ফুলকপি সাধারণত সাদা রঙের। দেশের জনসাধারণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পুষ্টি সমৃদ্ধ বাহারি রঙের ফুলকপি উৎপাদনে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পার্টনার প্রকল্প।
প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স (পার্টনার) প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাট এলাকায় দ্বিতীয়বারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ হয়েছে। এছাড়া উপজেলার নুনাছড়া, টেরিয়াল, ফুলতলাসহ উপজেলার সকল ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে রঙিন ফুলকপির আবাদ হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে মোট ৯৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে রঙিন এই ফুলকপি ভিটামিন এ, ক্যারোটিন ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরা। উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকার কৃষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি গত বছর অল্প পরিমাণে রঙিন ফুলকপি চাষ করেছিলাম। এবছর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় দুই হাজার রঙিন ফুলকপি চাষ করেছে। আশা করছি প্রতিটি রঙিন ফুলকপি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। রঙিন ফুলকপি চাষ করলে আর্থিকভাবে লাভবান হবো বলে আশা করছি। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বেগুনি ফুলকপি তার রং পায় ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ থেকে। অ্যান্থোসায়ানিন রক্ত জমাট বাঁধা কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। হলুদ ফুলকপির রঙের পেছনে ‘ক্যারোটিনয়েড’–এর ভূমিকা রয়েছে। এতে আছে ভিটামিন ‘এ’ ও অ্যান্টি–অঙিডেন্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুপর্ণা বড়ুয়া বলেন, রঙিন ফুলকপি চাষে রোগবালাই কম হয়। জৈব উপায়ে এই ফুলকপিতে আসা পোকামাকড় দমন করা যায়। ফলে কৃষককে বাড়তি কোনো কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাবিবুল্লাহ জানান, গতবছর সীতাকুণ্ডে ১ হাজার ২০০টি রঙিন ফুলকপির আবাদ হলেও এবছর ১০ গুণ বেড়ে ১২ হাজার রঙিন ফুলকপির আবাদ হয়েছে। গতবছর ১৫ জন চাষি রঙিন ফুলকপি চাষ করলেও এবছর ৪৫ জন কৃষক রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। রঙিন ফুলকপি এবং সাদা ফুলকপির মধ্যে পার্থক্য শুধু বীজে। চাষ পদ্ধতির অন্যান্য সকল সকল প্রক্রিয়া একই। কিন্তু বাজার মূল্য সাদা ফুলকপির তুলনায় রঙিন ফুলকপির ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি।
তিনি আরো বলেন, জামালপুরের একটি কৃষি খামার থেকে অনলাইনে অর্ডার করে চারাগুলো আমদানি করেছেন তারা। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চারা, সার, সেঙফেরোমেন ফাঁদসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা কৃষি কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে।