ঢুকিয়ে দেয়। এখন অনেকটা কমেছে। অনেক বলে কয়ে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অনেক কমেছে।”

মহাসড়কে তিন চাকার যান বন্ধ করতে কঠোর হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণলয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, নিরাপদ সড়ক চাই-আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে দোকানের ছাদ থেকে বার্মিজ পাইথন উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফের আলোচিত শিশু আলো হত্যার ফাঁসির আসামি আটক