চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড সচিব মোতাহের হোসেনের বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ভাষায়, ‘আপত্তিকর’ কাজে সাড়া না দিলে তাদের কাজে অনুপস্থিত দেখানোসহ নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন মোতাহের। এদিকে নিজ দপ্তরে এক পরিচ্ছন্ন কর্মীকে যৌন হয়রানি করছেন এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। আজাদীর কাছে সংরক্ষিত ৩ মিনিট ১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে মোতাহেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজাদীকে বলেন, ডোর টু ডোর বর্জ্য অপসারণের স্টাফটা (যে ভিডিও করেছে) তিন–চার মাস কাজে আসেনি। তাই হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত ছিল, সে জন্য বেতন পায়নি। এখন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। অনুপস্থিত থাকলে বেতন কীভাবে পাবে। ‘কিন্তু ভিডিও’তে আপনাকে দেখা যাচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব– এমন প্রশ্নে বলেন, আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। কিভাবে কী ভিডিও করেছে আমি জানি না।
এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোতাহের হোসেন বলেন, মিথ্যা অভিযোগ সব। তাদের কাজে একদিকে যেতে বললে আরেকদিকে যায়। কিছু বললে হুমকি দেয়। এখন ষড়যন্ত্র করছে।
এদিকে যে ভিডিও করেছে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ৬ অক্টোবর ভিডিওটি করেছে। তিনি বলেন, আমাদের এক সহকর্মীকে আপত্তিকর কাজ করতে বলেন স্যার। সে না করলে তাকে কাজে অনুপস্থিত দেখানোসহ নানা হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। সে কৌশলে বের হয়ে আমাকে জানালে আমি ওয়ার্ড অফিসে যাই। গিয়ে দেখি ওয়ার্ড সচিব আমাদের সহকর্মীকে দিয়ে আপত্তিকর কাজ করাতে বাধ্য করেছেন। আমি কৌশলে ভিডিও ধারণ করি। তিনি জেনে যাওয়ায় এখন আমাকে চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো কয়েকজন পরিচ্ছন্ন কর্মী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড সচিবের হাতে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিপীড়নে শিকার হয়ে আসছেন। কারো কাজে আসতে একটু দেরি হলে টাকা কেটে নেন। আবার উনার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করান। পুরুষ ও নারী উভয়ের সঙ্গে তিনি এসব কাজ করেন। লজ্জায় কেউ অভিযোগ করেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়াসহ কাজে অনুপস্থিত দেখানোর হুমকি দেন তিনি।
এ বিষয়ে দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মাহমুদ হাসনী গত রাতে আজাদীকে বলেন, ভিডিও আমি দেখিনি। কি ঘটনা বিস্তারিত জানিও না। কাল অফিসে গিয়ে খোঁজ নেব। সবাইকে ডেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আপত্তিকর কোনো কিছুর সঙ্গে যদি ওয়ার্ড সচিব জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।