দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

জনশ্রুতি মতে সাম্প্রতিককালে দেশবাসী সামগ্রিক মূল্যবোধের অন্তহীন অবক্ষয় অবলোকন করছে। আড়ালেআবড়ালে, আলাপআলোচনায় জনগণের ক্ষোভদুঃখযন্ত্রণার বর্হিপ্রকাশ জাতির জন্য হতাশাব্যঞ্জক। যেকোন সমাজে আত্মিকনৈতিক মানবতাবোধ বা মনুষ্যত্বের সুস্থ বৈশিষ্ট্যসমূহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নকেও উন্নীত করে। প্রতিদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হত্যাআত্মহত্যাসন্ত্রাসচুরিরাহাজানিজালিয়াতিপ্রতারণাঅর্থপাচারসহ বহুমাত্রিক অপরাধের দৃশ্যপট কোনভাবেই জাতীয় আদর্শকে পরিপুষ্ট করে না। পক্ষান্তরে চরম দুর্নীতিবাজঅপকর্মে সিদ্ধহস্ত কথিত ব্যক্তিদের বেপরোয়া পদপদায়ন ও পদক প্রাপ্তিতে নানামুখী কৌতুহলে সচেতন জনগণ প্রকৃতঅর্থে বিভ্রান্ত। দেশের প্রত্যেক অঞ্চলে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ সামাজিকরাজনৈতিকবিত্তশালীপেশাজীবী প্রমূখ ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক পটভূমি সম্পর্কে সম্যক অবগত। তারা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছে যে, রাজনীতি বা সামাজিকভাবে অকস্মাৎ জনপ্রিয়তা ক্রয়ে বা মানুষের মধ্যে নিজের পরিচিতিআধিপত্য বিস্তারে অদৃশ্য উপায়ে অর্জিত অর্থের মাধ্যমে বৈরী প্রতিযোগিতা অসহনীয় পর্যায়ে ঠেকেছে। সৎযোগ্যদক্ষ দেশপ্রেমিক ব্যক্তিরা দারুণভাবে কোণঠাসা হয়ে শুধু অসহনীয় পরিবর্তন অব্যাহতভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। কোনো ধরনের প্রতিবাদ দূরে থাক; নানা ছলচাতুরীতে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অপসংস্কৃতি অবলম্বনে সম্মান হারানোর আজানা আতঙ্কে তারা দিশেহারা।

আমাদের মনে রাখা উচিত পাকিস্তানি সামরিকসাম্প্রদায়িক হায়েনাদের থেকে বাঙালি জাতিকে স্বজাত্যবোধে উদ্ভাসিত করে মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সার্বিক জাগ্রত করার অভিপ্রায়ে দীর্ঘকাল আন্দোলনসংগ্রামের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন। ফলশ্রুতিতে ৫২’র ভাষা আন্দোলন৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন৫৬ সালের সংবিধান প্রণয়ন আন্দোলন৫৮’র সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন৬২’র শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন৭৯ এর গণআন্দোলন৭০ এর নির্বাচন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদান ও দুই লক্ষ জননীজায়াকন্যার সর্বোচ্চ সম্ভ্রমের বিনিময়ে লালসবুজ পতাকার আমাদের প্রিয় মুক্ত মাতৃভূমি। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সাল পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তাঁরই নেতৃত্বে স্বাধীন দেশে ফিরে এসে প্রথম ভাষণে জাতির জনক ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে অগণিত বাঙালির অশ্রুসিক্ত জনসমাবেশে নতুন করে উচ্চারণ করলেন; “আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু এসে থাকে যদি, আমি হাসতে হাসতে যাব। তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইব না এবং যাবার সময় বলে যাব, জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান। আজ আমি বাংলাদেশে ফিরে এসেছি। আমার ভাইদের কাছে, আমার মা’দের কাছে। আমার বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন। বাংলার মানুষ আজ আমার স্বাধীন।”

বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি হায়েনা কর্তৃক সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাধীন মাতৃভূমি পুনরুদ্ধারে সততানিষ্ঠাপ্রজ্ঞা ও দেশপ্রেমের আকাশচুম্বী অনুপ্রেরণায় দেশবাসীকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত যুদ্ধোত্তর দেশকে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা এবং দেশকে এগিয়ে নিতে তিনি জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্তরিকতাগতিময়তায় শক্তি যোগানোর অঙ্গীকারে আবদ্ধ করেন। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম অরাজকতা সৃষ্টিতে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহমূল্য নির্ধারণে অস্বাভাবিক অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বঙ্গবন্ধু সরকারকে হিমশিম খেতে হয়েছিল। ঘুষদুর্নীতিকালোবাজর্ারিমুনাফাখোরি কুৎসিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সামরিকবেসামরিক আমলাসহ দেশের আপামর জনগোষ্ঠীকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান ছিল আশাজাগানিয়া প্রচণ্ড আবেগের বশবর্তী। নির্ভীক সাহসিকতায় দেশপ্রেমের মোহনিয়া পরিগ্রহে বঙ্গবন্ধু বারবার ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবারী, মুনাফাখোর, দেশের সম্পদ পাচারকারী, মজুদদার এবং অর্থক্ষমতার মোহে পাগলপ্রায় মানুষ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করেছেন এবং বাংলার দুঃখী মানুষের সুখশান্তি ও দু’বেলা পেট ভরে খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রাঙ্গণে ব্যাচ পাসিং আউট প্যারেডে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এত রক্ত দেওয়ার পরে যে স্বাধীনতা এনেছি, চরিত্রের পরিবর্তন অনেকের হয় নাই। এখনো ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবারি, মুনাফাখোরি বাংলার দুঃখী মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দীর্ঘ তিন বছর পর্যন্ত এদের আমি অনুরোধ করেছি, আবেদন করেছি, হুমকি দিয়েছি, চোরা নাহি শোনে ধর্মের কাহিনি।এবার আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, যদি ২৫ বছর এই পাকিস্তানি জালেমদের মধ্যে জিন্নাহ থেকে প্রারম্ভ করে গোলাম মোহাম্মদ, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানের মধ্যে বুকের পাাঁ টান করে সংগ্রাম করতে পারি আর আমার ত্রিশ লক্ষ লোকের জীবন দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি; তাহলে পারব না? নিশ্চয় ইনশাআল্লাহ পারব। এই বাংলার মাটি থেকে এই দুর্নীতিবাজ, এই ঘুষখোর, এই মুনাফাখোরি, এই চোরাকারবারিদের নির্মূল করতে হবে। আমিও প্রতিজ্ঞা নিয়েছি, তোমরাও প্রতিজ্ঞা নাও, বাংলার জনগণও প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করুক।’

ধারাবাহিকতায় বিশ্বদরবারে অসাধারণ মর্যাদায় সমাসীন বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে সিন্ডিকেট কারসাজির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় মূল্য বৃদ্ধি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মজুতদারি বন্ধে জনপ্রতিনিধিদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় চাঁদাবাজি ও মজুতদারি বন্ধ করতে হবে। আপনারা বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধি, এতে আপনাদেরও নজর দিতে হবে। একদিকে কৃষক যাতে প্রকৃত মূল্যটা পায় সেদিকে নজর দিতে হবে। অন্যদিকে এই অহেতুক চাঁদাবাজি ও মজুতদারির জন্য যাতে পণ্যের দাম না বাড়ে, সেটি দেখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দেশের আপামর জনগণকে স্বস্তি দিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন। আগামী রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তিনি পণ্যের দাম নিয়ে যারা কারসাজি করে তাদের কঠোর নজরদারিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ মন্ত্রিসভার বৈঠকে চার নিত্যপণ্যের উপর শুল্ক কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রদত্ত নির্দেশনার আলোকে অতিসম্প্রতি চালভোজ্যতেলচিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ক কমানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুদদারদের বিরুদ্ধে সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছে। কড়া নজরদারির সঙ্গে চালানো হচ্ছে বিশেষ অভিযান। এসব দুর্বৃত্তদের তালিকা তৈরি করছে আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনী। অবৈধ মজুতের প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। প্রাসঙ্গিকতায় র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক গণমাধ্যমে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ও ন্যায্য মূল্যের চেয়ে বেশি দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও মাংস বিক্রি করার অভিযোগে বেশ কয়েক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত ও বেশি দামে পণ্য বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে র‌্যাবের গোয়েন্দারা সাদা পোশাকে মাঠে কাজ করছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথ থেকে অর্ধশত চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ধারাবাহিক অভিযান চলমান থাকবে।’

