বৈরী আবহাওয়ার কারণে গেল কিছুদিন সাগরে যেতে পারেননি জেলেরা। এ কারণে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের দাম আকাশচুম্বী। কক্সবাজারের বাজারগুলোতে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২৩০০ টাকায়। সে হিসেবে ব্যবসায়ীরা এ পরিমাণ একটি ইলিশের দাম হাঁকাচ্ছে ৩৫৫০ টাকা! এছাড়া ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা এবং ৭০০–৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। ইলিশের এতো দাম হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। গতকাল শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের বড় বাজার, বাহারছড়া বাজার, কানাইয়া বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। এসময় সাধারণ মানুষকে ইলিশের দাম শুনেই চলে যেতে দেখা গেছে। কেউ এতো দামে ইলিশ কেনার সাহস পাচ্ছেন না। কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, কিছুদিন সাগরে মাছ ধরতে না পারলেও আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় অনেক ট্রলার মাছ ধরতে সাগরে গেছে। অনেক ট্রলার আবার কয়েকদিন আগে সাগরে গিয়ে মাছ নিয়ে ফিশারীঘাটে ভিড়েছে। কিন্তু ইলিশ অনেক কম। পাইকারি দামও অনেক বেশি।
মায়ের দোয়া ট্রলারের মালিক আব্দুর রশিদ বহদ্দার বলেন, কয়েকটি ট্রলার আজকে ভিড়েছে। ইলিশ কম হওয়ার কারণে দাম আকাশচুম্বী। পাইকারি দরে এক কেজি ওজনের ১০০ ইলিশ ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের চেয়ে কম ইলিশগুলো ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম বলেন, ফিশারীঘাটে মাছের পরিমাণ কম, তাই দাম অনেক বেশি। আমরা ব্যবসায়ীরাও অনেক কষ্টে আছি। বেশি দামে মানুষ মাছ কিনছে না। আমরা নিজেরাও কিনতে পারছি না।
মোহাম্মদ ইমরান নামের বাস টার্মিনালের এক বাসিন্দা বড় বাজারে মাছ কিনতে গিয়ে জানান, এতো দামে ইলিশ খাওয়ার চেয়ে খাসির মাংস খাওয়া অনেক ভালো। ইলিশ কিনতে এসে দাম শুনে না কিনে চলে যাচ্ছি। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কপালে ইলিশ জুটবে না। গেল কয়েকদিন ধরে ইলিশ কিনতে চেয়েও কিনতে পারছি না।
সমিতি পাড়ার বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, দাম নাগালের বাইরে থাকার কারণে ইলিশ খাচ্ছি না তিনমাস। কঙবাজারে হাজার হাজার ইলিশ ধরা পড়লেও আমাদের পাতে ইলিশ উঠে না। এতো দাম দিয়ে ইলিশ কিভাবে কিনব?
এ বিষয়ে কঙবাজার মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজারের ব্যবস্থাপক জি এম রব্বানী আজাদীকে বলেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের জোগাড় অনেক কম। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরে যেতে পারেনি জেলেরা। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ট্রলারগুলো সাগরে মাছ ধরতে গেছে। কিন্তু এখনো মাছ নিয়ে ট্রলার ফিরেনি। এই সপ্তাহের মাঝামাঝি হয়তো মাছের দেখা পাওয়া যাবে।