দেড় মাস পর ভেসে উঠল ঝুলন্ত সেতু

বিজয় ধর, রাঙামাটি | শনিবার , ২১ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:৫১ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে দেড় মাস পানিতে ডুবে থাকার পর ভেসে উঠল রাঙামাটি সিম্বল খ্যাত ঝুলন্ত সেতু। গত ৩ সেপ্টেম্বর ভারি বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধির কারণে ঝুলন্ত সেতুটির পাটাতন ডুবে যায়। এতে সেতুতে পর্যটকদের চলাচলা বন্ধ করে দেয় পর্যটন কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ অক্টোবর সকালে সেতুটি ভেসে উঠলে রাঙামাটি পর্যটন কর্তৃপক্ষ গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সেতুটি উপর দিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পর্যটকরা চলাচল করছেন। তবে সেতুটির পাটাতনের বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু পানি রয়েছে। এদিকে, ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. আরিফ জানান, সেতুটি পুরানো হয়ে গেছে। যদি সেতুটি নতুন ভাবে আরো উচুঁতে তৈরি করা হয়, তাহলে পর্যটকরা ঘুরে আনন্দ পাবে। ময়মনসসিংহ থেকে রাঙামাটি ঘুরতে আসা পর্যটক উলফী বলেন, পর্যটন সেতুটিকে আরো একটু উঁচুতে তোলা প্রয়োজন যেহেতেু প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে যায়।

বগুড়া থেকে আসা আরেক পর্যটক মেহেদী হাসান জানান, এখন কাপ্তাই হ্রদে পানি ভরপুর। একেবারে ব্রিজের সাথে লাগানো। পানি শুকিয়ে গেলে ব্রিজ ঝুলে এতে তাঁর ভালো লাগে।

ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহসভাপতি রমজান আলী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘ দেড় মাস ঝুলন্ত সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ ছিল। এতে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরো জানান, আশা করছি সামনে পর্যটকদের ভিড় জমবে।

রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেঙের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেঙে অবস্থিত আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি প্রতি বছর বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়লে তলিয়ে যায়। দৈনিক সেতু থেকে ১০১৫ হাজার টাকা আয় আসতো। এতে সেতটিু বন্ধ থাকায় আমাদের ৮১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা ও পর্যটন মৌসুমে টুরিস্টদের আনাগোনা বাড়বে।

উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে সরকার রাঙামাটি পার্বত্য জেলাকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে। ১৯৮৩ সালে জেলা সদরে সরকারি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেঙ স্থাপন করা হলে সেখানে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে বিচ্ছিন্ন হওয়া দুটি পাহাড়ের সংযোগ স্থাপনে ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের মনোরম ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর সেতুটি দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে এটি দেশেবিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। এ ঝুলন্ত সেতুর পূর্বদিকে কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলরাশিসহ রয়েছে ছোটবড় নৈসর্গিক সবুজ পাহাড়মালা। এই সেতুকে ঘিরে প্রতি বছর রাঙামাটিতে প্রায় ৪৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহাষষ্ঠীতে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, আজ মহাসপ্তমী
পরবর্তী নিবন্ধরাজনীতি হতে হবে সকল মানুষের কল্যাণে