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য অগ্রগতিতে দেশ শুধু এগিয়ে যায়নি; বিশ্বপরিমন্ডলে অনবদ্য এক আসনে উচুমাত্রিকতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। দারিদ্র বিমোচনশিক্ষাস্বাস্থ্যকর্মসংস্থানঅবকাঠামো উন্নয়নসহ বস্তুগত সংস্কৃতির বিকাশমানতা বিপুল দৃশ্যমান হলেও; অবস্তুগত সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান নিয়ামক নীতি নৈতিকতা, মানবতামনুষ্যত্ববোধের গভীর স্খলন এত নিম্নপর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সামান্য বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিকে ঠেকিয়ে সিন্ডিকেট দৌরাত্ম নস্যাৎ করার অনেক উদ্যোগপ্রতিশ্রুতি প্রায় অসারতায় পরিপূর্ণ। বাংলাদেশে ঋতু পরিবর্তনঈদরোজাপূজাসহ প্রচলিত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীদের জন্য অতি পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়াও বাংলাদেশে বর্ষাক্ষরাবন্যাঅনাবৃষ্টিঅতিবৃষ্টি ইত্যাদি জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে মারাত্মক সংকট প্রায় প্রতিবছরই মোকাবিলা করতে হচ্ছে। ঘটনাসমূহ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার বলে সনতারিখসহ সংকটের সম্ভাব্য সময়সূচি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত রয়েছে বলে জনগণের বিশ্বাস। বিদ্যুৎজ্বালানি তেলগ্যাস ইত্যাদি খাতে সম্ভাব্য দুর্যোগসমূহের পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদও নির্ধারিত। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অযোগ্যতাঅদক্ষতাদূরদর্শীতা এবং মাটি ও মানুষের প্রতি ন্যূনতম দায়বদ্ধতা প্রকাশে তাদের বিচলিত হওয়া এবং সম্ভাব্য সমস্যার সমাধানে পূর্ব পরিকল্পিত কোনো কার্যক্রম কখনো চোখে পড়ার মত নয়।

উদ্ভূত সমস্যার কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌছালে নানা রকম মুখরোচক প্রতিশ্রুতিপরিকল্পনা ইত্যাদি শুনতে শুনতে বাংলার জনগণ অতি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত এসব কল্পিত পরিকল্পনার ওপর জনগণের কোনো বিশ্বাস তেমন কার্যকর নয় এবং বিষয়সমূহ তৃণমূল থেকে জনপদের উচ্চপর্যায়েও হাস্যরসের খোরাক হয়ে যায়। এ সুযোগে শুধু বিরোধীতার জন্য বিরোধীতাকারী স্বভাবসুলভ বিরুদ্ধাচরণে ব্যতিব্যস্ত কতিপয় ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠানসুযোগসন্ধানী দল উস্কানীমূলক বক্তব্যে জনগণকে অনুপ্রাণিত করার ব্যর্থ প্রয়াসও স্পষ্ট। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, অবকাঠামোসেতু বা কালভার্টটানেল উন্নয়নের পূর্বশর্ত। কিন্তু বেতনউপার্জন কাঠামোর তুলনামূলক বিশ্লেষণে সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকা ব্যয়ে উল্লেখ্য কার্যক্রম বিত্তশালীদেরই সুযোগ বৃদ্ধি করে। গরিবনিম্নবিত্তনিম্নমধ্যবিত্তদের জন্য খানিকটা সুবিধা অনুভূত হলেও বৈষম্যের একধরনের কঠিন আর্তনাদ প্রতিমুহূর্তে ধ্বনিতপ্রতিধ্বনিত হচ্ছে। তবে ‘কালের যাত্রাধ্বনি শুনিতে কি পাও’ কবিতাখানি ঘুরে ফিরে সচেতন মহলকে খুবই ব্যথিত করে। ধীরে ধীরে তৈরি হয় হৃদয়ে গভীর ক্ষত। ক্ষতবিক্ষত জাতি কবে নাগাদ অর্থবহ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করবে তার কোনো চৌহদ্দী অনুমেয় নয়। দুর্বৃত্তায়নের ফলে অবৈধঅনৈতিক এবং অসামাজিক কর্মযজ্ঞে জড়িত ব্যক্তিরা দেশবিধ্বংসী কার্যকলাপ অবদমনে কখনো পিছপা হয় না। অধিকন্তু অর্থক্ষমতালিপ্সু নরপশুতুল্য দানবদের মত এদের আচরণ জাতিকে করে ভয়ংকর ভীতসন্ত্রস্ত। চলমান অবস্থা উত্তরণে ইস্পাত কঠিন ব্রত সমাহারে কঠিনতম সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে পদক্ষেপ বাস্তবায়নে আইনানুগ পন্থা অবলম্বনে ব্যত্যয় ঘটলে যেকোন সময় যেকোন ধরনের নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধরাজস্থলীতে দোকানে আগুন, দোকানির শরীরের ৯০ শতাংশই দগ্ধ