একটি মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের এক বিচারকের করা মন্তব্যকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। গতকাল তিনি নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি এমদাদুল হক এমন অসাংবিধানিক মন্তব্য করে শপথ ভঙ্গ করেছেন।
‘বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সুবিধার্থে’ বিচারক ওই মন্তব্য করেছেন কিনা এবং তাদের সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার বলেও মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা। খবর বিডিনিউজের।
তথ্য–প্রযুক্তি আইনের মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনের করা আপিল গতকাল শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি এমদাদুল হকের একক হাই কোর্ট বেঞ্চ। পাশাপাশি তাদের জামিনও মঞ্জুর করে আদালত।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আদিলুর ও এলানের আপিল ও জামিন আবেদনের পক্ষে গতকাল হাই কোর্টে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম দাঁড়িয়ে কথা বলতে চাইলে আদালত তাকে থামিয়ে দেন। তখন আসামিদের আইনজীবী বক্তব্য দিলে আদালত জামিনের আবেদন দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম আবার জামিনের বিরোধিতা করলে বিচারক বলেন, তাহলে তাদের ২ বছরের সাজা দিলেন কেন? যাবজ্জীবন দণ্ড দিতে পারলেন না? এক পর্যায়ে বিচারক বলেন, দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হকের এই মন্তব্যের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে অবহিত করা হয়েছে। সংবিধান রক্ষার শপথ নেওয়া একজন বিচারপতির এমন অসাংবিধানিক মন্তব্য খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, বিচারপতি এমদাদুল হক যখন এই মন্তব্য করেছেন, তখন আমি ওই বেঞ্চের আদালতে উপস্থিত ছিলাম না। আমি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণ থেকে তার মন্তব্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি। সংশ্লিষ্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকেও শুনেছি। বিচারপতি এমন মন্তব্য করেছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারপর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করে তার কাছে মন্তব্যের প্রতিবেদন সম্বলিত সংবাদের ক্লিপিংস হস্তান্তর করেছি।