পুলিশের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের সন্ধান নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই চাকরি হারালেন বাহিনীর একজন সহকারী পুলিশ সুপার। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে কুষ্টিয়া সদর সার্কেলের সাবেক এএসপি ইয়াকুব হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সর্বশেষ রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে কর্মরত ছিলেন এএসপি ইয়াকুব। তিনি ২০১৩ সালের শেষে ৩৩ বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
একটি বাড়িতে হানা দেওয়ার পর তিনজনকে আটক করে এক লাখ টাকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসার পর ইয়াকুব ও তার অন্য সদস্যদের নামে তদন্তে নামে পুলিশ সদরদপ্তর। তদন্তে প্রমাণ পাওয়ার পর বিভাগীয় মামলা শেষে তাকে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৯ সালে তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর সার্কেলের এএসপি থাকার সময় থানার একটি দলের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এতে বলা হয়, এএসপি ইয়াকুব হোসেন আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে সে সময় একটি দল গঠন করেন। সেই দলে ছিল তার নিয়ন্ত্রণাধীন মিরপুর থানার সাবেক এসআই জীবন বিশ্বাস, কনস্টেবল আল আমিন, আব্দুস সবুর, গাড়ি চালক কনস্টেবল সামিউল ও রানার কনস্টেবল অনিক।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, এই দলের সদস্য জীবন বিশ্বাস, আল আমিন ও সবুর ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী মিরপুর পৌর শহরের ৩ নং ওয়ার্ডের লিপি কমিশনারের বাড়িতে আকস্মিকভাবে ঢুকে পড়েন। সেখানে জনৈক মায়া নামের এক নারীর সঙ্গে আশরাফ হোসেন ও শামীম রেজা নামের দুজন অবস্থান করছিলেন। পুলিশ সদস্যরা ওই দুজনকে ‘অবৈধ কাজ করার অভিযোগে’ হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং অর্ধনগ্ন অবস্থায় তাদের ছবি তোলেন। পরে মিরপুর বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী সোহেল রানার মাধ্যমে অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।
‘তৎকালীন এএসপি ইয়াকুব এই বিষয়টি অবগত থাকার পরেও আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের অপকর্মে সহায়তা করেছেন’– বলেও সিদ্ধান্তে এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।